Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

স্কুলের ভবন নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

মো: মামুন মিয়া, মানিকগঞ্জ

মো: মামুন মিয়া, মানিকগঞ্জ

সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২, ০৩:৫৫ পিএম


স্কুলের ভবন নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

মানিকগঞ্জ হরিরামপুর উপজেলার  ডাকরখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এ এম কে ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ডিজাইন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

স্থানীয়রা জানায়, প্রয়োজনীয় তদারকির অভাবে স্থানীয়  এলজিইডি কর্তৃপক্ষ, ঠিকাদারের লোকজনের যোগসাজশে  দায়সারাভাবে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে বিদ্যালয়ের ভবনের কাজ সম্পন্ন করা  হচ্ছে। ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে ময়লাসহ নিম্নমানের বালু ও ইটের খোয়া। আর এই ইটের খোয়া,বালু ও সিমেন্ট মেশিন দ্বারা মিশানোর কথা থাকলেও তা না করে শিশু শ্রমিক দ্বারা হাতে মিশিয়ে পিলারের ঢালাইয়ের কাজ করছে ঠিকাদার। যেভাবে কাজ করা হয়েছে তাতে  ভবনটি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তারা আরো বলেন, এ ভবনে ছেলে মেয়েদের কীভাবে লেখাপড়া করাতে পাঠাবো তা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। স্কুলের ছাদ ঢালাইয়ের আগে অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদারকি করা উচিত।

২০১৯-২০ অর্থ বছরের প্রায় ১ কোটি  টাকার এ প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে গড়িমশি কওে নি¤œমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। তিন বছরেও শেষ করতে পারেনি বিদ্যালয়ের ভবনের কাজ। এতে স্কুলের কমোলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া মারাত্তক ভাবে ব্যহত হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের দপ্তরী মো: কামাল হোসেন বলেন, কাজের মান ভাল হবে কি করে? আমি যতবার এসও কে আসতে দেখি সে ততবার ঠিকাদরের কাছ থেকে ৩ হাজার করে টাকা নিয়ে যায়। জমাট বাঁধা সিমেন্ট দিয়ে কাজ করলেও এসও আর কিছু বলে না।

ঠিকাদার বায়জিদের সাথে কথা বললে তিনি টাকা দিয়ে প্রতিবেদককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন কিন্তু প্রতিবেদক ম্যনেজ না হওয়ায় তিনি বলেন, এখন রড সিমেন্ট ও ইটসহ সব কিছুর দাম বাড়ার কারনে কাজ একটু এদিক সেদিক হতে পারে। তবে এই কাজটি আমাদের লাইসেন্সে পাওয়ার পর অমিরেশ নামের এক ঠিকাদার আমাদের কাছ থেকে সাব কন্ট্রাক নিয়ে কাজ শুরু করে। কিছু দিন যাওয়ার পর তারা আর কোন কাজ না করে আমাদেরকে ২০ লক্ষ টাকার কাজ হয়েছে বলে একটি ভাওচার ও মাল সামগ্রী ধরিয়ে দিয়ে তারা এখান থেকে চলে যায়। তারা যে মাল সামগ্রী রেখে যায় তা ভাল কিনা মন্দ তা আমি বলব না।

তবে এসও মোহাম্মদ আলী আমাদের এখানে আসলেই তাকে তেল খরচ দিতে হয়। আমি তার নির্দেশে সেই মাল সামগ্রী দিয়ে কাজ করছি। কয়েকটি পিলারে সামান্য কিছু অংশ খোয়া, বালু ও সিমেন্ট হাতে মিশিয়ে ঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছে। তবে সিডিউলে যেভাবে বলা আছে সেভাবেই কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো: সাইদ হোসেন বলেন, তিন বছর হলো বিদ্যালয়ের কাজ শুরু হয়েছে কিন্তু  কোন অগ্রগতি নেই। ভবন নির্মানের কাজ ধীর গতি হওয়ায় কাজের গুনগতমান জানার জন্য এস্টিমেট চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী ও ঠিকাদার আমার কথায় কোন পাত্তাই দেয় না। এ বিষয়ে লিখিত আকারে উপজেলা  নির্বাহী অফিসার বরাবর, শিক্ষা অফিস ও প্রকৌশলী বরাবর চিঠি দিয়েও কোন ফায়দা হয়নি। বিদ্যালয়ের শ্রেনীকক্ষের সল্পতা থাকায় কমোলমতি শিক্ষার্থীদের শ্রেনীর কাজে মারাত্বক ভাবে বিঘ্ন ঘটছে।  

এ বিষয়ে এলজিইডির  নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুল হকের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাথে সাথে সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ভুইয়ার মাধ্যমে উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেন যেখানে যেখানে কাজ খারাপ হয়েছে তা ভেঙ্গে নতুন করে দ্রুত করানোর জন্য। 

এআই

Link copied!