Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

নাগরপুরে ধলেশ্বরীর মাটি যাচ্ছে কোথায়?

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

নভেম্বর ৩০, ২০২০, ১০:০০ এএম


নাগরপুরে ধলেশ্বরীর মাটি যাচ্ছে কোথায়?

টাঙ্গাইলের নাগরপুর ও দেলদুয়ার উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ধলেশ্বরী নদীর দু’পাড়ের মাটি বিক্রির হিড়িক পড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শতাধিক ট্রলি ট্রাক্টর ভরে নদীর তীরের মাটি সংগ্রহ করছে স্থানীয় কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ী। আর এসব মাটি তারা বিক্রি করছে পার্শ্ববর্তী ইট ভাটাগুলোতে। 

দীর্ঘদিন যাবত এসব মাটি বিক্রির কাজ চললেও স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে। যার কারণে অসাধু মাটি ব্যবসায়ীদের সাথে যুক্ত হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। তারা এসব জমিতে চাষাবাদ না করে টাকার লোভে নদীর তীরের মাটি বিক্রি করছেন। এতে করে ভাঙ্গন আতঙ্কে পড়ছে নদী পাড়ের এলাকাগুলো।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ভাড়রা থেকে মোকনা ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীর দুই তীরে ১৫ থেকে ২০ টি স্থানে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব। এই এলাকায় শামসুল হক সেতু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নামে (শেখ হাসিনা সেতু) দুটি সেতু রয়েছে। সেতু দুটির অর্ধ কিলোমিটারের মধ্যে থেকেও মাটি কাটা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রতিটি স্থানে শত শত শ্রমিক মাটি কেটে ট্রলি ট্রাক্টরে তুলছে। পরে এসব মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পার্শ্ববর্তী ইট ভাটায়। 

পাঁচতারা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ২০-৩০ জন শ্রমিক নদীর তীর ঘেঁষে ফসলি জমির মাটি কেটে ট্রলার বোঝাই করছে। এভাবে প্রতিদিন তারা ফসলি জমির মাটি কাটার কাজে নিয়োজিত থাকেন। 

মাটি কাটার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানান, আমরা ভাল মুজুরী পাই। সারাদিনে ২০-২৫ টি ট্রলি ভরি। এতে আমাদের ভালই আয় হচ্ছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় প্রভাবশালী মহল তাদের প্রভাব খাটিয়ে মাটির ব্যবসা করে যাচ্ছে। কৃষককে টাকার লোভ দেখিয়েও তারা অসাধু উপায়ে মাটি বিক্রি করছে।

মাটি বিক্রেতা কৃষকরা জানান, এটি আমাদের পৈতৃক সম্পদ। এ জমিতে কোন ফসল হয় না। মাটি বিক্রি করে টাকা পাচ্ছি তাই বিক্রি করছি। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মাটি ব্যবসায়ী বলেন, নদীর তীরের মাটি খুব কম দামে আমরা কিনতে পারি। বর্ষার পানি এলে এসকল জমি পলিতে আবার ভরে যায়। কৃষক নগদ টাকার লোভে এসব জমির মাটি বিক্রি করে। এতে ক্ষতি কি? কৃষকও লাভবান আমরাও লাভবান।

এলাসিন ঘাটে শামসুল হক সেতুর পশ্চিম পাশে গিয়ে দেখা যায় ট্রলির সাড়ি। নদীর তীর ও সেতুর এতো কাছাকাছি এলাকা থেকে মাটি কাটায় নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাইলে মাটি বিক্রেতারা জানান, অনেকেইতো মাটি বিক্রি করছে। প্রশাসন তো কাউকেই বাঁধা দিচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত-ই-জাহান বলেন, অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলনের সাথে যারা সম্পৃক্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

আমারসংবাদ/কেএস