Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

এখনো জলাবদ্ধ নিম্নাঞ্চল

সিলেটে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে

সিলেট ব্যুরো

সিলেট ব্যুরো

মে ২৪, ২০২২, ০৮:৪৫ পিএম


সিলেটে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে

সিলেটে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হলেও নগরের নিচু এলাকাগুলো এখনো জলাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৪ মে) পর্যন্ত নগরের নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত অবস্থায় রয়েছে। দুর্গত এলাকায় ময়লা পচে পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পুরোপুরি পানি না কমায় এখনো নগরের অনেক বাসিন্দা আশ্রয়কেন্দ্র ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে প্লাবিত এলাকায় পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়ে চলছে। বিশেষ করে জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগ ও ডায়রিয়ায় মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। বন্যাকবলিত লোকজন জানান, প্লাবিত এলাকায় পানিবাহিত নানা রোগ-বালাই দেখা দিয়েছে। অথচ সরকারিভাবে কোনো ধরনের চিকিৎসাসেবা তাঁরা পাচ্ছেন না।

টানা আট দিন ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটে সব উপজেলায় আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়। সুরমার পানি উপচে নগরের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়। শনিবার থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো নগরের নিচুঁ এলাকাগুলো প্লাবিত অবস্থায় রয়েছে। 

আজ সকালে নগরের তালতলা, মণিপুরি রাজবাড়ি, সোবহানীঘাট, যতরপুর, শাহজালাল উপশহরের বিভিন্ন ব্লকে দেখা গেছে এখনো পানিতে ডুবে আছে। তবে মূল সড়কগুলো থেকে পানি নেমে গেছে।

নগরের যতরপুর এলাকার বাসিন্দা আবিদ হাসান জোয়ারদার আমার সংবাদকে জামান, বাসার ভেতর থেকে পানি নেমে গেছে। তবে বাসার সামনেই এখনো হাঁটু পানি। দীর্ঘদিন পানি জমে থাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে পানি থেকে। জমে থাকা পানিতে মশাসহ নানা কীটপতঙ্গ জন্ম নিচ্ছে।

সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পানি নেমে যাওয়া এলাকায় সিটির পরিচ্ছন্নতা শাখা পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেছে। সেই সঙ্গে মশা-মাছি ও কীটপতঙ্গ নিধনের জন্য ওষুধ ছিটানো এবং দুর্গন্ধ দূর করতে ব্লিচিং পাউডার ছিটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সিলেটের সিভিল সার্জন এস এম শাহরিয়ার প্রতিবেদককে জানান, সিলেট জেলা ও নগরে ১৪০টি চিকিৎসা দল স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কাজ করছে। এ পর্যন্ত অন্তত ১১ হাজার বানভাসিকে নানা ধরনের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পানিবাহিত রোগ এড়াতে পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি বিতরণও করা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ৪৬ জন ডায়রিয়ায়, ২ জন শ্বাসকষ্টে এবং ৬ জন চর্মরোগে আক্রান্ত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ পর্যন্ত জেলায় পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬৯ জন। বন্যায় মারা গেছেন ৬ জন।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, আজ বিকেল ৬টা পর্যন্ত সিলেট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানিসীমা ছিল ১০ দশমিক ৫৩ সেন্টিমিটার। এখেনে বিপদসীমা ১০ দশমিক ৮০ মিটার। এই নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানিসীমা ছিল ১৩ দশমিক ১০ মিটার। এই পয়েন্ট বিপদসীমা ১২ দশমিক ৭৫ মিটার।

তবে কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই পয়েন্টে বিকেল ৬টায় পানিসীমা ছিল ১৫ দশমিক ৭১ সেন্টিমিটার। এখানে বিপদসীমা ১৫ দশমিক ৪০ মিটার। তবে সারি নদের সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া পিয়াইন, মনু ও ধোলাই নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, সোমবার থেকে সিলেটে বৃষ্টি নেই। আজ সকাল থেকে সূর্য তাপ ছড়াচ্ছে। এ ছাড়া আগামীকাল বুধবার সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা কম।

আমারসংবাদ/এআই 

Link copied!