ডিসেম্বর ৬, ২০২২, ০১:৫২ পিএম
গত কয়েকদিন যাবত হার্ট অ্যাটাকে অসুস্থ একমাত্র বড় ভাইয়ের সেবা করে আসছিল এইচএসসি পরীক্ষার্থী বোন রীনা আক্তার। সকালে একমাত্র বড় ভাই সোহাগ মিয়া হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়। বাড়িতে লাশ রেখে পরীক্ষায় অংশ নিলেন রীনা আক্তার নামে এক এইচএসসি শিক্ষার্থী। রীনা আক্তার এ বছর গন্ডা ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
সোমবার সকালে কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি।
জানা যায়, গোহাগ মিয়া নেত্রকোনা কেন্দুয়া উপজেলার গন্ডা ইউপির গন্ডা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল গনির একমাত্র ছেলে এবং গন্ডা ডিগ্রি কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র।। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বুকের সমস্যা ও জ্বর জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।
সোমবার সকালে খাবার খাওয়ার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে সকাল ৯টার দিকে চলে যান না ফেরার দেশে।
ভাইয়ের মৃত্যুতে ভেঙে পড়ে বোন রীনা, বাবা মা সহ তার পুরো পরিবার। সকালে লাশ বাড়িতে রেখেই সান্দিকোনা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন।
এদিকে এ শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে আত্মীয়স্বজন, সহপাঠী ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
রীনা আক্তারের সহপাঠীরা জানান, পরীক্ষার হলে বসেও রীনা কান্না করছিল। সহপাঠীরা সবাই তাকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। পরীক্ষা চলাকালে রীনার ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টি সবাইকে আপ্লুত করেছে।
গন্ডা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ফকির কল্যান বলেন, গোহাগ মিয়া অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। তার ছোট বোন রীনা এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। ভাইয়ের লাশ বাড়িতে রেখেই পরীক্ষা কেন্দ্রে চলে যায় রীনা।
রীনা আক্তার বলেন, সকালে একসঙ্গে বসে খাওয়া-দাওয়া করে সবাই গল্প করলাম হঠাৎ ভাইয়ের শরীরটা খারাপ করলো তখনই ভাই শুয়ে পড়লো বিছানায় আর তখনই বুঝতে পারি ভাই আর বেঁচে নেই।পরে মনের শান্তনার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। ভাই শুধু এটাই বলতেন পরিস্থিতি যত খারাপই হোক না কেন যেনো পড়াশোনা চালিয়ে যাই। ভাইয়ের কথা রাখতেই ভাইয়ের লাশ রেখেই আমাকে আমার সহপাঠীরা পরীক্ষার কেন্দ্রে নিয়ে যায়।
এআই