Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি 

সিলেটে পানিবন্দি লাখো মানুষ

সিলেট ব্যুরো

সিলেট ব্যুরো

মে ১৬, ২০২২, ০৫:৫৮ পিএম


সিলেটে পানিবন্দি লাখো মানুষ

অতিবৃষ্টি আর উজানের ঢলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সিলেটের তিন নদীর পানি তিনটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। 

রোববার (১৫ মে) থেকে সিলেটে বৃষ্টিপাত কম হলেও উজানের ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে নতুন করে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন নদীতীরবর্তী উপজেলার লাখো মানুষ। বন্যাকবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। তলিয়ে গেছে ফসিল জমি। নদীপারের মানুষ ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছে। ফলে বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষকে প্রচন্ড দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এদিকে সুরমা নদীর তীর উপচে সোমবার (১৬ মে) সকাল থেকে সিলেট নগরে জোয়ারের পানি প্রবেশ করতে শুরু করে এতে তলিয়ে যায়, নগরের উপশহর, সোবহানিঘট, কালিঘাট, ছড়ারপাড়, শেখঘাট, তালতলা, মাছিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকা। এসব এলাকার বাসাবাড়ি, দোকানপাট ও বিভিন্ন স্থাপনায়ও পানি ঢুকে পড়েছে।

নগরের সোবহানিঘাট এলাকার বাসিন্দা দেবজ্যোতি দাস বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বাসার ভেতরে পানি ঢুকে পড়েছে। আমাদের পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।

ব্যবসায়ী নিলাঞ্জন দাশ টুকু বলেন, সকালে এসে দেখে নদী উপচে দেকানের ভেতর পানি ঢুকে পড়ে। এখন পুরো এলাকা তলিয়ে গেছে।

পানি বাড়ছে সীমান্তবর্তী উপজেলা কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও জকিগঞ্জ উপজেলায়। এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলগুলো তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামিলুর রহমান জানান, গোয়াইনঘাটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে বৃষ্টি বাড়বে। 

তিনি বলেন, পানিবন্দি মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ আছে, এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। ত্রাণের সাথে পানি বিশুদ্ধকরন ট্যাবলেট দেওয়া হচ্ছে, পানি পানে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।

পাউবো সূত্র জানায়, আজ সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১.২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ পয়েন্টে পানি বেড়েছে ০.৩ সেন্টিমিটার। পানি বেড়েছে সিলেট পয়েন্টেও। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় সিলেট পয়েন্টে পানি ছিল ১০.৪৯ সেন্টিমিটার। 

সোমবার (১৬ মে) সকালে পনি সীমা দাঁড়িয়েছে ১০.৬৬ সেন্টিমিটার।

কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশিদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টেও বেড়েছে। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় এ পয়েন্টে পানি সীমা ছিল ৬.৮৩ সেন্টিমিটার; আজ সকাল ৯টায় পানি সীমা হয় ৬.৯৬ সেন্টিমিটার। পানি বেড়েছে ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টেও। এখানে সোমবার সকাল পর্যন্ত পানি সীমা বেড়ে দাঁড়ায় ৮.৭৪ সেন্টিমিটার।

এদিকে গোয়াইনঘাটের সারি নদীর পানি বিপদসীমার ০.৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কানাইঘাটের লোভা নদীর পানি ১৪.৩৬ সেন্টিমিটার থেকে বেড়ে ১৪.৬৫ সেন্টিমিটারে দাঁড়িয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী আমার সংবাদকে বলেন, সিলেটে রবিবার থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমান কমেছে। তবে উজানে বৃষ্টি হচ্ছে, একারণে ঢল নামছে। ফলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। 

তিনি বলেন, সিলেটে আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে রাতের বেলা বৃষ্টি বেশি হবে। বৃহস্পতিবার থকে বৃষ্টিপাত কমে আসবে।

আমারসংবাদ/কেএস 

Link copied!