Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

জেলা পরিষদ নির্বাচন: নেত্রকোনায় ভোটের লড়াইয়ে দুই সতিন

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

অক্টোবর ৫, ২০২২, ০৩:২৯ পিএম


জেলা পরিষদ নির্বাচন: নেত্রকোনায় ভোটের লড়াইয়ে দুই সতিন

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় সদস্য পদে ভোট যুদ্ধে নেমেছেন দুই সতিন। তাঁদের স্বামী পৌর মেয়র আলা-উদ্দীন আলাল গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদিকে কঠিন ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন তার দুই স্ত্রী। এ নিয়ে এলাকায় চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

আগামী ১৭ অক্টোবর সারাদেশে জেলা পরিষদের এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ভোটের লড়াইয়ে একে অপরের মুখোমুখি হওয়া দুই সতিন হলেন- আনোয়ারা বেগম ও সুরমী আক্তার সুমি। দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আলা-উদ্দীন আলালের স্ত্রী ।

পৌরমেয়র আলালের বড় স্ত্রী আনোয়ারা লড়ছেন তালা প্রতীক নিয়ে। আর ছোট স্ত্রী সুরমী আক্তার সুমি লড়ছেন অটোরিকশা প্রতীকে।

দুর্গাপুর উপজেলার নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা পরিষদ নির্বাচনে দুর্গাপুর উপজেলার (১ নং ওয়ার্ডের) সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আনোয়ারা বেগম ও সুরমী আক্তার সুমি নামে দুইজন নারী। এছাড়াও দুইজন পুরুষ প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- জুয়েল মিয়া ও মো. আব্দুল করিম।

স্থানীয়রা জানান, আলা-উদ্দীন আলাল বেশকিছুদিন ধরে গুরুতর অসুস্থ। মারাত্মক শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন তিনি। বর্তমানে ঢাকার শ্যামলীতে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সতীন হওয়ায় আনোয়ারা ও সুমির মধ্যে অনেক আগে থেকেই সম্পর্কের বৈরিতা রয়েছে। দুই স্ত্রীর কাউকেই তিনি প্রতিদ্বন্দ্বীতা থেকে সরাতে পারেননি। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে আলাল আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

দুজনের নির্বাচনী পোস্টারে দেখা গেছে, আনোয়ারা বেগম তার পোস্টারে স্বামীর নাম ও পরিচয় উল্লেখ করেছেন। কিন্তু সুরমী আক্তার সুমি এসব কিছুই উল্লেখ করেননি। পৌর মেয়র আলা-উদ্দীন আলাল অসুস্থ থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

ছোট স্ত্রী সুরমী আক্তার সুমি বলেন, স্বামীসহ পরিবারের সবার সিদ্ধান্তেই আমি প্রার্থী হয়েছি। বর্তমানে আমার স্বামী রাজধানীর শ্যামলীতে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এরমধ্যে ১৮ দিন তিনি আইসিইউতে ছিলেন। ৪-৫ দিন আগে তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। একটা অপারেশন লেগেছে, তবে এখন অবস্থা ভাল। সারাক্ষণ পাশে আছি স্বামীর চিকিৎসা এই মুহূর্তে আমার কাছে মূখ্য। এদিকে এলাকায় স্বামীর পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি সব আত্মীয়-স্বজন ও পৌর পরিষদের কাউন্সিলরা আমার পক্ষে মাঠে কাজ করছেন।

সুমি আরও বলেন, আমার স্বামী আলালের সুনাম নষ্ট করার জন্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজন সতীন আনোয়ারা বেগমকে প্রার্থী করেছে। স্বামী জনপ্রতিনিধি হওয়ায় তাঁর পাশে থেকে জনসেবা শিখেছি। তাই স্বামীর পাশে থেকে জনগণের জন্য ভাল কিছু করতে চাই। নির্বাচিত হলে সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে সম্ভব সবকিছু করবো। এমনিক আমার সম্মানি ভাতাটুকুও নিজে না নিয়ে মানুষের কল্যাণে ব্যয় করব।

এদিকে বড় স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বলেন, আমার সংসার জীবন ৩০ বছরের। আর সুমির মাত্র ৫ বছর। স্ত্রী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর পাশে থেকে তাঁর জনসেবাসহ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থেকেছি। যেহেতু আমি বড় তাই সুমির উচিত ছিল তার প্রার্থীতা প্রতাহার করা। সে এতটুকু ছাড় দেয়নি, তাই আমিও প্রার্থীতা প্রতাহার করবো না। সুমি আমার স্বামী কেড়ে নিয়েছে, সংসার কেড়ে নিয়েছে। আমি লাঞ্চিত, বঞ্ছিত তাই সকলে আমার প্রতি সদয় হবে এটা আমার বিশ্বাস। জয়ী হলে এলাকার মানুষের জন্য সম্ভব সবকিছু করবো।

এআই

Link copied!