Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে মসজিদুল হারামে কাজ করছেন আহমদ খান কান্দাল

আব্দুল্লাহ আল মামুন, সৌদি আরব 

সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১, ১১:১৫ এএম


দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে মসজিদুল হারামে কাজ করছেন আহমদ খান কান্দাল

দীর্ঘ চার দশক আগে মাত্র ২৩ বছর বয়সে সৌদি আরবে আসেন পাকিস্তানের মান্দি বাহাউদ্দিন এলাকার আহমদ খান কান্দাল পাকিস্তানি নাগরিক। তখন তার কল্পনায় ছিল না যে আগামী দীর্ঘ ৪০ বছর তিনি পবিত্র মক্কার মসজিদুল হারামে থাকবেন। বিশেষত করোনাকালের কঠিন সময়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে তিনি পবিত্র কাবায় সুনামের সাথে কাজ করে চলছেন।

বাবা-মার মৃত্যুর পর আহমদ খান মক্কা নগরী ও পবিত্র মসজিদুল হারামের ভালোবাসায় সৌদিতে থেকে যান। অনেক বছর অতিবাহিত করেন পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণে। এখন তিনি পবিত্র মসজিদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সুপারভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সৌদির নানা ঘটনার স্মৃতি ধারণ করে আছেন আহমদ খান। বিশেষত মসজিদুল হারামের প্রথম ও দ্বিতীয় সম্প্রসারণ প্রকল্প এবং কাবা পুনর্গঠন প্রকল্পের সময় সব কাজ স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেন।

সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে সৌদি গণমাধ্যম আরব নিউজকে আহমদ খান বলেন, ৪০ বছর আগে যখন সৌদিতে আসি, তখন আমার মনে হয়েছিল যে আমি পরিবারের মধ্যেই আছি। আমি নিঃসঙ্গতা অনুভব করিনি। নতুন কারো সঙ্গে সাক্ষাত হলে তারা বলল, আমি কতই না সৌভাগ্যবান!

পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণে নামাজ আদায় ও মসজিদুল হারামে সেবার সুযোগ মহান আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। আমি সব সময় পবিত্র কাবা ঘরের কাছে অবস্থান করি। আমি মনে করি, এর মাধ্যমে আমি মহান আল্লাহর বিশেষ নৈকট্য লাভে ধন্য হয়েছি। দীর্ঘ চার দশক যাবত এ দায়িত্ব পালন করতে পেরে আমি অত্যন্ত গর্বিত।

বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজের শাসনামলে আহমদ খান সৌদি আসেন। তিনি বলেন, আমি মসজিদুল হারামের বাইরের প্রাঙ্গণ পরিষ্কারের দায়িত্ব পালন করি। এর প্রায় চার বছর পর মসজিদুল হারামের দ্বিতীয় সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়। এরপর মুসলিমদের সুষ্ঠুভাবে ইবাদত পালন করতে দেখেছি। এমন অভূতপূর্ব দৃশ্য মুখে বর্ণনা করা যায় না, তা কেবল অন্তরে অনুভব করা যায়।

এরপর সৌদির সাবেক বাদশাহ আবদুল্লাহর শাসনকালে কাবা প্রাঙ্গণের তৃতীয় সম্প্রসারণ প্রকল্পও তিনি দেখেছেন। তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন যে, মহান আল্লাহ তাকে পবিত্র কাবা চত্বরের বিভিন্ন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী করে সৌভাগ্যবান করেছেন।

পবিত্র মসজিদুল হারামে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আহমদ খান দীর্ঘ ১১ বছর একটি ক্লিনিং কোম্পানিতে কাজ করেছেন। এরপর তিনি সৌদির প্রশিদ্ধ বিনলাদেন গ্রুপেও কাজ করেছেন। সবার কাছে তিনি দক্ষ ও পরিশ্রমী কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

পবিত্র মসজিদুল হারামে দায়িত্ব পালনের সময় আহমদ খান বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আগত মুসল্লিদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। তিনি বলেন, আমরা সবাই আগত অতিথিদের ভালোবাসি। তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাই। মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের কর্মীরা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দর্শনার্থীদের কাছে মসজিদকে সুন্দরভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করি।

আহমদ খানের ইচ্ছা, পবিত্র মক্কা নগরীতে যেন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবেন। কারণ মক্কা ও মদিনার দুই সম্মানিত মসজিদের সেবায় যারা কাজ করেন তারা কখনো নিঃসঙ্গ হন না। তারা ক্লান্তিবোধ করেন না। মসজিদে এসে তিনি ভালোবাসা, সম্প্রীতি, সুখ-সমৃদ্ধি ও করুণা-অনুগ্রহ উপলব্ধি করেন। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে মুসলিমরা এখানে এসে মহান আল্লাহর প্রশংসা করেন এবং নিজেদের পাপ মোচনের জন্য দোয়া মোনাজাত করেন।

আমারসংবাদ/কেএস