Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

থমকে গেলো মুক্তিযোদ্ধাদের গৃহঋণ

প্রিন্ট সংস্করণ॥ বিশেষ প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮, ০৬:৫৭ পিএম


থমকে গেলো মুক্তিযোদ্ধাদের গৃহঋণ

মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাংকের মাধ্যমে সরল সুদে গৃহঋণ পাওয়া থমকে গেছে। এতো দিন ব্যাংক ঋণে নিজের ঘর তৈরির স্বপ্ন দেখলেও তাদের সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন এখন বহুদূর। এতো দিন বলা হচ্ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের ৫ শতাংশ সরল সুদে ১৫ হাজার কোটি টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ দিবে সরকার। কিন্তু গতকাল অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, এ ঋণ দেওয়ার কাজ অর্থ বিভাগের নয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের। ফলে পরবর্তী ব্যবস্থার জন্য ওই বিভাগেই পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিনা সুদে ঋণ দেওয়া ব্যাংকের জন্য বাস্তবসম্মত নয়। আর দিতে হলেও সুদের ভর্তুকি সরকারকেই দিতে হবে। সূত্র জানায়, এ সংক্রান্ত কমিটি মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাংকের মাধ্যমে সরল সুদে গৃহঋণ জন্য এরইমধ্যে কাঠামোর কাজ শেষ হয়েছিল। সরকার চেয়েছিল ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট থেকেই প্রকল্পটি চালু করতে। তাই মুক্তিযুদ্ধবিষযক মন্ত্রণালয়কে মুক্তিযোদ্ধাদের হালনাগাদ তালিকা দেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিনা সুদে ঋণ ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্য বাস্তবায়নের কর্মকৌশল কি হবে, এতে সম্ভাব্য আর্থিক সংশ্লেষণের পরিমাণ ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত ও মতামত সংবলিত বিস্তারিত প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংক প্রস্তুত ছিল। তাতে দুইটি বিকল্প প্রস্তাব করা হয়েছিল। প্রথম প্রস্তাবে মুক্তিযোদ্ধাদের বিনা সুদে আনুমানিক ১৫ হাজার ৩ কোটি টাকা ঋণ প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সরকার বাজেট থেকে বরাদ্দ দিবে। বিকল্প প্রস্তাব অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো নিজস্ব তহবিল থেকে এ অর্থ সংস্থান করবে। উভয় প্রস্তাবে প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধাকে ৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ঋণের মেয়াদ হবে ১০ বছর। ঋণগ্রহীতা মুক্তিযোদ্ধাকে ১২০টি কিস্তিতে ঋণের মূল টাকা পরিশোধ করতে হবে। এক্ষেত্রে আসল টাকা পরিশোধে মাসিক কিস্তির পরিমাণ হবে ৬ হাজার ৭৯২ টাকা। এ ঋণের জন্য কোনো সুদ দিতে হবে না। ঋণগ্রহীতার পক্ষে যাবতীয় সুদ সরকার দেবে। কিন্তু এখন সব প্রস্তাবই বৃথা হয়ে গেছে, অর্থ বিভাগের এক চিঠিতে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের ৫ শতাংশ সরল সুদে ১৫ হাজার কোটি টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ দেওয়ার বিষয়টি বাজেট অনুবিভাগের এখতিয়ারভুক্ত নয়। এটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এখতিয়ারভুক্ত বিধায় পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রহণের জন্য প্রেরণ করা হলো। সরকার বর্তমানে সোনালী, জনতা, অগ্রণী, বাংলাদেশ কৃষি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতা দিয়ে থাকে। তাই বর্ধিত এ ঋণ সুবিধা এসব ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়ার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সুদমুক্ত ঋণ দিতে যে ১৫ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হতো, সেটা সরকারের বাজেট থেকে সংস্থান করা দুঃসাধ্য হতো। তবে সরকারকে একবারই এ অর্থ দিতে হতো না। তাই ঋণ বিতরণের সম্ভাব্য আবেদনের সংখ্যার ভিত্তিতে এর পরিমাণ নির্ধারণ করা যুক্তিযুক্ত ছিল না। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে এ বিষয়ে আলোচনাই বৃথা। কারণ অর্থ বিভাগ বিকষয়টি তাদের কাজ নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে। জানা গেছে, বর্তমানে সোনালী ব্যাংকে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২ লাখ টাকা এবং অগ্রণী ব্যাংকে ৩ লাখ টাকা করে গৃহনির্মাণ ঋণের সুবিধা চালু রয়েছে।