Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

এমপিও শিক্ষকদের ভোগান্তি, বদলিতে নেই অগ্রগতি

শিক্ষা ডেস্ক

অক্টোবর ৯, ২০২১, ০৮:৪০ এএম


এমপিও শিক্ষকদের ভোগান্তি, বদলিতে নেই অগ্রগতি

আদালতের সর্বশেষ রায়েও বলা হয়েছে এনটিআরসিএর মাধ্যমে যারা নিয়োগ পেয়েছেন বিভাগীয় পছন্দে যেন তাদের বদলির ব্যবস্থা করা হয়। এরপরও বেসরকারি এমপিএওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির অগ্রগতি না হওয়ায় নানা ভোগান্তির মুখে পড়ছেন তারা।

খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার চংড়াছড়ি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইমাম হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠান থেকে ৭০০ কিলোমিটার দূরে আমার বাড়ি। চাঁপাই নবাবগঞ্জের নাচোল থানায়। ২০১৬ সালে চাকরিতে যোগদান করি। আমি অসুস্থ মাকে দেখতে যেতে পারি না। তিনি খুবই অসুস্থ। মায়ের খরচ দিতে হয় তিন থেকে চার হাজার টাকা। আমরা মাত্র ১২ হাজার ৫০০ টাকায় জয়েন করেছি। এই অর্থে আসলে এলাকা ছেড়ে থাকাটা খুবই কষ্টকর। বাড়ি যেতে পারি না নিয়মিত। একবার গেলে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। এত টাকা কই পাবো। 

তিনি আরও বলেন, আমরা আদালতেও গিয়েছি আমাদের পক্ষে রায়ও এসেছে। নীতিমালা আছে কিন্তু কাজ হচ্ছে না। সর্বশেষ রায়েও বলা হয়েছে এনটিআরসিএর মাধ্যমে যারা নিয়োগ পেয়েছেন বিভাগীয় পছন্দে যেন বদলির ব্যবস্থা করা হয়। তারপরও আমাদের অগ্রগতি নেই।

সিরাজগঞ্জের মো. কায়দে আজম জয় লক্ষ্মীপুরের দল্টা ডিগ্রি কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তার পরিবারের সকলেই থাকেন সিরাজগঞ্জে। 

তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় মানববন্ধনে আমাদের দাবি জানিয়ে এসেছি। এখন আমরা আদালতের ওপর নির্ভর করে আছি। এক মামলায় রায় আমাদের পক্ষেই এসেছে। আরেক মামলায় রুল জারি হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, এমনও হয় যে- আমাদের পরিবারের কেউ মৃত্যুবরণ করলেও আমরা যেতে পারি না। আর অর্থনৈতিক কারণতো আছেই।

গত ২ জুন ১৩০ শিক্ষকের দায়ের করা রিটের বিপরীতে বদলির বিষয়ে পদক্ষেপের জোর দেন আদালত। এতে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে বদলি করতে পারবে।

এর আগে ২৮ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এমপিওভুক্ত শিক্ষক বদলির ব্যবস্থা রেখে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ জারি করে। 

এতে বলা হয়, এনটিআরসিএ এর সুপারিশে নিয়োগ পাওয়া এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মরত শিক্ষক/প্রদর্শক/প্রভাষকদের কোনো প্রতিষ্ঠান শূন্যপদ থাকা সাপেক্ষে সমপদে ও সম স্কেলে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের জন্য মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা প্রণয়ন করে জনস্বার্থে আদেশ জারি করতে পারবে।

এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ফৌজিয়া জাফরীন বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। খুব শিগগিরই শিক্ষকরা সুফল পাবেন। 

প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটাকে কোনভাবেই ধীরগতি বলা যাবে না। আমরা কাজ করছি।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এই কার্যক্রমটি থমকে থাকার পেছনেও বেশকিছু কারণ আছে। যেমন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো স্বতন্ত্র, আলাদা ধরন ও মানের পরিবর্তন থাকায় এটি নিয়ে একাধিকবার আলোচনা হয়েও সুফল আসেনি। এছাড়াও পরিচালনা কমিটি আলাদা শিক্ষক কর্মচারীর নিয়োগে ভিন্নতা, বেতনভাতা ও পদোন্নতি নিয়েও আলোচনার টেবিলে জটিলতা দেখা দেয়। এরপর করোনার কারণে এতে চলে আসে ধীরগতি।

আমারসংবাদ/জেআই