Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

সিরাজদীখানে অপরিকল্পিত কালভার্ট, চলাচলে ভোগান্তি

সিরাজদীখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি

সিরাজদীখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি

মে ২৫, ২০২২, ০৬:১৩ পিএম


সিরাজদীখানে অপরিকল্পিত কালভার্ট, চলাচলে ভোগান্তি

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে অপরিকল্পিত কালভার্ট নির্মাণ হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকের কাজে আসছে না। উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তাজপুর গ্রামের কৃষকদের জমির (হোতার চক) পানি নিষ্কাশন হওয়ার জন্য নুরাতলি ঝিরিখাল খনন করা হয়। 

এই খালটি মূলত কৃষি জমির (হোতার চক) পানি বের হওয়ার একটি পথ। এই খাল পারাপারে গ্রামবাসী ও কৃষকদের সুবিধার্থে একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। কালভার্ট নির্মাণের পরে তৈরি করা হয়নি পার্শ্ব সড়ক। 

তাই ১১ লাখ টাকার এই কালভাটটি কোনো কাজেই আসছে না স্থানীয় বাসিন্দাদের। সংযোগ সড়কের অভাবে রশুনিয়া ও কোলা এই দুই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও কৃষকদের প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। 

কৃষকরা বলছে, অপরিকল্পিতভাবে কালভাটটি নির্মাণ করায় কোনো কাজেই আসছে না। 

সরেজমিন দেখা যায়, ঝিরিখালের উপর নির্মিত এ কালভার্টটি প্রায় ৮-১০ বছর আগে নির্মাণ করা হয়। কালভার্ট নিমার্ণ হলেও এর দুপাশে এখনো মাটি দেয়া হয়নি। এছাড়া নিমার্ণ করা হয়নি সড়ক। এ কারণে কালভাটটি কোনো কাজে আসছে না স্থানীয়দের। বর্ষা ও শুকনো মৌসুমে বাধ্য হয়ে খালের পানি দিয়েই পার হতে হচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে কৃষকসহ দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। 

এছাড়া জমি থেকে কৃষিপণ্য বাধ্য হয়ে মাথায় করে আনতে হচ্ছে। অন্যদিকে খালের মাটি দুপাশে ফেলায় পায়ে হাঁটার একটি সড়ক তৈরি হয়। সড়কটি মেরামত ও কালভার্টটির গোড়ায় মাটি ভরাট করলে প্রায় ৮ হাজার কৃষক উপকৃত হবেন এবং রশুনিয়া থেকে কোলা ইউনিয়নে যাতায়াতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় কম লাগবে। অন্যদিকে মো. সোনামিয়া মেম্বারের বাড়ির পূর্ব পাশ থেকে কোলা ইউনিয়নের বেলদারপাড়া পর্যন্ত সড়কটি প্রশস্ত হলে হাজারো কৃষক উপকৃত হবে।

কোলা গ্রামের বাসিন্দা আউয়াল শেখ বলেন, এই কালভার্টটি প্রায় ৮-১০ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে। তখন খাল খনন করার মাটি দুই ধারে পড়ে রাস্তার মতন হয়েছিল। ওই রাস্তা দিয়েই আমরা যাতায়াত করতাম। তখন এই কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ঠিকমত তার রাস্তা না বানানোর কারণে কালভার্ট নির্মাণ করার পরও ঠিক মত চলাচল করতে পারি না।

এখন যদি রাস্তা বানিয়ে দেয়, তবে কালভার্ট দিয়ে চলাচল করতে পারব। তা না হলে এই কালভার্টের কোন মূল্যই নেই। আমরা দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এ কালভার্ট এখন জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। যে কোন সময় ভেঙে পড়তে পারে। তাই আমরা রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

কৃষক আবুল শেখ জানান,উপজেলা থেকে সাবেক মেম্বার মো. সোনামিয়ার বাড়ির পূর্ব পাশে এসে শেষ হয়েছে রাস্তা। এখান থেকে কোলা ইউনিয়নের বেলদারপাড়া পর্যন্ত পায়ে হাটার রাস্তা রয়েছে। আর এ রাস্তা দিয়ে দুই ইউনিয়নে যাতায়াতে ৩০ মিনিট সময় কম লাগবে। সোনামিয়ার বাড়ির থেকে বেলদারপাড়া পর্যন্ত ১ কিলো ৮০ মিটার রাস্তা। কিন্তু রাস্তাটি এখন বেহাল অবস্থায় রয়েছে। আর এই সেতু করা হয়েছে প্রায় ৮-১০ বছর আগে। সেতুটি একটি সংস্থার অর্থায়নে সাবেক চেয়ারম্যানের আন্ডারে করা হয়েছে। 

সেতুর দুইপাশে মাটি না থাকার কারণে সুবিধা পাচ্ছে না মানুষ। কয়েক গ্রাম নিয়ে হোতার চক, এই চকের কৃষি পণ্য আনা-নেওয়ায় ভোগান্তির শেষ নেই। এই সেতুর জন্য চেয়ারম্যানকে অনেকবার অবহিত করেছি আমরা। এই সেতু ও রাস্তাটি হলে হোতার চকের প্রায় ৮ হাজার কৃষক উপকৃত হবে। 

রশুনিয়া ইউপির সাবেক সদস্য জুয়েল রানা সেন্টু বলেন,আমার আমলে বিএডিসির মাধ্যমে এই কালভার্টটি নির্মাণ হয়েছিল। তখন তারা বলেছিল যে কোলা ইউনিয়নের সীমানা থেকে আমাদের রশুনিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তাজপুর এলাকা পর্যন্ত রাস্তা হবে। রাস্তা হলে এই কালভার্টটি দিয়ে মানুষজন সহজেই চলাচল করতে পারবে। কিন্তু তারা খাল খনন করে এবং কালভার্টটি বানিয়ে চলে যায়। 

এরপরে আর কোন রাস্তা নির্মাণ করে নাই। এতে করে এই কালভার্টটি আর কোনো গুরুত্বই পায় নাই। এখন মনে হচ্ছে কালভার্টটি অপরিকল্পিতভাবে বানানো হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে আগে রাস্তা দরকার ছিল, তা না বানিয়ে কালভার্ট নির্মাণ করা ঠিক হয়নি। এখন কালভার্টটি একেবারেই জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। যে কোন সময় ধসে পড়তে পারে। 

রশুনিয়া ইউপির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবু সাইদ বলেন, আমার আগের চেয়ারম্যানের আমলে এই কালভার্টটি বানানো হয়েছে। আমি এবার নতুন চেয়ারম্যান হয়ে এসেছি। তবে খোঁজ খবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। যদি রাস্তা নির্মাণ করলে কালভার্টটি দিয়ে চলাচল করা যায়, তবে সেইটাই করব। আর যদি সেটা না হয়, তাহলে সবার সাথে আলাপ-আলোচনা করে কি করা যায়, সেটাই করা হবে।

আমারসংবাদ/এআই

Link copied!