Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

সঞ্চয়পত্র ৫ লাখ টাকা অতিক্রম করলেই ১০ শতাংশ কর

নিজস্ব প্রতিবেদক

সেপ্টেম্বর ১১, ২০২০, ০৭:০৪ এএম


সঞ্চয়পত্র ৫ লাখ টাকা অতিক্রম করলেই ১০ শতাংশ কর

পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে স্বয়ংক্রিয় পুনঃবিনিয়োগের উৎসে কর কর্তনে স্পষ্টীকরণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থাৎ কোনও বিনিয়োগে অর্জিত মুনাফা ১ লাখ টাকা হলে ১০ হাজার টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) এসংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সার্কুলারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নতুন সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ধারা ৫২ ডি অনুযায়ী, সেভিংস ইনভেস্টের মুনাফা পরিশোধকালে উৎসে কর কর্তন করতে হয়। অর্থাৎ মুনাফা পরিশোধের তারিখে বিদ্যমান করহারে উৎসে কর কর্তন করতে হবে। এখানে পরিশোধ বলতে ট্রান্সফার, ক্রেডিট, সমন্বয় অথবা পরিশোধের আদেশ বা নির্দেশ বোঝানো হয়।

সার্কুলারে বলা হয়, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র দ্বিতীয় মেয়াদে স্বয়ংক্রিয় পুনঃবিনিয়োগের ফলে নিট মুনাফা ও আসল একত্রে মোট বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হবে।

মুনাফা পরিশোধের তারিখে পুঞ্জীভূত বিনিয়োগ পাঁচ লাখ টাকা অতিক্রম করলে গত বছরের ১ জুলাই থেকে পরবর্তী যেকোনো সময় মুনাফা পরিশোধকালে উৎসে ১০ শতাংশ কর কর্তন করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ৫২(ডি) ধারা অনুযায়ী কোনও সঞ্চয়ী হিসেবে মুনাফা পরিশোধের সময় ব্যাংকগুলোর উৎসে আয়কর কেটে রাখতে হয়। অর্থাৎ মুনাফা পরিশোধের তারিখে বিদ্যমান করহারে অগ্রিম আয়কর কেটে রাখতে হবে।

বিদ্যমান আইনে পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকার নিচে বিনিয়োগ করলে ওই বিনিয়োগের অর্জিত মুনাফা হতে ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর পরিশোধ করা হয়। আর ৫ লাখ টাকা অতিক্রম করলে মুনাফার ওপর ১০ শতাংশ অগ্রিম আয়কর পরিশোধ করতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, অনেকেই মুনাফায় ছাড় পাওয়ার জন্য আলাদা আলাদাভাবে ৫ লাখ টাকা বা এর নিচে একাধিকবার বিনিয়োগ করে থাকেন। নিয়ম অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্রে প্রথম মেয়াদ অতিক্রম হলে আর এর পর কেউ অর্থ উত্তোলন না করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনঃবিনিয়োগ হয়ে যায়।

কেউ ৫ লাখ টাকা বা তার কম বিনিয়োগ করলে এবং পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্র থেকে মুনাফা উত্তোলন না করলে প্রথম মেয়াদ শেষে আসলের সাথে মুনাফা যুক্ত হয়ে ৫ লাখ টাকা অতিক্রম হয়ে যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, প্রথম মেয়াদের আসল দ্বিতীয় মেয়াদের একই বিনিয়োগ হতে পারবে না। কারণ, প্রথম মেয়াদে আসলের সাথে অর্জিত মুনাফা যুক্ত হয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে মোট বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করতে হবে।

এ ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনঃবিনিয়োগের সময় ৫ লাখ টাকা অতিক্রম হলেই করহারে ছাড় পাওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না। অর্থাৎ ৫ লাখ টাকা অতিক্রম হলেই বিনিয়োগকারীকে দ্বিতীয় মেয়াদে মুনাফার ওপর ১০ শতাংশ হারে অগ্রিম আয়কর পরিশোধ করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সময় কর শনাক্তকারী নম্বর বা টিআইএন প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করায় মধ্যে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ভাটা পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ব্যাংকিং খাতে মুনাফার হার তলানিতে নেমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা বাধ্য হয়ে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ আবার বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ, ব্যাংকে আমানতের সুদহার ক্ষেত্র বিশেষ দুই থেকে আড়াই শতাংশে নেমে এসেছে।

এরওপর মুনাফার ওপর ১০ শতাংশ অগ্রিম আয়কর কাটার বিধানতো রয়েছেই। সবমিলে প্রকৃত মুনাফা আরো কমে যাচ্ছে। কিন্তু সঞ্চয়পত্রে এখনো মুনাফার হার ১১ শতাংশের ওপরে রয়েছে। বেশি মুনাফার আসায় বাধ্য হয়েই অনেকেই প্রথমবারে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের অর্থ উত্তোলন করছেন না। আর প্রথমবারের বিনিয়োগের অর্থ উত্তোলন না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনঃবিনিয়োগ হয়ে যাবে।

আমারসংবাদ/এআই