Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভুল, প্রণোদনার ঋণ পাচ্ছে না পর্যটন শিল্প

আমার সংবাদ ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১, ০৪:০৫ এএম


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভুল, প্রণোদনার ঋণ পাচ্ছে না পর্যটন শিল্প

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন শিল্পোদ্যোক্তাদের ৪ শতাংশ সুদে এক হাজার কোটি টাকা ঋণ সুবিধা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রজ্ঞাপনের ভুলে নির্দেশনা দেওয়ার প্রায় আড়াই মাস পরও সেই ঋণ সুবিধা পাননি পর্যটন শিল্পের উদ্যোক্তারা। পর্যটন কেন্দ্রগুলো চালু হওয়ার পর বেশিরভাগ উদ্যোক্তা অর্থের অভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন-ভাতা দিতে পারছেন না। ফলে অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলছেন। গত ১৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর করার কথা বলা হয়। এরপর একজন পর্যটন উদ্যোক্তাও এ ঋণ সুবিধা পাননি। সংশ্নিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর পর্যটন খাতে শুধু হোটেল-মোটেল ও থিম পার্কের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দিতে এ ঋণ সুবিধার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর বাইরে রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, পিকনিক স্পট, ট্যুর অপারেটর, ট্যুর গাইডসহ পর্যটনের অনেক খাত, উপখাতকে পরিপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে ব্যাংকগুলো এসব খাতে ঋণ দিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে। এ সংশয় থেকে এসব খাতকে অন্তর্ভুক্তি করা জরুরি বলে বাদ পড়া সংগঠনগুলো ১৮ জুলাই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করে। বাংলাদেশ ব্যাংক হতে পুনরায় সংশোধিত পরিপত্র জারি করার বিষয়ে তারা জোর সুপারিশ করেন। এরপর ট্যুরিজম বোর্ড থেকে তাদের আবেদন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু এখনও সেই ঋণ সুবিধা কার্যক্রম শুরু হয়নি।

ট্যুরিজম রিসোর্ট ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ট্রিয়াব) সভাপতি খবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনাভাইরাসে শুধু রিসোর্টগুলোর ক্ষতি হয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। সাড়ে তিন লাখ লোক প্রত্যক্ষভাবে এ কাজের সঙ্গে জড়িত। বিনোদন কেন্দ্রগুলো চালু হওয়ার পর অনেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছেন না। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ঋণ সুবিধা সহজ শর্তে দ্রুত দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

গত বছর করোনার শুরু থেকে সবচেয়ে বেশি সময় বন্ধ ছিল পর্যটন শিল্প। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাতের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পর্যটন। এ খাতের স্থবিরতায় লোকসান হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। আর চাকরি হারিয়েছে কয়েক লাখ মানুষ। বিনা বেতনেও কাজ করেছে হাজার হাজার কর্মচারী। ব্যবসায়ীরা এ খাতে বিনিয়োগ করেছেন হাজার হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার কম সুদে ঋণ সুবিধার ঘোষণা দেওয়ার পরও ঋণ পাচ্ছেন না উদ্যোক্তারা। প্রজ্ঞাপনের জটিলতা কাটার পরও ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইডসহ কয়েকটি সংগঠনকে ব্যাংকগুলোর কঠিন শর্ত পূরণে হিমশিম খেতে হবে। সম্প্রতি অন্যান্য খাতে প্রণোদনার ঋণ নিয়ে নয়ছয় হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যেসব ব্যবসায়ীর সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভালো যোগাযোগ তারাই এ সুবিধা পেয়েছেন। অনেকে এ সুবিধা নিয়ে নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেছেন। তবে পর্যটন খাতে ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের প্রণোদনার ঋণ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, পর্যটন শিল্প দেশের জিডিপিতে অনেক বড় ভূমিকা রাখে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এ খাতে ঋণের মোট সুদের হার হবে ৮ শতাংশ। এর মধ্যে উদ্যোক্তাকে দিতে হবে ৪ শতাংশ। সরকার ভর্তুকি হিসেবে দেবে ৪ শতাংশ। প্রণোদনার আওতায় উদ্যোক্তারা এক বছর এ ঋণ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। ঋণের মেয়াদ বাড়ানোর প্রয়োজন হলে বাড়ানো যাবে। সে ক্ষেত্রে সুদের হার ৮ শতাংশ দিতে হবে। সহজভাবে উদ্যোক্তাদের এ তহবিলের ঋণ দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা ভোগ করতে হলে ঋণ বিতরণের ১৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে।


আমারসংবাদ/ইএফ (সমকাল)