Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

ঘরের কোণে আসিফের মিনি রোবটিক্স কর্ণার

নভেম্বর ২৯, ২০২০, ০৯:২০ এএম


ঘরের কোণে আসিফের মিনি রোবটিক্স কর্ণার

করোনাকালে গৃহবন্দী হয়ে আছেন বাংলাদেশের সকল শিক্ষার্থীরা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাও এর ব্যতিক্রম নন। তবে, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের তুলনায় বেশি হতাশাগ্রস্ত সময় কাটাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে শুধু পড়াশোনা নয়, বন্ধুদের সাথে আড্ডা, সহশিক্ষা কার্যক্রম, বিভাগ সংশ্লিষ্ট ক্লাবসহ অনেক কাজে জড়িয়ে থাকেন তারা। বাসায় বসে অলস সময় কাটানোয় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।

অনেকেই এক-দুটি সেমিস্টারের জন্য সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন না। করোনা কেড়ে নিয়েছে চলমান জীবনের গতি, চাঞ্চল্যতা। আজ আমরা হাবিপ্রবি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের আসিফের সাথে কথা বলবো যিনি করোনাকালে নিজের ঘরকে পরিণত করেছেন ছোটখাটো একটি রোবোটিক্স ক্লাবে। যেখানে তাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বাবা এবং স্কুল শিক্ষিকা মা। 

আসিফের সাথে কথা বলেছেন হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির দৈনিক আমার সংবাদ প্রতিনিধি যোবায়ের ইবনে আলী। 

কি কি কম্পোনেন্ট আছে আপনার কাছে? 
আসিফ: প্রোজেক্ট এর উপরে ভিত্তি করে একেক প্রোজেক্ট এর জন্য এক এক কম্পোনেন্ট প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু কিছু গুরুত্বপূর্ণ কম্পোনেন্ট আছে যেগুলো সকল প্রোজেক্ট এ প্রয়োজন পড়ে। আমি বর্তমানে রোভার নিয়ে কাজ করছি তাই আমার অর্ডিনো, ব্রেডবোর্ড, ব্যাটারী, মোটর, মোটর ড্রাইভ, বিভিন্ন ধরনের সেন্সরস,মাল্টিমিটার সল্ডেরিং আয়রন এসব আমার সর্বদা প্রয়োজন।

এ সবের পিছনে কি রকম খরচ হয়?
আসিফ: রোবোটিক্স প্রচুর ব্যায়বহুল এটি বলার অপেক্ষা রাখে না। তারপরও যদি একটা সামান্য সংখ্যা বলতে হয় তাহলে আমি বলবো একটি প্রকৃত রোবোটিক্স প্রোজেক্ট করতে সর্বনিম্ন ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লাগতে পারে ।

এখানে কোন কোন রিলেটেড জ্ঞান থাকা জরুরী?
আসিফ: রোবোটিক্সে সকল ধরনের জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। কিন্তু মেকানিক্যাল, ইলেক্ট্রিকাল, ইলেকট্রনিক্স, প্রোগ্রামিং, ডিজাইন এবং কমিউনিকেশন সম্পর্কিত জ্ঞান বেশি দরকার পড়ে।

[media type="image" fid="99266" layout="left_half" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

কবে থেকে এসবের প্রতি টান?
আসিফ: ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন জিনিস দেখে অনেক আশ্চর্য হতাম। কিভাবে এসব যন্ত্র কাজ করে তা আসলেই আমাকে অনেক ভাবাতো। ছোটবেলায় তাই খেলনা গাড়ি থেকে শুরু করে আরো বিভিন্ন যন্ত্র হাতে পেলেই খুলে ফেলতাম। ধীরে ধীরে ছোটখাটো অনেক কিছুই বানাতে থাকলাম। এখন বর্তমানে হাবিপ্রবিতে সপ্নের বিষয় মেকানিক্যাল নিয়েই পড়াশুনা করছি যা আমাকে রোবোটিক্স এর যাত্রাটা অনেক সহজ করে দিয়েছে।

বাড়ি থেকে কি রকম সহায়তা পাচ্ছেন?
আসিফ: আমি নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি যে আমার পরিবার আমাকে এই কাজে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করে। যদিও ছোটবেলায় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট করার দায়ে অনেক মার খেয়েছি। তাদের বুঝতেও কিছুটা সময়  লেগেছে। কিন্তু এখন আমি আমার পরিবার এর কাছে সম্পূর্ণ সহযোগিতা পাই।

সহপাঠী না থাকায় কি কি সমস্যা হচ্ছে?
আসিফ: রোবোটিক্স হলো ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সকল শাখার সংমিশ্রণ। তাই রোবোটিক্সে টিম ওয়ার্ক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো একটি শাখা বাদ দিয়ে কখনো রোবোটিক্স নিয়ে আগানো সম্ভব না। তাই এই করোনা পরিস্থিতিতে অনেক চ্যালেন্জ এর সম্মুখীন হতে হয়েছে। অনেকবার থামতে হয়েছে। প্রতিবারই কথাও আটকে গেলে বন্ধুদের সাথে আলাপ করি কিভাবে তা সমাধান করা যায় তা নিয়ে কথা বলি। এভাবে একসাথে সমস্যাগুলো সমাধান করি।
 
যারা বাসায় বসে আছে তাদের জন্য পরামর্শ কি?
আসিফ: যদিও এই পরিস্থিতিতে রোবোটিক্স নিয়ে কাজ করা তা অনেক চ্যালেঞ্জিং তারপরও আমরা কিছু কিছু জায়গাতে এগিয়ে যেতে পারি। শেখার অনেক ভালো সময় এটা তাই আমি বলবো যে রোবোটিক্স এর যেই স্কিল গুলো আমাদের দরকার হয় আমরা যদি এই সময়টায় সেগুলতে পারদর্শী হতে পারি তাহলে আমরা অবশ্যই ভবিষ্যতে এগিয়ে থাকবো। 

আমারসংবাদ/কেএস