সফিউল আলম, কক্সবাজার
জুলাই ৬, ২০২২, ০৭:৫৮ পিএম
সফিউল আলম, কক্সবাজার
জুলাই ৬, ২০২২, ০৭:৫৮ পিএম
কক্সবাজার সদরের খুরুশকূলে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সালকে ১০ মিনিটেই কুপানোর পর মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ২০ সদস্যের সক্রিয় কিলিং স্কোয়াড়।
এ হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি আজিজ সহ ২ জনকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার (০৬ জুলাই) দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব।তবে হত্যার মোটিভ জানাতে না পারলেও বাকি আসামি গ্রেপ্তার এবং ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
এদিকে ফয়সাল হত্যার ঘটনায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে ১৭ জনকে এজাহারনামীয় এবং আরও ৭-৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে নিহত ফয়সালের বড় ভাই নাছির উদ্দিন বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেছেন।
নিহত ফয়সাল উদ্দিন সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি খুরুশকূল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউয়ারপাড়ার মৃত লাল মোহাম্মদের ছেলে। আর আজিজ সিকদারের বাড়ি সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম ডেইলপাড়ায়। তাঁর বাবার নাম মৃত বাঁচা মিয়া সিকদার।
ফয়সালের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত রোববার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ডেইলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে একদল দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে ফয়সালকে।
দলের নেতা-কর্মী ও স্বজনদের দাবি ছিল, পুলিশের উপস্থিতিতেই আজিজ সিকদারের নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের এই নেতাকে।এদিকে হত্যা ৩দিন পর মঙ্গলবার রাতে আজিজুল হককে প্রধান আসামি করে ১৭ জনকে এজাহারনামীয় এবং আরও ৭ থেকে ৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে নিহত ফয়সালের বড় ভাই নাছির উদ্দিন বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেন।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, ঘটনার দিন রাতে এবং পরের দিন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফয়সাল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দুই নারীসহ ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। পরের দিন তাঁদের ছয়জনকে ৫৪ ধারায় কক্সবাজার আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। ঘটনার পর থেকে জড়িতদের ধরতে মাঠে আছে পুলিশ।
মামলার বাদি নাছির উদ্দিন বলেন, মামলার প্রধান আসামি আজিজসহ বাকিরা সবাই চিতা বাঘের মতো ভয়ংকর। এই ভয়ংকর আজিজের নেতৃত্বেই পরিকল্পিতভাবে তাঁর ছোট ভাই ফয়সালকে হত্যা করা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চান তিনি। যেন এভাবে অন্য কাউকে জীবন দিতে না হয়।
এদিকে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বুধবার দুপুরে রামুস্থ র্যাব কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং করে র্যাব ১৫ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মঞ্জুর মেহেদী ইসলাম বলেন, চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডটি র্যাবের নজরে আসলে জড়িত আসামীদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে র্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে কক্সবাজারের লিংকরোডে একটি বাড়িতে আত্মগোপনে থাকা প্রধান আসামি আজিজ ও ২নং আসামি ফিরোজ আলম কে ডেইলপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেজর মঞ্জুর মেহেদী ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগ নেতা ফয়সালকে ১০ মিনিটেই কুপানোর পর মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ২০ সদস্যের সক্রিয় কিলিং স্কোয়াড়। বাকি আসামি গ্রেপ্তার এবং ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে তাদের অভিযান চলছে। তবে এখনো পর্যন্ত হত্যার মোটিভ জানা যায়নি। তবে বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে হত্যার মোটিভ বেরিয়ে আসবে বলে আশা করেন তিনি।
ছাত্রলীগ নেতা ফয়সালকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশের দায়িত্ব পালনে অবহেলা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে জেলা পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে গঠিত এ কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আমারসংবাদ/এআই