Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

১৩৫ পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্কারোপ

নিজস্ব প্রতিবেদক 

নিজস্ব প্রতিবেদক 

মে ২৫, ২০২২, ০১:৩০ এএম


১৩৫ পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্কারোপ

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী চলা আর্থিক মন্দা পরিস্থিতিতে দেশীয় পণ্যের সুরক্ষায় আমদানিকে নিরুৎসাহিত এবং রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বিলাসবহুল শতাধিক বিদেশি পণ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্কারোপ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। 

এ বিষয়ে গত ২৩ মে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন জারির পর গতকাল মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সংস্থাটি। এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ এ মু’মেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড-১৯-পরবর্তী অর্থনীতি পুনর্গঠন, বিলাসবহুল পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা ও আমদানি হ্রাসে এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে বিদেশি ফল, ফুল, আসবাব (ফার্নিচার) ও কসমেটিকস ধরনের ১৩৫টি হারমোনাইজড সিস্টেম (এইচএস) কোডধারী পণ্যের ওপর আমদানি পর্যায়ে ০-৩%-এর পরিবর্তে ২০% নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) আরোপ করা হয়েছে। গত ২৩ মে থেকে এটি কার্যকর করা হয়েছে বলে এতে জানানো হয়।

পণ্যগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে : আমদানি করা বিস্কুট, চকোলেট, বিভিন্ন জাতের ফল, জুস, বিদেশে তৈরি পোশাক, ফার্নিচারের জন্য বাঁশ, পার্টস, রাটান, বিভিন্ন উপাদান, প্লাস্টিকের ফার্নিচার, কাঠের ফার্নিচার, অফিস-রান্নাঘর-শোবারঘরে ব্যবহূত কাঠের ফার্নিচার, বিভিন্ন মেটাল ফার্নিচার, পারফিউম, বিউটি ও মেকআপ প্রিপারেশন, দাঁতের ফ্লস, দাঁতের পাউডার, প্রি-শেভ ও আফটার শেভ কসমেটিকস, স্যান্ডস্টোন, কাসাভা স্ট্রেচ, বিভিন্ন ধরনের টক-জাতীয় ফল, ভুট্টার গুঁড়া, ক্যানে সংরক্ষিত ফল, বিভিন্ন ধরনের বাদাম। 

এছাড়া আপেল, আম, কাঁঠাল, পেঁপে, আঙুর, আনারস, চেরি, এপ্রিকোট, পিয়ার্স, পেয়ারা, অ্যাভোকাডো, ডুমুর— এসব ফল শুকনো, প্যাকেটজাত ও ক্যান এই করের অন্তর্ভুক্ত। বিভিন্ন ধরনের আর্টিফিশিয়াল, ব্লিচড ও বিদেশি ফুল ইত্যাদি পণ্যে ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্কারোপ করা হয়েছে।

সাম্প্রতিককালে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে বিশ্ববাজারে জ্বালানি, ভোগ্যপণ্য, কাঁচামাল ও জাহাজ ভাড়া বেড়েছে। এতে চলতি অর্থবছরে আমদানি খরচ অনেক বেড়ে যায়; কিন্তু রপ্তানি সে হারে বাড়েনি। উপরন্তু কমেছে প্রবাসী আয়। ফলে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছে, তা দিয়ে ব্যয় মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে প্রতি মাসেই গড়ে ১০০ কোটি বা এক বিলিয়ন ডলার কমছে রিজার্ভ থেকে।

 পাশাপাশি আছে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ। এমন পরিস্থিতিতে রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে সরকার এ পদক্ষেপ নেয়। ফলে বিলাসি এসব পণ্যে বাড়তি মূল্য যুক্ত হলে একদিকে যেমন দেশীয় ভোক্তারা পণ্য ক্রয়ে নিরুৎসাহিত হবেন এবং দেশীয় পণ্যে ঝুঁকবে, যে কারণে রিজার্ভ থেকেও ব্যয় মেটানোর প্রয়োজন পড়বে না। অপরদিকে দেশীয় পণ্যে ঝোঁকার ফলে সেসব পণ্য উৎপাদনে উৎসাহী হবেন দেশীয় উদ্যোক্তারা। এতে সরকারের রাজস্ব আয়ের সুযোগ তৈরি হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ফুল ও ফল চাষে যথেষ্ট সমৃদ্ধশালী— এমনটা জানিয়ে বলা হয়, এই শুল্কারোপের ফলে দেশীয় ফুল ও ফলচাষি ন্যায্য মূল্য পাবেন এবং চাষে উৎসাহিত হবেন। এতে আমদানিনির্ভরতা কমবে। এনবিআর বলছে, সাময়িকভাবে এ শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত এই নির্দেশনা বহাল থাকবে। তবে ইচ্ছা করলে বাস্তবতার আলোকে সরকার মেয়াদ আরও বাড়াতে পারে। 

এ বিষয়ে রাজস্ব বোর্ডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ এ মুমেন বলেন, ফার্নিচার ও কসমেটিকসে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্কারোপের ফলে বিদেশি পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশীয় শিল্প বিকশিত হবে। এছাড়াও এ ধরনের পণ্যের অপ্রয়োজনীয় আমদানি নিরুৎসাহিতকরণের মাধ্যমে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় এবং সরকারের রাজস্ব আহরণে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।
 

Link copied!