Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

আশার বাণী শুনিয়ে বিদায় নিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র

মো. মাসুম বিল্লাহ

অক্টোবর ৫, ২০২২, ১২:২৮ এএম


আশার বাণী শুনিয়ে বিদায় নিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র

ডলার সংকট, রিজার্ভের অবনমন, মূল্যস্ফীতির চাপ আর ব্যাংকিং খাতে চরম অস্থিরতার মধ্যেও আশার বাণী শুনিয়ে বিদায় নিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর)  বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি জীবনের শেষ কর্মদিবসে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও অর্থনীতির নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন চার বছরের অধিক সময় মুখপাত্রের দায়িত্ব থাকা অভিজ্ঞ এ ব্যাংকার ।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক সংকটের কারণে বিশ্বব্যাপী ডলারের সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে আমরাও কিছুটা চাপে আছি।   তবে আমদানি কমিয়ে চাপ সামাল দেওয়ার যে চেষ্টা চলছে তা স্থায়ী সমাধান নয় বলে মনে করেন বিদায়ী মুখপাত্র।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, বৈশ্বিক চাপ সামাল দিতে রপ্তানি বৃদ্ধিতে জোর দিতে হবে। সেক্ষেত্রে বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশকে ব্রান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার কোন বিকল্প নেই। সে জন্য তৈরি পোশাকের পাশাপাশি অন্য পণ্য রপ্তানিতে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পোশাকের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। কিন্তু পোশাকের প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ কাঁচামাল বিদেশ থেকে আনতে হয়। যে কারণে এর পুরো সুবিধা বাংলাদেশ গ্রহণ করতে পারছে না। এজন্য বাংলাদেশকে এমন একটি ব্রান্ড তৈরি করতে হবে, যে পণ্যের কাঁচামাল বিদেশ থেকে আনতে হয় না। সেটা চামড়া শিল্পও হতে পারে।

ডলার বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে ডলারের দাম স্বাভাবিক হচ্ছে।  এছাড়া এবিবি ও বাফেদাও ভূমিকা রাখছে। ফলে বর্তমানে বাজার ভিত্তিতে ডলার মার্কেট চলে। এতে করে ডলারের অস্থিরতা কিছুটা কমেছে।

রিজার্ভ কমার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রিজার্ভ কমেছে ডলার বিক্রিতে এটা সত্য কিন্তু রিজার্ভ তো বিভিন্ন কাজে লাগাতে হবে। বাড়বে কমবে এটাই স্বাভাবিক। এক জায়গায় যে রিজার্ভ স্ট্যাবেল রাখতে হবে এমনও না।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রিজার্ভ থেকে ইডিএফ ফান্ডে যে ঋণ দেয়া হয়েছে তার উদ্দেশ্য ঠিক ছিলো। এটি নিয়ে যদি কেউ ফেরত না দেয় সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর ব্যবস্থা নিবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের রেমিট্যান্স কিছুটা কমছে। পাশাপাশি রপ্তানি আয়ের পরিমাণও কমছে। এতে রিজার্ভে কিছুটা চাপ তৈরি হয়েছে। তবে এই চাপ থাকবে না, কারণ ভবিষ্যতে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় দুটোই বাড়বে।

মো. সিরাজুল ইসলাম ৩৪ বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনের পর  মঙ্গলবার অবসরে গেছেন। তিনি ১৯৮৮ সালে সহকারী পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ, এক্সপেন্ডিচার ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট, ইইএফ ইউনিট এবং সিলেট ও রংপুর অফিসে দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্বাহী পরিচালক সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২২ জুন থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

সিরাজুল ইসলাম ৫ অক্টোবর ১৯৬৩ সালে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকালে তিনি ভারত, বেলজিয়াম ও পাকিস্তান সফর করেন।

ইএফ

Link copied!