শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
জুলাই ৫, ২০২৫, ১১:৪৩ পিএম
প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি খাতের টেকসই উন্নয়নে দুধের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণে একটি জাতীয় নীতি প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, “খামারিরা পরিশ্রম করে গবাদিপশু লালন করছেন, অথচ ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। পাশাপাশি গবাদিপশুর খাদ্যের দামও বেড়েছে। এ অবস্থায় টিকে থাকতে হলে দুধের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ ও উৎপাদন খরচ কমাতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।”
শুক্রবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া গ্রামে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি)-এর অধীনে পোতাজিয়া ডেইরি পিজিতে আয়োজিত ক্ষুদ্র খামারি সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিরাজগঞ্জ জেলার দুধ উৎপাদনে অবদানের প্রশংসা করে উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের একক জেলা হিসেবে সিরাজগঞ্জে যে পরিমাণ দুধ উৎপাদন হচ্ছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এ অঞ্চলের খামারিদের আন্তরিক প্রচেষ্টায়ই তা সম্ভব হয়েছে।”
তিনি জানান, সিরাজগঞ্জে দুধ সংরক্ষণের জন্য চিলিং সেন্টার স্থাপন করা হবে, যাতে খামারিরা সহজে দুধ সংরক্ষণ ও বিপণনের সুবিধা পান।
গবাদিপশুর খাদ্য ব্যয়ের চাপ কমাতে ঘাসভিত্তিক খাদ্য ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “ঘাস চাষ বাড়ালে খামারিদের উৎপাদন ব্যয় অনেক কমে আসবে।”
এছাড়া গরুর খুরা রোগ প্রতিরোধে দেশের চারটি জেলার মতো সিরাজগঞ্জেও ভ্যাকসিন কর্মসূচি চালু করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এ উদ্যোগের ফলে খামারিরা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, পরিচালক বেগম শামসুন্নাহার আহমদ, এলডিডিপি প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন।
খামারিদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মো. আব্দুল খালেক ফকির, মো. আব্দুল মতিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক জাকারিয়া জিহাদ ও ফারজানা মিমি।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ. কে. এম. আনোয়ারুল হক।
সভায় প্রাণিসম্পদ খামারিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও অংশগ্রহণকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে উপদেষ্টা পাবনা জেলার প্রাণিসম্পদ বিভাগের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, পরিচালক বেগম শামসুন্নাহার আহমদ, রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক ডা. আনন্দ কুমার অধিকারী, পাবনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ.কে.এস.এম. মুশাররফ হোসেন, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ডা. কৃষ্ণমোহন হালদারসহ বিভিন্ন উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা।
পরে উপদেষ্টা সন্ধ্যায় বাঘাবাড়ি ঘাটের দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা পরিদর্শন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কারখানার উপ-মহাব্যবস্থাপক (প্রসেসিং) ডা. সাইদুল ইসলাম এবং উপ-মহাব্যবস্থাপক (সমিতি) অমীয় কুমার মণ্ডলসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
এছাড়াও তিনি সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুরে বেঙ্গল মিটের লাল মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, কসাইখানা, মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র ও জৈব গ্যাস প্ল্যান্ট পরিদর্শন করেন।
ইএইচ