Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

পরীর মায়ের মৃত্যু অগ্নিদগ্ধে, হত্যার শিকার বাবা 

বিনোদন ডেস্ক

আগস্ট ৭, ২০২১, ১০:৪৫ এএম


পরীর মায়ের মৃত্যু অগ্নিদগ্ধে, হত্যার শিকার বাবা 

মাদক, উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপনের কারণে নায়িকা পরীমনি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। পুরোনাম শামসুন্নাহার স্মৃতি হলেও সবাই তাকে চেনে পরীমনি নামেই। লাস্যময়ী এই চিত্রনায়িকাকে র‍্যাব আটক ও মামলা দেওয়ার পর থেকে তার অতীত নিয়ে নানা ধরনের তথ্য বের হয়ে আসছে। এ নিয়ে দেশের গণমাধ্যমগুলোর অনুসন্ধানে জানা গেছে তার অতীত সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য। তার বাবা-মা দুজনেরই মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল বলে জানা গেছে।

পরীমনির জন্ম তার দাদার বাড়ি নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলায়। তবে বড় হয়েছেন নানার বাড়ি পিরোজপুর জেলার ভাণ্ডারিয়া উপজেলার সিংহখালী গ্রামে। স্কুল সার্টিফিকেট অনুযায়ী তার জন্ম ১৯৯২ সালের ১৫ ডিসেম্বর। পরীর প্রকৃত নাম শামসুন্নাহার স্মৃতি।

পরীর বাবার নাম মনিরুল ইসলাম। তিনি ভগীরথপুর পুলিশ ক্যাম্পের একজন কনস্টেবল ছিলেন। মায়ের নাম সালমা সুলতানা। পরীর নানার নাম শামসুল হক গাজী। তিনি ভগীরথপুর স্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তার নানী মৃত ফাতিমা বেগমও দক্ষিণ সিংহখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক ছিলেন।

বয়স যখন মাত্র তিন, তখন পরী তার মাকে হারান। ১৯৯৫-৯৬ সালের দিকে পরীর বাবার পোস্টিং হয় ঢাকায়। সেখানে একটি বাসায় আগুনে পুড়ে গুরুতর দগ্ধ হন পরীর মা। কিছুদিন চিকিৎসার পর তাকে তার বাবার বাড়িতে রেখে যান মনিরুল ইসলাম। দুই মাস পর সেখানেই তিনি মারা যান। এরপর থেকেই পরী নানা-নানীর কাছে থেকেছেন।

পঞ্চম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিলেন পরী। স্কুল পেরিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিগ্রি কলেজে ভগীরথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ৩.৫ জিপিএ পেয়ে ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে মানবিক বিভাগে ভর্তি হন। তবে এরপর তিনি পড়াশুনা চালিয়ে যাননি বলে কলেজের শিক্ষকরা জানিয়েছেন।

কোনো এক কারণে পরীর বাবার পুলিশের চাকরি চলে গিয়েছিল। এরপর এলাকায় এসে ব্যবসা শুরু করেন। সে ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ পরীমনির বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করে।

পরীমনি ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মডেলিং দিয়ে। এরপর নাটকে অভিনয় শুরু করেন। তবে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের আগেই আলোচনায় আসেন বিতর্কিত এই অভিনেত্রী। চলচ্চিত্র নায়িকা হিসেবে ক্যারিয়ার শুরুর প্রথম দিকেই ২৩টি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে রীতিমতো হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন পরীমনি।

২০১৫ সালে মুক্তি পায় তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘ভালোবাসা সীমাহীন’। স্বল্প ক্যারিয়ার জীবনে খুব বেশি ছবিতে অভিনয় করেননি পরীমনি, তবে বনানীতে ফ্ল্যাট ও কোটি টাকার বিলাশবহুল গাড়ির মালিকানা, পাঁচ তারকা হোটেলে জন্মদিন পালন ও বিভিন্ন সময়ে তার দেশের বাইরে ভ্রমণ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বহুবার। কিন্তু এত সব কিছুর মালিকানার পেছনের আয়ের উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি তার। সাংবাদিক তামিম হাসানের সাথে ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পরীমনির বাগদান হয়। পরবর্তীতে তাদের এনগেজমেন্ট ভেঙে যায়। ২০২০ সালের ৯ মার্চ তিনি পরিচালক কামরুজ্জামান রনিকে তিন টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন, সেটাও টেকেনি। ওই বছরেই বিচ্ছেদ হয় তাদের। তবে এর আগেও গুঞ্জন উঠেছিল অভিনয়ে আসার আগেও নাকি বিয়ে করেছিলেন পরীমনি। ২০১২ সালে সৌরভ নামের একজনের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। সে সময়ের কিছু ছবিও ভাইরাল হয়েছিল। তবে পরীমনি সব অস্বীকার করেন।

তবে সব কিছু ছাপিয়ে আবারো আলোচনায় আসেন ৯ জুন মধ্যরাতে সাভারে অবস্থিত ঢাকা বোট ক্লাবে তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে। এরপর প্রধান আসামি করে ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ ও অমিসহ পাঁচজনের নামে মামলা করেন তিনি। পরে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

সবশেষ ৪ আগস্ট পরীমনির বনানীর বাসায় র‌্যাব অভিযান শেষে তাকে গ্রেপ্তার করে। বাসায় অনুমোদনহীন মিনিবার পরিচালনা ও মাদকদ্রব্য রাখার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করেছে র‌্যাব। এ মামলায় বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আমারসংবাদ/জেআই