Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

‘রাজস্ব ফাঁকি রোধে তামাকপণ্যের স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং প্রবতর্ন জরুরি’ 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি 

অক্টোবর ৫, ২০২১, ১২:৩৫ পিএম


 ‘রাজস্ব ফাঁকি রোধে তামাকপণ্যের স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং প্রবতর্ন জরুরি’ 

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভাসিটি এর টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল এর আয়োজনে “রাজস্ব ফাঁকি রোধে তামাকপণ্যের স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং প্রবতর্নের এর প্রয়োজনীয়তা” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। 

মঙ্গলাবার (৫ অক্টোবর) সকাল ১১.০০ গুলশান লেক শোর হোটেলের সমাধান হলে জাতীয় যক্ষা নির্মূল কমিটির সভাপতি মোজাফর হোসেন পল্টুর সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন পাবনা-০১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট শামছুল হক টুক্কু, গাইবান্ধা-০১ আসনের সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী, নীলফামারী-০৩ আসনের সংসদ সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল, আর্ন্তজাতিক সংস্থা সিটিএফকের লিড কললসানট্যান্ট মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, ভাইট্রাল স্ট্রাটেজিস-এর কান্ট্রি ম্যানেজার মোঃ নাসির উদ্দিন শেখ, উবিনীগের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার এবং এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা। 

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফারহানা জামান লিজা ও সঞ্চলনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অন্যনা রহমান। 

ফারহানা জামান লিজা তার প্রবন্ধে বলেন, ৮টি ধাপে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা ও ৬৪টি উপজেলার ২৬৫টি বাজার হতে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে কমপ্লায়েন্স মনিটরিং করে। সিগারেট, বিড়ি, জর্দ্দা, গুলের মোট ১০,০৭৪ টি তামাকপণ্যের মোড়কের উপর মনিটরিং করা হয়। বিভিন্ন বাজার হতে প্রাপ্ত তামাক ও তামাকপণ্য হতে দেখা যায় সাইজের ভিন্নতা, দূর্বল মোড়কজাত-করণ, তামাক পণ্যের মোড়কে কোম্পানীর পরিপূর্ণ নাম ঠিকানা না থাকা, একই নাম ও ব্যান্ডে ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানির পণ্য বাজারজাত করা, ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের প্লাস্টিকের মোড়ক, তামাক পণ্যের মোড়কের ভিন্নতা, ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের পলি মোড়কের ব্যবহার , কাগজে প্রিন্ট করে তা মোড়কের গায়ে সেটে দেওয়া, বিড়ির জন্য পাতলা কাগজের মোড়ক, প্যাকেট বা মোড়কে উপাদান ও উৎপাদনের তারিখ না থাকা ইত্যাদি দূর্বলতা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। 

মূলত রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া ও ব্যবহারকারীকে ধোঁকায় ফেলানো জন্য এ রকম মোড়ক ব্যবহার করা হয়। তামাকপণ্যের মোড়কীকরণের এসব সমস্যা সমাধানের একমাত্র সমাধান হতে পারে স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং প্রবর্তন। 

সভাপতির বক্তব্যে মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু বলেন, মহান সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনপ্রতিনিধিদের এখন তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ শুরু করেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রশাসনিক পর্যায়ে অনেক সিদ্ধান্ত হচ্ছে তামাকের প্রসারের জন্য। যা তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার সাথে সাংঘর্ষিক। তামাক কোম্পানিতে রাষ্ট্রীয় অংশিদারিত্ব রেখে তামাকমুক্ত দেশ গড়া সম্ভব নয়।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট শামছুল হক টুকু বলেন, তামাকের চাহিদা কমাতে, আমাদের তামাকের উৎপাদন কমাতে হবে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে যা জনগণের জন্য ক্ষতিকর তা নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের কাজ। তামাক কোম্পানিগুলো নানাভাবে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। এ ফাঁকি রোধে তামাকপণ্যের স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং প্রবর্তন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। 

ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তামাকের ব্যবসা বন্ধ হচ্ছে সেখানে বাংলাদেশের নতুন তামাকের বিনিয়োগ বাড়ছে তা আমাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের দেশে তামাকের পণ্য খুব বেশি সহজলভ্য। এ কারণে আমাদের দেশের তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা খুব ধীরে ধীরে কমছে। তামাকপণ্যের স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং প্রবর্তন দেশে রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি তামাকের ব্যবহার কমবে। তামাক কোম্পানির যত বাধাই আসুক আমাদের দেশে জনগণের স্বার্থে তামাকপণ্যের স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং প্রবর্তন করতে হবে। 

রানা মো. সোহেল বলেন, তামাক উৎপাদানের সাথে জড়িতরা শক্তিশালী। তারা নানাভাবে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাধা তৈরি করবে। কিন্তু সরকার দেশকে তামাকমুক্ত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমাদের ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে হবে। তবে রাজস্ব ফাঁকি রোধে তামাকপণ্যের স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং প্রবতর্নের জরুরি হয়ে পড়েছে।

উল্লেখ্য, সেমিনারে গ্রামবাংলা, ডাস্, নাটাব, সিটিএফকে, তাবিনাজ, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের প্রতিনিধিসহ উপস্থিত ছিলেন।

আমারসংবাদ/কেএস