Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানাতে হবে ঢাবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে’

জানুয়ারি ২৮, ২০২১, ০৮:২০ এএম


‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানাতে হবে ঢাবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে’

কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের সমন্বয়ক (ফোকাল পয়েন্ট) অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেছেন, ‘সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের অবস্থা এমন হয়েছে যে, পরীক্ষা নিলেও অভিযোগ, না নিলেও অভিযোগ আসছে। পরীক্ষা আগে নিলেও দোষ, আবার পরে নিলেও দোষ। এসব অভিযোগ থাকবেই। আসলে সব কিছু চাহিদামতো ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানাতে হবে ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে।’

বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি দৈনিক আমার সংবাদকে এসব কথা বলেন।

মঙ্গলবার  (২৬ জানুয়ারি) অনার্স তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়। ইতোমধ্যে ২৫ জানুয়ারি থেকে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। এতে বেশ বিড়ম্বনায় পড়ছেন অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার্থীর একাংশ। চলমান পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের থার্ড ইয়ারে ইম্প্রুভমেন্ট (মানোন্নয়ন পরীক্ষা) রয়েছে, নতুন রুটিন তাদের চিন্তা বাড়িয়েছে। রীতিমতো উভয় সংকটে পড়েছেন বলে অভিযোগ তাদের। 

সরকারি তিতুমীর কলেজ থেকে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা দিচ্ছেন পদার্থ বিদ্যার শিক্ষার্থী জিল্লুর রহমান। জিল্লুর বলেন, ‘৩য় বর্ষের পরীক্ষার রুটিন দেখে হতভম্ব হয়ে পড়লাম। একদিকে আমাদের ৪র্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। এর মধ্যে আবার ৩য় বর্ষের রুটিন। আমরা যারা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তাদের অনেকেরই ৩য় বর্ষের দুই তিন বিষয়ে ইম্প্রুভ আছে। এখন রুটিন মিলিয়ে দেখলাম, চলমান ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা যেদিন, তার ঠিক পর দিনই আবার ৩য় বর্ষের ইম্প্রুভ। অর্থাৎ কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে দুই ইয়ারের দুইটি সাবজেক্টের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।’

জিল্লুরের মতো আর কয়েক পরীক্ষার্থী একই অভিযোগ করেন। তারা বলেন, এভাবে প্রস্তুতিহীন পরীক্ষা দিলে ফের অকৃতকার্য হতে হবে তাদের। কারণ কঠিন বিষয়গুলোতেই তারা ফেল করেছেন আগের বার। এখন তারা অধ্যক্ষকের কাছে অভিযোগ জানাবেন, না চলমান পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করবেন?

এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সাত কলেজের সমন্বয়ক বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ কোনটা তিনি ঠিক জানেন না। তারা লিখিত অভিযোগ দিলে হয়তো বিষয়টা দেখতে পারবেন। কার কত বিষয় ইম্প্রুভ আছে সেটাও জানাতে হবে। আর একই দিনে ইম্প্রুভ আর চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা পড়ে গেলে তখন বিষয়টা দেখা যাবে। 

তিনি আরো বলেন, ‌‘আমাদেরদের তো ১৮-১৯টি পরীক্ষা নিতে হবে, তা না হলে তারা ওভারকাম করবে কীভাবে? ৩য় বর্ষের যারা নিয়মিত ছাত্র তাদের পরীক্ষা কি আটকে রাখা যাবে? হয়তো ইম্প্রুভ দিবে এক শতাংশ পরীক্ষার্থী আর বাকি ৯৯ শতাংশ হলো নিয়মিত ছাত্র, তাদের আটকে রাখা যাবে না। কিন্তু যাদের দু একটা বিষয় ইম্প্রুভ আছে, তারা যদি নির্দিষ্ট অভিযোগ করে তাহলে বিবেচনা করে দেখা যেতে পারে। আর রুটিন প্রনয়ণকারীদের এতো ফাঁক ফোকড় মেলানো কঠিন।’

সেলিম উল্লাহ খোন্দকার জানান, তাদের আরো দুই তিনটা রুটিন হয়ে যাবে কিছুদিনের মধ্যেই। মার্স্টাসের হবে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে। আর ৩য় বর্ষের শুরু হবে ফেব্রুয়ারির ২০ তারিখ থেকে। যেকোন উপায়ে পরীক্ষার জটগুলো খুলতে হবে।

দ্রুত পরীক্ষা নেওয়ার কারণ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের এই সমন্বয়ক বলেন, আবার এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়ে গেলে তারা পরীক্ষা নিতে পারবেন না। তারপর সামনে রমজান মাসের ছুটি আসছে। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, করোনার কারণে গত বছরের বকেয়া ১৯টা পরীক্ষা শেষ করতে হবে, তা না হলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করবে। সেশনজটের সমাধান চেয়ে সড়কে নামবে। এতো কিছু তো মানা যাবে না। তবে একই দিনে ৪র্থ বর্ষ ও তৃতীয় বর্ষের মানোন্নয়ন পরীক্ষা পড়ে গেলে, তার দিন পরিবর্তন করা হবে।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তিনিও কথা বলেছেন। শিক্ষার্থীরা যদি ঢাবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর সুনির্দিষ্টভাবে লিখিত অভিযোগ করে, তখন তারা হয়তো ঢাবিকে অনুরোধ করতে পারবেন। আসলে সব কিছুর সমাধান করা তো সম্ভব না। তাদের ইম্প্রুভ বা ফেল তাদের চেয়ে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। আর জুনিয়রদের বেশি প্রাধান্য দিলে সিনিয়ররা মানতে চাইবে না। পরীক্ষাও পেছাতে পারছেন না।

তিনি জানান, ২০১৭-১৮ সেশনের মার্স্টাসের ফাইনাল পরীক্ষা ফেব্রুয়ারির ২০ বা ২৪ তারিখ শুরু হতে পারে। ডিগ্রি ৩য় বর্ষ হয়তো ২০ তারিখ আর মার্স্টাস ফাইনাল হয়তো ২৪ তারিখ হবে।


আমারসংবাদ/এমএ