Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪,

পৃথিবীর বিখ্যাত দশ লাইব্রেরি

মার্চ ২৩, ২০২১, ০৭:৩৫ এএম


পৃথিবীর বিখ্যাত দশ লাইব্রেরি

বই জ্ঞানের উৎস। আর বইয়ের উৎস লাইব্রেরী। বইপ্রেমীদের কাছে লাইব্রেরী অনেকটা স্বর্গের মতো। প্রাচীনকালে যে সভ্যতাগুলো শিক্ষা সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, স্থাপত্য ইত্যাদি বিষয়ে উৎকর্ষ সাধন করেছিল তার সকল সভ্যতাতেই কিছু প্রাচীন সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার বিকশিত হয়েছিল। সে প্রাচীনকাল থেকেই সভ্যতাগুলো দেখলে বোঝা যায় যে জাতির গ্রন্থাগার যত উন্নত ছিল সেই জাতি তত উন্নত ছিল। লিখেছেন রাব্বি হাসান

আমেরিকায় ‘দ্য লাইব্রেরি অব কংগ্রেস’

[media type="image" fid="116424" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

আমেরিকার ‘লাইব্রেরি অব কংগ্রেস’ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় লাইব্রেরি। ১৯৮০ সালে স্থাপিত আমেরিকার সবচেয়ে পুরনো এ লাইব্রেরি টি ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত। প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডামস যখন সরকারি কার্যাবলি ফিলাডেলফিয়া থেকে ওয়াশিংটনে স্থানান্তর করেন তখন থেকে এর যাত্রা। সুবিশাল এ লাইব্রেরিতে রয়েছে সর্বাধিক সংখ্যক বই, রেকর্ডস, পান্ডুলিপি ও মানচিত্র। পুরনো এ লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যা ৩ কোটি ১২ হাজার ৭৫০ টি। এই গ্রন্থাগারে প্রায় ৪৭০ ভাষার ১৬৪ মিলিয়নের অধিক বই, জার্নাল ও সংবাদপত্রসহ নানা নথিপত্র সংরক্ষিত রয়েছে। এই গ্রন্থাগারের সংগ্রহশালার তাকগুলো পাশাপাশি সাজানো হয় তাহলে তা প্রায় ৫৩২ মাইল দীর্ঘ হবে। প্লেটো, নিউটন, শেক্সপিয়রের মতো প্রতিভাধরদের লেখা বই-ই শুধু নয়, তাদের পূর্ণ অবয়বের মূর্তি এই গ্রন্থাগারের বিভিন্ন তলায় সাজিয়ে রাখা আছে।

ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব চায়না

[media type="image" fid="116411" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব চায়না’ এশিয়ার সবচেয়ে বৃহৎ ও বিখ্যাত লাইব্রেরী। লাইব্রেরিটি স্থাপিত হয় ১৯০৯ সালে চীনের বেইজিংয়ে। প্রায় ১২ লাখ সাময়িকী সহ সংগ্রহে আছে ২ কোটি ৮৯ লাখ ৮০ হাজার ৭৭৭ বই। চীনা সাহিত্যর সবচেয়ে বড় সংগ্রহ আছে এ লাইব্রেরিতে। 

ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব কানাডা

[media type="image" fid="116417" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব কানাডা’ বিশ্বের ৩য় বৃহত্তম লাইব্রেরি। লাইব্রেরিটি কানাডার কেন্দ্রীয় সরকারের একটি বিভাগ। কানাডার ইতিহাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত লেখা, ছবি ও দলিলপত্র সংগ্রহ ও সংরক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত এই লাইব্রেরি। এই লাইব্রেরির সংগ্রহে রয়েছে ২ কোটি ৬০ লাখ ৬ হাজার ৫৪টি বই। 

ব্রিটিশ লাইব্রেরি

[media type="image" fid="116418" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

‘ব্রিটিশ লাইব্রেরি’ যুক্তরাজ্যের জাতীয় গ্রন্থাগার। লন্ডনে ১৭৫৩ সালে স্থাপিত লাইব্রেরীটি পৃথিবীর বিখ্যাত গবেষণা গ্রন্থাগারগুলোর একটি। রয়েছে প্রায় সব ভাষার বিভিন্ন ধরনের ১ কোটি ৫৫ লাখের বেশি সংগ্রহ। এ লাইব্রেরিতে সংগৃহীত বইয়ের সংখ্যা ২ কোটি ৩৫ লাখ। প্রতি বছর ব্রিটিশ লাইব্রেরির সংগ্রহশালায় যুক্ত হয় প্রায় ৩০ লাখ নতুন বই। প্রায় ১৩২০ বছরের পুরনো বই সেন্ট কাথবের্ট গসপেল। স্কটল্যান্ডের নর্দামব্রিয়ান চার্চের ধর্মগুরু সেন্ট কাথবের্টের মৃত্যুর পর তার সমাধিতে কফিনের সঙ্গে গসপেল বুক ক্রিশ্চিয়ান ধর্মবাণী সংবলিত বই দেওয়া হয়। নানান হাত ঘুরে বর্তমানে ব্রিটিশ লাইব্রেরিতেই রয়েছে বইটি। এই গ্রন্থাগারে রয়েছে ৬২৫ কিলোমিটার বই রাখার সেলফ। প্রতি বছর এই সেলফের দৈর্ঘ্য বাড়ে অন্তত ১২ কিলোমিটার। 

