Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

কী পাওয়া গেল বোট ক্লাবের সিসিটিভির ফুটেজে !

বিনোদন ডেস্ক

জুন ১৬, ২০২১, ০৯:৪৫ এএম


কী পাওয়া গেল বোট ক্লাবের সিসিটিভির ফুটেজে !

আজকাল যে কোনো বিষয়ে সবার আগে সরব হয় সোশ্যাল মিডিয়া। প্রতিবাদ জানানোর জন্য হোক কিংবা সাহায্যের প্রয়োজন হোক সোশ্যাল মিডিয়াতেই আওয়াজ ওঠে সবার আগে। চারদিন ধরে সবার কাছে সাহায্যে চেয়ে হতাশ হয়ে তাই অভিনেত্রী পরীমনিও সোশ্যাল মিডিয়াকেই বেঁছে নিয়েছেন সাহায্য চাওয়ার মাধ্যম হিসেবে। 

রোববার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। পরে সোমবার (১৪ জুন) গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্তদের। 

এবার গত ৯ জুন রাতে মধ্যরাতে বোট ক্লাবে অভিনেত্রীর সাথে কী ঘটেছিল তার একটি এক্সক্লুসিভ সিসিটিভির ফুটেজ প্রকাশ করেছে গণমাধ্যম। 

ভিডিওতে দেখা গেছে, বোট ক্লাবে প্রবেশের দেড় ঘণ্টা পর অচেতন অবস্থায় পরীকে কোলে করে দৌড়ে বেরিয়ে আসেন জিমি।

ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ৯ জুন রাত ১২টা ২২ মিনিটে ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে একটি কালো গাড়ি দাঁড়ায়। নামতে দেখা যায় পরীমনি, জিমি ও অমিকে। কিছুক্ষণ পর গাড়ি থেকে বের হন বনিও। ক্লাবের রিসিপশনেও অমির সঙ্গে পরীমনিসহ অন্যদের ঢুকেতে দেখা যায়। সেখানে আগে থেকেই ছিলেন নাসির উদ্দিন আহমেদ।

দেড় ঘণ্টা পর পরীমনিকে অচেতন অবস্থায় কোলে করে দৌড়ে বের হতে দেখা যায় জিমি ও একজন নিরাপত্তা প্রহরীকে। পেছন আসেন অমিও। ক্লাবে অমির কালো গাড়িতে গেলেও পরীমনি ফিরেছেন সাদা রঙের একটি গাড়িতে। এ সময় অমি সাহায্য তো করেননি উল্টো শাসিয়েছেন সবাইকে।

সেখান থেকে রাত তিনটা ৫২ মিনিটে বনানী থানায় আসেন পরীমনি। ডিউটি অফিসারের রুমেও তাকে অসুস্থ দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে বেরিয়ে যান। পুলিশ গাড়িতে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় পরীমনিকে।

ক্লাবের ভেতরে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকলেও ১৫ সেকেণ্ডের ফুটেজে ভাঙচুর ও পরীমনিকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করতে শোনা যায় নাসিরকে। পরীমনির দাবি, জোর করে তাকে মদ পান করানো হয়েছিল।

পুলিশ বলছে, পরীমনিকে নাসিরের কাছে তুলে দিয়েছিলেন অমি। পানীয়র সঙ্গে নেশাদ্রব্য খাইয়ে তাকে ধর্ষণচেষ্টা করা হয় সেখানে। বোট ক্লাবের সিসিটিভির ফুটেজে ঘটনার প্রমাণও মিলেছে। 

এদিকে, পুলিশের কাছে দোষ স্বীকার করেছেন অমি ও নাসির। পরীমনির অভিযোগের প্রেক্ষিতে নাসির ও অমিকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিয়েছে ডিবি। 

ডিএমপির গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, পরীমনিকে পরিকল্পিতভাবেই সেখানে ঢাকা বোট ক্লাবে নিয়ে গিয়েছিলেন অমি। জিজ্ঞাসাবাদে পরিমনীকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছেন নাসির।

