Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

সিলেটের নিম্নাঞ্চল এখনো প্লাবিত, ত্রাণের জন্য হাহাকার

সিলেট ব্যুরো

সিলেট ব্যুরো

জুন ২০, ২০২২, ০৯:১৯ পিএম


সিলেটের নিম্নাঞ্চল এখনো প্লাবিত, ত্রাণের জন্য হাহাকার

সিলেটে বৃষ্টিপাত কম হলেও উজানের ঢলের কারণে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। তবে আগের চেয়ে নদ-নদীর পানি কমেছে।

সিলেটের পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সিলেটে সুরমা ও কুশিয়ারায়া নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।

সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানি স্থির রয়েছে। কিছু উঁচু এলাকা থেকে পানি নেমেছে। তবে নিম্নাঞ্চল এখনো আগের মতোই প্লাবিত। সেখানে কোমর থেকে গলাসমান পানি। এ ছাড়া কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, দক্ষিণ সুরমা, সিলেট সদর, বিশ্বনাথসহ বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকায় এখনো বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে।

বন্যাকবলিত সিলেট ও সুনামগঞ্জে দুর্ভোগ বাড়িয়েছে বৃষ্টির পানি; কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি কখনও বা মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে ওইসব এলাকায়। শিগগিরই এ বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা নেই। সিলেট বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় এ মাসজুড়ে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট আবহাওয়া অফিস।

এদিকে দুর্গম এলাকায় ত্রাণের জন্য আকুতি বাড়ছে। বানভাসি মানুষেরা মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেও খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও শৌচাগার সংকটে ভূগছেন।

আজ সোমবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জের বর্নি ও তেলিখাল এলাকায় গেলে দেখা যায় শত শত মানুষ সড়কের পাশে ত্রাণের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। ত্রাণের গাড়ি দেখলেই হাত বাড়াচ্ছেন। কেউ পাচ্ছেন আবার কেউ খালি হাতে ফিরছেন। ভালো জামা-কাপড় পরিহিত কাউকে দেখলেই সাহায্যের জন্য হাত পাতছেন অসহায় মানুষেরা। সিলেটের দুর্গত এলাকায় গেলেই এমন করুন দৃশ্যের দেখা মেলে।

আশ্রয় নেওয়া এসব মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখনো অনেক আশ্রয়কেন্দ্রে সরকারি কোনো ত্রাণ পৌঁছায়নি। অনেকেই না খেয়ে আছে। আছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।

জানা গেছে, এখনো অনেক এলাকায় সরকারি ত্রাণ পৌঁছায়নি। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে কিছু কিছু খাদ্যসহায়তা গেলেও পরিমাণে ছিল অল্প। কেউ কেউ আবার শুকনা খাবার নিয়ে গেলেও নৌকায় করে সেগুলো ভেতরের কোনো বন্যাদুর্গত গ্রামে নিয়ে যাচ্ছেন।

জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, জেলায় ৪৯৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৩০ হাজার ৬৩২ জন আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া ৩১ হাজার গবাদিপশুকে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রসহ বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ চলছে। তবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় জলযানের সংকটে বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, বৃষ্টিপাত তেমন কমার সম্ভাবনা নেই। আগামীকাল মঙ্গলবার সিলেটে বৃষ্টি কিছুটা কমতে পারে। তবে মাসজুড়েই সিলেট বিভাগে মাঝারি ও অতি ভারি বর্ষণের আভাস রয়েছে।

তিনি বলেন, আসাম ও মেঘালয়ে বন্যা হচ্ছে। ফলে উজানে বন্যা ও অতি ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনার কারণে  সামগ্রিক পরিস্থিতি খারাপ। সিলেটে ২৯ জুন পর্যন্ত মাঝামাঝি ধরনের ভারি বৃষ্টি থেকে অতিভারি বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে।’

কেএস

Link copied!