Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

ওয়েলিংটনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের পুলিশ কর্মকর্তারা

আব্দুল্লাহ আল জাবেদ

অক্টোবর ৩১, ২০২১, ১১:৩৫ এএম


ওয়েলিংটনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের পুলিশ কর্মকর্তারা

নিউজিল্যান্ডের বহুল পরিচিত সাময়িকী দ্য ওয়েলিংটন ম্যাগাজিনে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) শামসুন্নাহারকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বাংলাদেশে পুলিশ প্যারেডে নেতৃত্বদানকারী প্রথম নারী কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনি অ্যাসিস্ট্যান্ট ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (এআইজি), বাংলাদেশ পদে কর্মরত। শামসুন্নাহার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে সাতবার জাতিসংঘ শান্তি পদক অর্জন করেছেন। 

এই সংখ্যায় নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই এর পাশাপাশি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে আরেক পুলিশ কর্মকর্তা-ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের শাহবাগ থানার টহল পুলিশ পরিদর্শক শেখ আবুল বাশারের। দ্য ওয়েলিংটন ম্যাগাজিনে আবুল বাশার সম্পর্কে বলা হয়েছে শেখ আবুল বাশার দায়িত্বশীলতা ও মানবিকতার প্রতীক।

প্রকাশিত দ্য ওয়েলিংটন ম্যাগাজিনে বিশেষ সংখ্যাটির শিরোনাম এমন করা হয়েছে- যেসব মানুষ জাতিকে আলোকিত করেছেন।

নিউজিল্যান্ডের বহুল পরিচিত সাময়িকী দ্য ওয়েলিংটন ম্যাগাজিনে বাংলাদেশের নারী পুলিশ কর্মকর্তা পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) শামসুন্নাহারকে নিয়ে যে আলোচিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে এই কর্মকর্তাকে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য ও রুচিশীল কর্মকর্তা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে দ্য ওয়েলিংটন ম্যাগাজিনে।  

দ্য ওয়েলিংটন ম্যাগাজিনের বিশেষ সংখ্যায় প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। এই সংখ্যায় নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, বাংলাদেশের পুলিশ কর্মকর্তা শেখ আবুল বাশারসহ বেশ কয়েকজনকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

শামসুন্নাহার ইতালির ব্রিন্দিসিতে ইউনাইটেড নেশনস গ্লোবাল সার্ভিস সেন্টারের (ইউএনজিএসসি) স্ট্যান্ডিং পুলিশ ক্যাপাসিটিতে (এসপিসি) হিউম্যান রিসোর্স অফিসার পদে সম্প্রতি যোগদান করেছেন।

বাংলাদেশের পুলিশ কর্মকর্তা শামসুন্নাহারকে নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি বাংলাদেশে কোনো পুলিশ প্যারেডে নেতৃত্বদানকারী প্রথম নারী কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনি অ্যাসিস্ট্যান্ট ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (এআইজি), বাংলাদেশ পদে কর্মরত।

প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ফরিদপুরে জন্মগ্রহণকারী শামসুন্নাহার ১৯৯৩ সালে ১৬ বছর বয়সে যশোরে বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে যান। সেই থেকে তার স্বপ্ন, তিনি দেশমাতৃকার প্রতিরক্ষায় ভূমিকা রাখবেন। একপর্যায়ে জাতিকে সেবা দিতে শামসুন্নাহার বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।

শামসুন্নাহার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে সাতবার জাতিসংঘ শান্তি পদক অর্জন করেছেন। নিজ দেশে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম)। দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ মেডেলও (বিপিএম) অর্জন করেছেন। এছাড়া তিনি উইমেন পুলিশ মেডেল ফর ব্রেভ উইমেন পুলিশ অফিসার এবং দুটি আইজি ব্যাজও অর্জন করেছেন।

তিনি যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৭ সালে এমবিএ ডিগ্রি লাভ করেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০০৫ সালে এমফিল, ১৯৯৮ সালে এমএসএস ও ১৯৯৬ সালে বিএসএস ডিগ্রি লাভ করেন।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করে শামসুন্নাহার ২০তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেন। প্রথম চেষ্টায়ই তিনি বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তার প্রথম পছন্দ হিসেবে নিয়োগ পান বাংলাদেশ পুলিশেই। এরপর দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকেন শামসুন্নাহার।

বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী পুলিশ কর্মকর্তা, যিনি ২০১৬ ও ২০১৭ সালে পরপর দুই বছর পুলিশের বার্ষিক প্যারেডে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বাংলাদেশের প্রথম নারী পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে তিনি সুপারিনটেনডেন্ট (এসপি) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এসপি হিসেবে তার প্রথম পদায়ন হয়েছিল চাঁদপুর জেলায়।

পুলিশ পরিদর্শক শেখ আবুল বাশার সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিদিনই মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচিসহ নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সবকিছুই পর্যপবেক্ষণের দায়িত্বে থাকেন পুলিশ পরিদর্শক শেখ আবুল বাশার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হিসেবে তাকে একদিকে যেমন শান্তি ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হয়, একইভাবে তাকে জনগণের অধিকারও নিশ্চিত করতে হয়, যাতে তারা শান্তি ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পর্য ন্ত নিজেদের বক্তব্য পৌঁছাতে পারে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিদিনই কোনো না কোনো গোষ্ঠীর আগমন ঘটে। কখনো শ্রমিকেরা বেতন-ভাতার দাবিতে এখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন, কখনো নিপীড়ন-ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়, আবার অন্যকোনো দাবিতেও কারও কারও আগমন ঘটে। কখনো কখনো দাবি জানানো ব্যক্তিরা, বিক্ষোভকারীরা দীর্ঘসময় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেন।

প্রতিবেদনের তথ্যমতে, শেখ আবুল বাশার ১৯৬৪ সালে গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা শেখ আবুল কাশেমও পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন।

১৯৮৯ সালে স্নাতক সম্পন্ন করে শেখ আবুল বাশার পুলিশে সার্জেন্ট পদে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের শাহবাগ থানার টহল পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

আমারসংবাদ/এএজে