Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

বিশ্বসেরা গবেষক তালিকায় জাককনইবির দুই শিক্ষক  

জাককানইবি প্রতিনিধি

অক্টোবর ১৩, ২০২১, ০২:৫৫ পিএম


বিশ্বসেরা গবেষক তালিকায় জাককনইবির দুই শিক্ষক  

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক আন্তর্জাতিক সংস্থা আলপার-ডগার (এডি) বৈজ্ঞানিক সূচকের বিশ্বসেরা বিজ্ঞানী ও গবেষকদের তালিকায় স্থান পেয়েছেন। এখানে স্থান পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যে 'বিশাল অর্জন' উল্লেখ করে তাদেরকে অভিনন্দন ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান। 

সম্প্রতি এডি সাইন্টিফিক ইনডেক্স নামে আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা এ সংস্থা সারা বিশ্বের ৭ লাখেরও বেশি বিজ্ঞানীর ও গবেষকের সাইটেশান এবং অন্যান্য ইনডেক্সের ভিত্তিতে এই তালিকা প্রকাশ করেছে। 

র‌্যাংকিং করার ক্ষেত্রে বিশ্বের ২০৬ টি দেশের ১৩ হাজার ৫২৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ লাখ ৯ হাজার ৬৭৭ জন, এশিয়ার ৪৯ টি দেশের ৬৩৬০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৬২ জন, বাংলাদেশের ১৫২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭৯৬ জন গবেষকের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এ বছরসহ গত ৫ বছরের সাইটেশন আমলে নেওয়া হয়। 

এর মধ্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন শিক্ষকের প্রকাশিত আর্টিকেল, সাইটেশন এবং অন্যান্য ইনডেক্সের বিবেচনায় এ তালিকায় স্থান পেয়েছে। 

তালিকায় স্থান পাওয়া শিক্ষকরা হলেন- বিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্ভুক্ত কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। তিনি তালিকায় থাকা বাংলাদেশের গবেষকদের মধ্যে ১৩৬২ তম। কাজ করছেন ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি নিয়ে। সারাবিশ্বের গবেষকদের মধ্যে তার অবস্থান ৫ লাখ ১ হাজার ৪৪২ তম এবং এশিয়ার মধ্যে অবস্থান ১ লাখ ১৬ হাজার ১২৬ তম। এবং তালিকায় আছেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্ভুক্ত পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক মো. নুরুজ্জামান খাঁন। তিনি তালিকায় থাকা বাংলাদেশের গবেষকদের মধ্যে ১৫১ তম। কাজ করছেন মেডিকেল এন্ড হেলথ সায়েন্স নিয়ে। সারাবিশ্বের গবেষকদের মধ্যে তার অবস্থান ২ লাখ ১৯ হাজার ৮৫৮ তম এবং এশিয়ার মধ্যে অবস্থান ৩৭ হাজার ২৭ তম। 

এমন অর্জনে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে অধ্যাপক মিজানুর রহমান জানান, বিশ্বসেরা গবেষকদের ইনডেক্সে নাম পাওয়া ও পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পাওয়া গবেষক হিসাবে এটা খুবই উৎসাহজনক। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণার জন্যে খুবই অবহেলিত। বাংলাদেশের গবেষক যাদের এখানে নাম এসেছে, অধিকাংশই দেখা যাবে নিজ উদ্যোগে গবেষণা করে, বলা যায় নিজের টাকা-পয়সা খরচ করে গবেষণা করে। আমি নিজে যেমন এ বছরে কয়েকটি কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেছি, আমি নিজে আমার বেতনের টাকা দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন ফিসহ বিভিন্ন বিষয় মেইনটেইন করি। তো সেই হিসেবে, এসব কাজের জন্যে যে স্বীকৃতি বা সূচকে খুবই সামান্য হলেও নাম এসেছে এতে উৎসাহ লাগে এবং এতে আমার কাজের পরিধি আরও বাড়ানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। 

গবেষক মো. নুরুজ্জামান খাঁন জানান, তালিকায় নাম আসায় খুবই ভাল লাগছে। বিশেষ করে, আমাদের মতো বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে রিসার্চের সুযোগ-সুবিধা বলতে কিছুই নেই। এই জায়গা থেকে কাজ করে একটা ইন্টারন্যাশনাল ইনডেক্সে নাম নিয়ে আসার অনুভূতি বলার মতো না। আমি আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে রিসার্চ ও রিসার্চারদের জন্যে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবে। 

এমন অর্জনে খুশি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অন্তর থেকে আমি তাদেরকে অভিনন্দন ও শ্রদ্ধা জানাই। এটা শুধু তাদের ব্যক্তিগত বা তাদের বিভাগের নয়, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যে বিশাল অর্জন ও সুনাম বয়ে এনেছে। তাদেরকে শ্রদ্ধা জানাই। 

১৫ বছর বয়সী এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো বিজ্ঞানের নানান বিষয়ক প্রাপ্যতা কম জানিয়ে উপাচার্য আরও বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে এমন অনেক শিক্ষক পুরস্কৃত হচ্ছেন। আমাদের হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাদের এখানে বিজ্ঞানের কম ডিপার্টমেন্ট আছে, ফ্যাকাল্টি মেম্বার কম। আমাদের আমলে আনতে, সংখ্যা কম হলেও তারা সবাই ব্রিলিয়ান্ট তবে প্রায় সবারই বয়স ও অভিজ্ঞতা কম। পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয় গুলো যেখানে বিজ্ঞানের শাখা প্রশাখা বেশি ও শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা বেশি সেখানকার গবেষকরা বেশি ভাল র‍্যাংকিং করছেন। আমরা আশাবাদী, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স বাড়লে থাকবে ও ল্যাবরেটরিসহ বিভিন্ন বিষয় সমৃদ্ধশালী হবে তখন আমাদের অনেক শিক্ষকই আরও পুরস্কৃত হয়ে সুনাম বয়ে আনবেন। গবেষণার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও ফান্ড বাড়াবে ও আরও অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে। 

আমারসংবাদ/কেএস