Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

ভারতের টিকা সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে রফতানি হয়েছে

আমার সংবাদ ডেস্ক

এপ্রিল ১, ২০২১, ০৯:৫৫ এএম


ভারতের টিকা সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে রফতানি হয়েছে

মহামারি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সবচেয়ে বড় উৎপাদন কেন্দ্র হচ্ছে ভারত। দেশটিতে এ ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন এ পর্যন্ত টিকা সরবরাহ বা রফতানি হয়েছে ছয় কোটি ডোজ। এর মধ্যে ১ কোটি ২ লাখ ডোজ শুধু বাংলাদেশই পেয়েছে। 

কোভিশিল্ড ব্র্যান্ডের টিকাটি এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৭৬টি দেশে রফতানি করেছে ভারত। এর মধ্যে কিছু টিকা পাঠানো হয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর টিকা ভাগাভাগির প্লাটফর্ম কোভ্যাক্সের মাধ্যমে। কিছু পাঠানো হয়েছে শুভেচ্ছা হিসেবে। তবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতেই পাঠানো হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

চলতি বছরের শুরুতেই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ছয় মাসে বাংলাদেশে মোট ৩ কোটি ডোজ টিকা রফতানি করার কথা ভারতের। এ চুক্তি অনুযায়ী ওই মাসেই দেশে আরো ৫০ লাখ ডোজ টিকা আমদানি করা হয়। এরপর ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ২০ লাখ ডোজ। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সে সময় আরো ৩০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল। এছাড়া মার্চের কিস্তিতে প্রদেয় টিকা এখনো হাতে পায়নি বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের ভারতের কাছ থেকে এ বিপুল পরিমাণ টিকা ক্রয়ের পেছনে বাণিজ্যিক ভিত্তি ও চাহিদাকেই মুখ্য কারণ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক ডা. বে-নজির আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা তিন কারণে সবচেয়ে বেশি পেয়েছি। প্রথমত, ভারতের কাছে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। দ্বিতীয়ত, আমরা টিকা ক্রয় বাবদ প্রদেয় অর্থ আগেই পরিশোধ করে দিয়েছি। তৃতীয়ত, প্রধানমন্ত্রীর ইমেজও এক্ষেত্রে বেশ কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। একই সঙ্গে অন্যান্য দেশের লোকসংখ্যা কম। তাদের টিকার প্রয়োজনও হয় কম। সে অনুপাতে আমাদের দেশে টিকার চাহিদা বেশি।

এর বাইরেও উপহার হিসেবে ভারতের কাছ থেকে আরো ৩২ লাখ ডোজ কোভিশিল্ড টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে চলতি বছরের শুরুতেই উপহার হিসেবে পাওয়া গিয়েছে ২০ লাখ ডোজ। এছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে আসার সময়ে উপহার হিসেবে নিয়ে আসেন আরো ১২ লাখ ডোজ টিকা।

তবে এ মুহূর্তে ভারত থেকে করোনার টিকা সরবরাহের বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। দেশটিতে বর্তমানে কভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাব আবারো মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় বহির্বিশ্বে টিকার জোগান দেয়া এক প্রকার বন্ধ রেখেছে ভারত। তবে এর মধ্যেও সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদির সফর চলাকালে বাংলাদেশকে করোনার টিকা উপহার দিয়েছে দেশটি। এছাড়া ওশেনিয়া মহাদেশের দ্বীপদেশ ফিজির কাছেও গতকাল উপহার হিসেবে প্রায় ১ লাখ টিকা হস্তান্তর করেছে নয়াদিল্লি।

দেশে কভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাব রোধে চলমান টিকাদান কর্মসূচিতে এখন শুধু ভারত থেকেই আমদানীকৃত টিকা ব্যবহার হচ্ছে। এ টিকার ওপর ভিত্তি করে ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে সরকার। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত দেশে মোট ৫৩ লাখ ১৯ হাজার ৬৭৯ জন এ টিকা গ্রহণ করেছেন। অন্যদিকে এ টিকা নিতে এখন পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ৬৭ লাখ ৪৪ হাজারের বেশি।

আটলান্টিক কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের কাছ থেকে করোনার টিকা গ্রহণের দিক থেকে বাংলাদেশের পরের অবস্থানে রয়েছে মরক্কো। এ পর্যন্ত সেখানে সব মিলিয়ে মোট ৭০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করেছে নয়াদিল্লি।

মূলত প্রতিবেশী দেশগুলোতেই টিকা বেশি পরিমাণে রফতানি করেছে ভারত। দেশটি থেকে সেরামের টিকা আমদানির দিক থেকে প্রতিবেশী মিয়ানমার ও নেপাল রয়েছে যথাক্রমে চতুর্থ ও ষষ্ঠ স্থানে। এর মধ্যে মিয়ানমারে ৩৭ লাখ ডোজ কোভিশিল্ড পাঠিয়েছে ভারত। অন্যদিকে নেপাল কিনেছে ২০ লাখ ডোজ।

যুক্তরাজ্য এ পর্যন্ত ভারতের কাছ থেকে ভ্যাকসিন কিনেছে মোট ৫০ লাখ। নয়াদিল্লির কাছ থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের দিক থেকে দেশটির অবস্থান তৃতীয়। এছাড়া সৌদি আরবে ৩০ লাখ ও দক্ষিণ আফ্রিকায় ১০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন রফতানি করেছে ভারত।

আমারসংবাদ/এমএস