Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪,

বসুন্ধরা বিটুমিন প্লান্ট: উদ্বোধনের পর উৎপাদন শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২০, ০৮:৫৪ এএম


বসুন্ধরা বিটুমিন প্লান্ট: উদ্বোধনের পর উৎপাদন শুরু

উদ্বোধন করা হয়েছে বেসরকারি খাতে দেশের প্রথম বিটুমিন কারখানা ‘বসুন্ধরা বিটুমিন প্লান্ট’। বসুন্ধরা গ্রুপের সিস্টার কনসার্ন বসুন্ধরা অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কম্পানি লিমিটেড নির্মিত এই কারখানা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে উন্নমানের বিটুমিন রপ্তানিতে সক্ষম। উদ্বোধনের পর পরই উৎপাদন শুরু করে প্লান্টটি।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকার কেরানীগঞ্জের পানগাঁওয়ে এই বিশাল কারখানা উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বিশেষ অতিথি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি আহমেদ আকবর সোবহান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর। এছাড়া বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এই দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। পিছিয়ে পড়াদের খাবার দিতে হবে, অন্ধকার থেকে আলোর দিকে আনতে হবে। সরকারের সহযোগিতায় প্রাইভেট সেক্টর এগুলো বাস্তবায়নে কাজ করছে। আমরা এতোদিন দেশীয় বিটুমিন পাইনি। দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে হতো। দেশের চাহিদার ৯০ শতাংশ আমদানি নির্ভর। এগুলো আবহাওয়ার সাথে মেলে না। সমস্যা হয়। বসুন্ধরা গ্রুপ সে সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করতে যাচ্ছি আমরা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথে প্রাইভেট খাত এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর পিতার স্বপ্ন পূরণ করতে যাচ্ছেন। সেই স্বপ্ন পূরণে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানের জোগান দিতে দেশে যাঁরা এগিয়ে এসেছেন তাদের সম্মুখভাগে রয়েছে এই বসুন্ধরা গ্রুপ।

অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের পর উপভোগ্য লেজার শো প্রদর্শন করা হয়। সেখানে বাংলাদেশে প্রথম বেসরকারি খাতের উদ্যোগে গড়ে ওঠে 'বসুন্ধরা বিটুমিন প্লান্ট'র চিত্র মূর্ত হয়ে ওঠে।

বিটুমিন জ্বালানি তেলের একটি বাই-প্রোডাক্ট পণ্য। এটি মূলত রাস্তাঘাট নির্মাণে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে বছরে বিটুমিনের চাহিদা কয়েক লাখ টন। এর প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর। এর মধ্যে বিপিসির নিয়ন্ত্রণাধীন ইস্টার্ন রিফাইনারি ৭০ হাজার টন উৎপাদন করে। বাকি বিটুমিন মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়।

তবে প্রায়ই বিদেশ থেকে নিম্নমানের বিটুমিন আমদানি করে সড়কে ব্যবহারের কারণে সড়ক টেকসই হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় দেশেই সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন বিটুমিন উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়ে নতুন প্ল্যান্ট স্থাপন করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বসুন্ধরা গ্রুপের বিটুমিন প্ল্যান্ট থেকে বছরে সাড়ে ৮ লাখ টন বিটুমিন ও পিচ উৎপাদন হবে।

বসুন্ধরা গ্রুপের চিফ মার্কেটিং অফিসার (সিমেন্ট সেক্টর) খন্দকার কিংশুক হোসাইন জানান, বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, বিশেষ করে সড়ক ও মহাসড়ক নির্মাণে বিটুমিনের চাহিদা পূরণে এই প্ল্যান্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পর আমরা উৎপাদিত উচ্চমানের বিটুমিন বিদেশে রপ্তানি করার পরিকল্পনা করছি। দেশের চাহিদা বাড়লে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর ব্যবস্থাও রয়েছে বসুন্ধরা বিটুমিন প্ল্যান্টে।

তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে বিটুমিনের চাহিদা প্রায় ৫ লাখ টন, এর ৯০ শতাংশই আমদানি করতে হয়। বাকি ১০ শতাংশ বিটুমিন সরবরাহ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ইস্টার্ন রিফাইনারি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহারের কারণে বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল অনুযায়ী টেকসই হচ্ছে না। এতে দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশে প্রতি মাসে বিটুমিনের চাহিদা প্রায় ৪২ হাজার টন। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্প্রসারিত হওয়ায় প্রতি বছর এর চাহিদা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। সড়কে ব্যবহারের জন্য পেনেট্র্যাশন গ্রেডের বিটুমিন উৎপাদন ছাড়াও বসুন্ধরা বিটুমিন প্ল্যান্টে প্রিমিয়াম মানের পিচ উৎপাদনের সক্ষমতাও রয়েছে।

ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী কাটব্যাক, ইম্যুলসিফাইড, অক্সিডাইজড ও পলিমার (এসবিএস, রাবার পাউডার) উৎপাদন ও সরবরাহ করা সম্ভব হবে। সাধারণ পেনেট্র্যাশন গ্রেড (৬০-৭০/৮০-১০০) ও উন্নত গ্রেডের বিটুমিন চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন ও সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

আমারসংবাদ/এমএআই