Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

প্রায় তিন লাখ কোটি টাকা বাণিজ্য ঘাটতি

রেদওয়ানুল হক

জুলাই ৪, ২০২২, ০৯:১৭ পিএম


প্রায় তিন লাখ কোটি টাকা বাণিজ্য ঘাটতি

রেকর্ড রপ্তানির পরও বিশাল বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে দেশ। বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮১ কোটি ডলার। দেশীয় মুদ্রায় হিসাব করলে এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় তিন লাখ কোটি টাকা। 

সোমবার (৪ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের (ব্যাল্যান্স অব পেমেন্ট) যে হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে এ তথ্য উঠে এসেছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনা মহামারি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকেই আমদানিতে জোয়ার বইছে। আর এতে আমদানি-রপ্তানির মধ্যে ব্যবধান বা বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েই চলেছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আমদানির লাগাম টেনে ধরা। যে করেই হোক এটা করতে হবে। তা না হলে সংকটে পড়বে অর্থনীতি। 

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম আমার সংবাদকে বলেন, অব্যাহত বাণিজ্য ঘাটতি মুদ্রার বিনিময় মূল্য ও মূল্যস্ফীতির উপর বড় প্রভাব ফেলছে। এটি যে করেই হোক টেনে ধরতে হবে। এ ক্ষেত্রে যেসব পণ্য কাঁচামাল হিসেবে আসছে তার কমানো যাবে না। তবে ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে কোনটি কমানো যায় তা খুঁজে বেড় করতে হবে। এ ছাড়া শুধু পোশাক খাতের উপর নির্ভর না করে রপ্তানি বাণিজ্যে বৈচিত্র আনতে হবে।  

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত পণ্য বাণিজ্যে বাংলাদেশের ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮১ কোটি ডলার। ডলারের বিনিময় মূল্য ৯৩ টাকা ৪৫ পয়সা হিসাবে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৯১৯ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৭০ কোটি ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরের পুরো সময়ে (১২ মাস) বাণিজ্য ঘাটতি ছিল দুই হাজার ২৮০ কোটি ডলার।

পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যায়, বিদায়ী অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত সময়ে রপ্তানি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৯৮ শতাংশ। অন্যদিকে আমদানি বেড়েছে ৩৯ দশমকি শূন্য ৩ শতাংশ। আলোচিত ১১ মাসে রপ্তানি থেকে দেশ আয় করেছে ৪ হাজার ৪৫৮ কোটি ডলার। পণ্য আমদানির পেছনে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ৫৪০ কোটি ডলার। আমদানি ব্যয় থেকে রপ্তানি আয় বাদ দিলে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় তিন হাজার ৮১ কোটি ডলার।
আলোচিত সময়ে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতিও বেড়েছে। বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে সেবা খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ৮৮১ কোটি ডলার। অন্যদিকে সেবা খাতে দেশের ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ২৩৪ কোটি ডলার। সেবা খাতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩৫২ কোটি ডলার। আগের ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতি ছিল ২৫৩ কোটি ডলার।

এর ফলে চলতি হিসাব ভারসাম্যে (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স) বড় ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে এই ঘাটতির (ঋণাত্মক) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭২৩ কোটি ডলার। আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে একই সময়ে ঘাটতি ছিল ২৭৮ কোটি ডলার।

এছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে সামগ্রিক লেনেদেনে (ওভার অল ব্যাল্যান্স) ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৩০ কোটি ডলার। যা গত ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে এই সূচকে ৮৫১ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল।

আরএইচ/ইএফ

Link copied!