পুলিশ বলছে, নাসির-অমির নারী ও মাদক কারবারে জড়িত টঙ্গীর নাজিম ও তুহিন। এ দুজনকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সোমবার পরীমনির সাভার থানায় করা মামলায় নাসির উদ্দিন ও অমিসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এছাড়া উত্তরার একটি ফ্ল্যাট থেকে তাদের গ্রেফতারের সময় মাদক উদ্ধার করা হয়।  মাদক উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অমি ও নাসিরকে মঙ্গলবার ৭ দিনের রিমান্ডে পায় পুলিশ।  এ ছাড়া তাদের সঙ্গে থাকা তিন নারীকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। 

এর আগে, সোমবার বেলা ১২ টার দিকে সাভার থানায় পরীমনি বাদী হয়ে উত্তরা ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ, অমিসহ ছয়জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওইদিন দুপুরে রাজধানীর উত্তরা-১ নম্বর সেক্টরের-১২ নম্বর রোডের বাসা থেকে নাসির উদ্দিনসহ পাঁচজন গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এরপর ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন নাহার এ মামলার এজাহার গ্রহণ করে আগামী ৮ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৮ জুন রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টায় পরীমনি তার বর্তমান ঠিকানার বাসা থেকে কস্টিউম ডিজাইনার জিমি, অমি, বনিসহ দুটি গাড়িযোগে উত্তরার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথিমধ্যে তাকে অমি বলে, বেড়িবাঁধের ঢাকা বোট ক্লাব লিমিটেডে তার দুই মিনিটের কাজ আছে। অমির কথামতো তারা ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে গাড়ি দাঁড় করে। কিন্তু বোট ক্লাব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অমি কোনো এক ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে। তখন ঢাকা বোট ক্লাবের সিকিউরিটি গার্ডরা গেট খুলে দেয়। তখন অমি পরীমনিকে অনুরোধ করে, এখানে পরিবেশ সুন্দর, তোমরা নামলে নামতে পারো। তারপর পরীমনি ঢাকা বোট ক্লাবে ঢুকে টয়লেট ব্যবহার করে। 
টয়লেট থেকে বের হওয়ার পর আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ তাদের ডেকে বারের ভেতরে বসার অনুরোধ করেন এবং কফি খাওয়ার প্রস্তাব দেন। তখন পরীমনি বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে অমিসহ আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ মদ্যপান করার জন্য জোর করেন। 

এসময় মদ্যপান করতে না চাইলে আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ জোর করে পরীমনির মুখের মধ্যে মদের বোতল ঢুকিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করে। এতে পরীমনি সামনের দাঁত ও ঠোঁটে আঘাত পান। তখন আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ পরীমনিকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এমনকি পরীমনির শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করে এবং তাকে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ উত্তেজিত হয়ে টেবিলে রাখা গ্লাস ও মদের বোতল ভাঙচুর করে পরীমনির গায়ে ছুড়ে মারে। তখন তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমি আসামি নাসিরকে বাধা দিতে চাইলে তাকেও মারধর করে। 

এ সময় পরীমনি ৯৯৯–এ কল করতে গেলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি টান মেরে ফেলে দেয়া হয়। আসামি অমিসহ অজ্ঞাতনামা চারজন আসামি নাসিরকে ঘটনা ঘটাতে সহায়তা করে।

মামলার অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, আসামি অমি পূর্বপরিকল্পিতভাবে পরীমনির বর্তমান বাসা থেকে ঢাকা বোট ক্লাবে নিয়ে যায় এবং আসামি অমিসহ অজ্ঞাতনামা চারজন আসামির সহায়তায় আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করে এবং জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। তখন পরীমনি তার সঙ্গীদের সহায়তায় ধর্ষকের হাত থেকে রক্ষা পান। এরপর আনুমানিক রাত তিনটার সময় পরীমনি তার গাড়িযোগে প্রায় অচেতন অবস্থায় ফিরে যান।

মামলার অভিযোগে আরো বলা হয়, আসামিরা বিভিন্ন মাধ্যমে পরীমনিকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করছে। ওই বিষয়ে তার পরিবার, শিল্পী সমিতি ও অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করায় এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হলো।

[embed]<iframe width="677" height="381" src="https://www.youtube.com/embed/C_HjonRI2aE" title="YouTube video player" frameborder="0" allow="accelerometer; autoplay; clipboard-write; encrypted-media; gyroscope; picture-in-picture" allowfullscreen></iframe>[/embed]

আমারসংবাদ/এডি