Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

গড়াই নদীর বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে রেল ও সড়ক সেতু

নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া

নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া

মে ২৪, ২০২২, ০২:৪১ পিএম


গড়াই নদীর বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে রেল ও সড়ক সেতু

সরকারি আইন অমান্য করে এক শ্রেনীর অসাধু বালি ব্যবসায়ীরা কুষ্টিয়া গড়াই নদীর বালু ও মাটি কাটার ফলে হুমকীর মুখে পড়েছে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী সড়কে অবস্থিত গড়াই মীর মশাররফ হোসেন সেতু ও রেল সেতু। 

বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ৪নং ধারার ‘খ’ উপধারারর স্পষ্ট লংঘনে শত কোটি টাকা ব্যয়ে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের গড়াই নদীর উপর নির্মিত মীর মশাররফ হোসেন সেতুসহ তৎসংলগ্ন রেলসেতুকে চরম ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে বালুখোরের দল। কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলাম এমন অভিযোগ করেন। 

কুষ্টিয়ার সংশ্লিষ্ট রাজস্ব বিভাগের তথ্যমতে, জেলার ২১টি বালু মহালের মধ্যে উল্লেখিত জয়নাবাদ, রাহিনীপাড়া ও ছেঁউড়িয়া মৌজাভুক্ত ৭১একর জমির উপরিউস্থ ৬৬ লাখ টাকা সরকারি মূল্যমানের বালু মহালটি চলতি অর্থ বছরে কাউকে ইজারা দেয়া হয়নি। 

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ট্রলি চালক আমিরুল বলেন, প্রতিদিন এখান থেকে বেকু (এক্সাভেটর), বেলোটার দিয়ে সরাসরি ব্রিজের নীচ থেকে শত শত ড্রাম ট্রাক, ট্রলি ভরে দিচ্ছেন। প্রতি ড্রাম ট্রাক থেকে ১ হাজার ৭শ এবং ছোট ট্রলি প্রতি ২শ ৫০ টাকা করে টোল নিচ্ছেন ইজারাদার পরিচয় দেয়া লোক। কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলামের অভিযোগ, কুষ্টিয়া রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের মীর মোশাররফ হোসেন সেতুর সংলগ্ন নদীর মধ্য থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে সেতুটি চরম ঝুঁকি মধ্যে পড়তে পারে, এমন বিষয়টি জানিয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছেন। 

তিনি বলেন, আমি নিজে সরেজমিন গিয়ে দেখে এসেছি সেখানে অন্তত ডজন খানেক এক্সাভেটর এবং বেলোটার (মাটিকাটা যন্ত্র) ব্যবহার করে ট্রাক ভর্তি করে দেয়া হচ্ছে। আইন না মেনে অপরিকল্পিত ও অবৈধ ভাবে এই বালু উত্তোলনের ফলে শতকোটি টাকার সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হলে এঅঞ্চলের সমগ্র যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর প্রভাব পড়বে। এভাবে বালু উত্তোলনের ফরে ইতোমধ্যে শেখ রাসেল হরিপুর কুষ্টিয়া সংযোগ সেতু চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। 

কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো: সিরাজুল ইসলাম জানান, জেলার মোট ২১টি বালু মহাল আছে ইজারাযোগ্য। এর মধ্যে চলতি অর্থ বছরে সবগুলি ইজারা দেয়া হয়নি। যেগুলি ইজারা দেয়া হয়েছে এবং যারা ইজারা নিয়েছেন, তাদের আইনগত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০র বিধি অনুসরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কুষ্টিয়া রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের মোশাররক হোসেন সড়ক সেতুটি জয়নাবাদ, রাহিনীপাড়া ও ছেঁউড়িয়া মৌজাভুক্ত ৭১একর জমির বালু মহালের মধ্যে স্থাপিত। প্রথম কথা এই বালু মহালটি চলতি অর্থ বছরে কোন ইজারা দেয়া হয়নি। সেই সাথে বিধি অনুযায়ী নদীর উপরিউস্থ সড়ক বা রেল সেতু যেখানে আছে সেখানে উজান এবং ভাটির এক হাজার মিটার বা ১কি:মি দুরত্বের মধ্যে কোন ভাবেই বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। কেউ এই আইন ভেঙ্গে বালু উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আমারসংবাদ/কেএস 

Link copied!