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি

[media type="image" fid="116423" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি একটি পূর্ণাঙ্গ লাইব্রেরি সিস্টেম। এটি আমেরিকার সবচেয়ে পুরনো লাইব্রেরি সিস্টেম এবং পৃথিবীর প্রাচীন একাডেমিক লাইব্রেরি সিস্টেমগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রায় ৯০টি শাখা সমন্বিত। সর্বমোট বইয়ের সংখ্যা ১ কোটি ৫০ লাখ। বই সংগ্রহের দিক দিয়ে পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম লাইব্রেরির এই হার্ভার্ড লাইব্রেরি। এই লাইব্রেরি প্রথম স্থাপিত হয় ১৬৩৮ সালে। একইসঙ্গে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি। পৃথিবীর আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এত বড় লাইব্রেরি নেই।

রাশিয়ান স্টেট লাইব্রেরি

[media type="image" fid="116416" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

‘রাশিয়ান স্টেট লাইব্রেরি’ রাশিয়ার জাতীয় গ্রন্থাগার। এটি রাশিয়ার মস্কোতে অবস্থিত। এই লাইব্রেরির কার্যক্রম শুরু ১৭৯৫ সালে। তখন রাশিয়ার জারতন্ত্র চলছে। এটি রাশিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন, বৃহত্তম ও জনপ্রিয় লাইব্রেরি। এর সংগ্রহে রয়েছে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজারের বেশি বই। এই লাইব্রেরির রয়েছে ২৭৫ কিলোমিটার বই রাখার বুকসেল্ফ। এখানে ১ কোটি ৩০ লাখ বিভিন্ন রকম গবেষণা সংরক্ষিত রয়েছে। রয়েছে সাড়ে ৩ লাখ মিউজিক রেকর্ড এবং ১ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি ম্যাপ। জারতন্ত্রের অবসানের পর ১৯২২ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত সব বইয়ের একটি করে কপি রয়েছে এই রাশিয়ান স্টেট লাইব্রেরিতে। আগে এই লাইব্রেরির নাম ছিল 'স্টেট লাইব্রেরি অব ইউএসএসআর'। ১৯২৫ সালে এই নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় 'রাশিয়ান স্টেট লাইব্রেরি।

ন্যাশনাল ডায়েট লাইব্রেরি

[media type="image" fid="116421" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

‘ন্যাশনাল ডায়েট লাইব্রেরি’ বিশ্বের অন্যতম আরও একটি বৃহত্তম লাইব্রেরি। লাইব্রেরিটি জাপানের টোকিও শহরে অবস্থিত। ১৯৪৮ সালে এটি জননীতি সংক্রান্ত গবেষণার জন্য স্থাপিত হয়। এতে আছে ১ কোটি ৪৩ লাখ ৪ হাজার ১৩৯টি বই। জাপান জুড়ে এই লাইব্রেরির ২৭টি শাখা আছে। বিজ্ঞান, ধর্ম, রাজনীতি, আইন, মানচিত্র, সংগীতসহ সব ধরনের বই এতে আছে। এই বিখ্যাত লাইব্রেরিটি অনেকটা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় লাইব্রেরি ইউনাইটেড লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের আদলে।জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সাহিত্যের এই বিশাল ভাণ্ডার ধারণ করছে জাপানের জাতীয় ঐতিহ্য।

ডয়েচে বিবলিওথিক

[media type="image" fid="116420" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

জার্মানির জাতীয় গ্রন্থাগার হলো এই ‘ডয়েচে বিবলিওথিক’। গ্রন্থশালাটি স্থাপিত হয় ১৯১২ সালে। এটির কাজ মূলত জার্মান ভাষার প্রকাশনা সংগ্রহ করা। তবে জার্মানিতে প্রকাশিত অন্য ভাষার প্রকাশনাও এখানে সংগ্রহ করা হয়। তবে পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তের বইগুলো এখানে নেই। এটি পৃথিবীর বড় লাইব্রেরিগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিখ্যাত এই লাইব্রেরির সংগ্রহে আছে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৮৭ হাজার ১০টি বই ও অন্যান্য প্রকাশনা।

ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব ফ্রান্স

[media type="image" fid="116425" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

ফ্রান্সের রাজধনীর প্যারিসে অবস্থিত ‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব ফ্রান্স’ ফ্রান্সের জাতীয় লাইব্রেরি। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৪৬১ সালে। তখন এর নাম ছিল 'রয়েল লাইব্রেরি'। এবং এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল লুভ্যর প্রাশাদে। পরবর্তীতে ১৮৬৮ সালে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় 'ইম্পেরিয়াল ন্যাশনাল লাইব্রেরি। এবং এর নতুন ভবণ নির্মাণ করা হয় ১৯৮৮ সালে। বিখ্যাত এ গ্রন্থাগারে রয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ বই। 

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি

[media type="image" fid="116419" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি’টি স্থাপিত হয় ১৭০১ সালে। একাডেমিক লাইব্রেরির মধ্যে এটি অন্যতম। লাইব্রেরিটি ২২টি আলাদা  সমন্বয়ে গঠিত। রয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখ বই। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের জ্ঞানী-গুণীদের আগমনস্থল বলা হয় ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরিকে।

আমারসংবাদ/কেএস