নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ২৫, ২০২০, ০৯:৩০ এএম
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের কারণে বাতিল করা অষ্টম শ্রেণির জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার সনদ দেবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডগুলো।
বুধবার (২৫ নভেম্বর) এক ভার্চ্যুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে একথা জানান তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অষ্টম শ্রেণির সনদ বোর্ড যেভাবে দেয় সেভাবেই দেবে। করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো গত ১৭ মার্চ থেকে দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়ে আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই কারণে এবছরের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা বাতিল করা হয়। পরীক্ষা বাতিল করে নিজ বিদ্যালয়ে মূল্যায়ন করে তাদের সবাইকে পরবর্তী ক্লাসে তুলে দেওয়া হবে। অষ্টমের এই সমাপনীতে সারাদেশে প্রায় ২০ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
আরো পড়ুন: ২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পেছাচ্ছে
এদিকে ডিসেম্বরের মধ্যেই ২০২০ সালের এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে এসএসসি’র ফলাফলকে ৭৫ আর জেএসসি’র ফলাফলকে ২৫ ভাগ হিসাব করে এ ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
আরো পড়ুন: এইচএসসির ফলাফলের বিষয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী
গত ১ এপ্রিল এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল, যাতে অংশ নেয়ার কথা ছিল প্রায় ১৪ লাখ পরীক্ষার্থীর। কিন্তু দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়ায় ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও আটকে যায়। আটকে যাওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা চিরাচরিত নিয়মে না নিয়ে এসব শিক্ষার্থীর অষ্টম শ্রেণির সমাপনী এবং এসএসসি’র ফলাফলের গড় করে এইচএসসি’র ফল নির্ধারণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
আরো পড়ুন: স্কুলে ভর্তির পদ্ধতি জানালেন শিক্ষামন্ত্রী
চলমান করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই সময়ে মাধ্যমিক পর্যায়ে ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন ডাকেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দেশে করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে এবার লটারি পদ্ধতির মাধ্যমে প্রতি শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়েছে। অবশ্য আগে বিকল্প পদ্ধতি নেয়ার কথা ভেবেছিলাম। এর মধ্যে স্বাভাবিক নিয়মে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার কথা ভাবলেও করোনার এই সময়ে এটি করতে চাইনি।
তিনি বলেন, প্রথমত, স্বাভাবিক নিয়মে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু করোনার এই সময়ে এটি করতে চাচ্ছি না। এমসিকিউ পদ্ধতির কথাও চিন্তা করেছি, কিন্তু তাতেও ঝুঁকি থাকে। দ্বিতীয়ত, অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা। তবে সব ভর্তিচ্ছুদের পক্ষে এটা সম্ভব হবে না। তৃতীয়ত, লটারির মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে এনে ভর্তি পরীক্ষার নেয়ার বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বাধ্য হয়েই এ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
মন্ত্রী আরো বলেন, এবার ভর্তি কার্যক্রমে কিছু পরিবর্তন আসছে। এবার ক্লাস্টারে ৫টি স্কুলকে পছন্দ দেবার সুযোগ পাবে ভর্তিচ্ছুরা। এছাড়াও রাজধানীতে ক্যাচমেন্ট এরিয়া ৪০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০২১ শিক্ষাবর্ষে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দুই মাস পেছাতে পারে। কারণ পরীক্ষার আগে আমরা অন্তত তিন মাস সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে চাই।
দীপু মনি আরও বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই ২০২০ সালের এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হবে। কবে থেকে আবার ক্লাস শুরু হবে তা নির্ভর করছে পরিস্থিতির ওপর। যখনই ক্লাস শুরু হবে শুরুর দিকে বেশ কিছু স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে সবাইকে। সেক্ষেত্রে হয়তো সবার সব দিন ক্লাস নাও হতে পারে। তবে এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষার্থীদের ক্লাসে জোর দেওয়া হবে বেশি। তাদের হয়তো একদিন বাদে বাকি সব দিনই ক্লাস নেওয়া হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহাবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক গোলাম ফারুক, বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।
আমারসংবাদ/জেআই