হাকিমপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০, ১১:০৫ এএম
পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আবারও হঠাৎ করেই পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত সরকার। সোমবার দুপুরে ভারতের দিল্লিতে পেঁয়াজ রপ্তানি নিয়ে আলোচনায় বসে সেদেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। আলোচানায় স্বিদ্ধান্ত নেয় অনির্দষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানি করবেনা ভারত।
এসুযোগে এক দিনেই দিগুন মুল্যে পেঁয়াজ বিক্রয় করছে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা। একই অজুহাতে গত বছরেও ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত সরকার। এরপর বন্ধের দীর্ঘ ৫ মাস পরে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়ার পর পেঁয়াজ রপ্তানি শুরু হয়।
জানাযায়, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে বন্যায় পেঁয়াজের ফসলের ক্ষতি ও অভ্যন্তরিন বাজারে পেঁয়াজের সংকট এবং মুল্য বৃদ্ধির কারন দেখিয়ে হঠাৎ করেই সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তাতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সে দেশের সরকার। ফলে হিলি স্থলবন্দরসহ দেশের সকল বন্দর দিয়ে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ দিয়েছে। এসংক্রান্ত্র ভারত সরকারের বানিজ্য মন্ত্রানালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখার এডিশনাল সেক্রেটারী অমিত ইয়াদব স্বাক্ষরিত এক আদেশ জারি করা হয়। ফলে বিপদে পড়েছে পেঁয়াজ আমদানি কারকরা।
হিলি স্থরবন্দরের আমদানি রপ্তানি কারক গ্রুপের সভাপতি মো. হারুন উর রশিদ হারুন বলেন, পেঁয়াজ বোঝাই শতাধিক ট্রাক সীমান্তের ওপারে আটকা পড়েছে। যা নষ্ঠ হয়ে গেলে অনেক টাকার লোকসান হবে। ইতোপূর্বে আমদানির লক্ষ্যে ১০ হাজার মে. টন পেঁয়াজ এলসি করা রয়েছে এগুলোর ভবিষ্যত কি হবে তা নিয়ে শঙ্খায় পড়েছে বন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারকরা। এলসিকৃত পেঁয়াজ গুলো দেশে নিয়ে আসার জন্য উভয় দেশের সরকারের নিকট অনুরোধ জানিয়েছে ব্যবসায়ী নেতা ও আমদানি কারকগণ।
এদিকে সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ীরা এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অতিরিক্ত লাভে পেঁয়াজ বিক্রয় করছে বন্দরের আরত গুলোতে। আমদানি বন্ধের অজুহাতে পূর্বের আমদানিকৃত পেঁয়াজ দিগুন দামে বিক্রি করছে বন্দরের ব্যবসায়ীরা। সোমবার যে পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা দরে বিক্রয় হয়েছে মঙ্গলবার তা বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে আর নিম্ন মানের পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রয় করছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। এমনকি তারা কৌশলের আশ্রয় নিয়ে ক্রেতাদের নিকট কোন বিক্রয় মেমো দিচ্ছেনা এমন অভিযোগ করেছে পেঁয়াজ ক্রয় করতে আসা একাধিক পাইকাররা।
অনেকে অতিরিক্ত দাম চাওয়ায় পেঁয়াজ কিনতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। আরও বেশী দামে পেঁয়াজ বিক্রয় করার আশায় অনেকে আরত গুলো বন্ধ রেখেছে এমন অভিযোগও করেছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পেঁয়াজ কিনতে আসা পাইকাররা।
এদিকে নাম পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পেঁয়াজ পাইকারি ক্রেতা জানান, সুযোগ সন্ধানি পেঁয়াজ আমদানি কারকগণ অধিক মুনাফার আসায় তাদের আমদানিকৃত পেঁয়াজের সিংহভাগই রাতারাতি অতীতের ন্যায় গোপন মজুদ করার অভিযোগ তুলেছেন।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি কারক মো. সাইফল ইসলাম জানান, এর আগে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রয় করলেও আমদানি না থাকায় ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করছি। এরপর হয়ত ১শ’ টাকা ১৫০ টাকা কেজিও বিক্রয় করতে হবে।
আমারসংবাদ/এমআর