Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

শিক্ষার্থীদের সাঁতার শেখান হবে

এপ্রিল ৮, ২০১৫, ১০:১৮ এএম


শিক্ষার্থীদের সাঁতার শেখান হবে

 নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্কুল, কলেজে ও মাদ্রাসায় সাঁতার শেখান হবে। নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রমে সাঁতার প্রশিক্ষণ ও অনুশীলন যুক্ত করে একটি পরিপত্র জারি করেছে সরকার।শিক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার এ পরিপত্র প্রকাশ করে।
এর আগে এ সংক্রান্ত একটি খসড়া পরিপত্র মতামত নেওয়ার জন্য প্রকাশ করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে পরিপত্রটি চূড়ান্ত করে এখন প্রকাশ করা হয়েছে।


পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০’ অনুযায়ী ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা পাঠ্য বিষয় হিসেবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে সাঁতারকে অন্যতম একটি ক্রীড়া হিসেবে গণ্য করার পাশাপাশি জীবন রক্ষাকারী কৌশল চর্চা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ৫ থেকে ১৭ বছরের ছেলে মেয়েদের ওপর পরিচালিত ইউনিসেফের এক জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ জন এবং প্রতি বছরে প্রায় ১৮ হাজারের বেশি ছেলেমেয়ে সাঁতার না জানার কারণে ডুবে মারা যায়। তাই সরকার এখন থেকে দেশের সব উচ্চ মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সমমানের মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সাঁতার প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে পরিপত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘শিক্ষার্থী তথা আগামী প্রজন্মকে জীবন রক্ষাকারী কৌশল চর্চায় সক্ষমতা অর্জনে দেশের সকল উচ্চ মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সমমানের মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাঁতার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।’


সাঁতার প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের পুকুরে বা জলাশয় স্বাস্থ্যসম্মত ও সাঁতার উপযোগী করতে হবে জানিয়ে খসড়ায় বলা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নিকটবর্তী হাজা-মজা পুকুর বা জলাশয়গুলো ব্যবহার উপযোগী করার জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর প্রয়োজনীয় সংস্কারের ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজনে জেলা ও উপজেলা পরিষদের সহযোগিতা নেওয়া যাবে।


সাঁতার প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আবশ্যিকভাবে লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। লাইফ জ্যাকেটের পাশাপাশি সাঁতার প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনে দেশীয় প্রচলিত সরঞ্জাম ব্যবহার করা যাবে বলেও খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে।
‘সাঁতার প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের সময় সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) অথবা সাঁতার প্রশিক্ষকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। সহশিক্ষার ক্ষেত্রে ছেলে ও মেয়েদের সাঁতার প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের জন্য ভিন্ন সময় নির্ধারণ করতে হবে।’
পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুকুর নেই এ ধরনের প্রতিষ্ঠানকে পার্শ্ববর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পুকুর বা জলাশয় ব্যবহারের সুযোগ দিতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো সমস্যা দেখা দিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তা সমাধান করবেন।
‘মহানগরীর যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুকুর বা উপযুক্ত জলাশয়ের ব্যবস্থা নেই তাদের মহানগরীর কলেজ বা বিশ্ববিদ্যায়, জাতীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্স বা অন্যান্য যে কোনো প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান সাঁতার প্রশিক্ষণ সুবিধা ব্যবহার করে কার্যক্রমটি পরিচালনার সুযোগ দিতে হবে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন সাঁতার অবকাঠামো ব্যবহারে প্রয়োজনীয় সহযোগীতা দিতে পারে।’


পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা সহকারী শিক্ষকের (শারীরিক শিক্ষা) সহায়তা যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন ও এ সংক্রান্ত মাসিক প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে (মহানগরীর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে) দাখিল করবেন।

সব অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি), ইউএনও ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে সাঁতার প্রশিক্ষণ ও চর্চার বিষয়টি তদারকি করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালকের কাছে প্রতিবেদন করবে বলেও পরিপত্রে বলা হয়েছে। মাউশি তিন মাস পর পর এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাবে।