বিনোদন ডেস্ক
জানুয়ারি ২০, ২০২২, ০৭:১৫ এএম
দুইদিন নিখোঁজ থাকার পরে কেরাণীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছ থেকে অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এই হত্যাকাণ্ডের মূল আসামী নায়িকার স্বামী নোবেলকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। জানা যায়, পারিবারিক কলহের জেরেই ঘটেছে এই হত্যাকাণ্ড।
তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এমনকি চলমান শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে শিমুর মৃত্যু।
কারণ, ২০১৭ সালে মিশা-জায়েদ প্যানেল কমিটি ক্ষমতায় আসার পর শিমুর ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। তার সদস্য পদ বাতিল করে দিয়ে সহযোগী সদস্য করা হয়৷ এমনকি সদস্য হিসেবে সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত ছিলেন প্রয়াত এই অভিনেত্রী। সেই ক্ষোভে নিজের ভোটাধিকার ফিরে পেতে আন্দোলন করেছিলেন শিমু। নানান সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
গেল চার বছর ধরে যিনি সহযোগী সদস্য থেকে নিজের সদস্য পদ ফিরে পেতে ভোটাধিকারের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন, সেই শিমু মৃত্যুর পরদিনই সমিতির সদস্য হয়ে গেলেন!
গেল ১৯ জানুয়ারি এফডিসিতে দেখা গেল শিমুর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ব্যানার তৈরি করেছে মিশা-জায়েদ প্যানেল। যার একটি দেওয়া হয়েছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নামে, অন্য একটি আছে মিশা-জায়েদ প্যানেলের নামে। ব্যানারগুলোতে শিমুর পরিচয় দেওয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির সদস্য চিত্রনায়িকা শিমু’। এই পরিচয় দৃষ্টি কেড়েছে সবার। জন্ম দিয়েছে আলোচনারও।
অনেকে বিষয়টিকে মৃত শিমুর সঙ্গে উপহাস হিসেবে দেখছেন। তারা বলছেন, যে শিমুকে মিশা-জায়েদ নেতৃত্ব সদস্য থেকে সহযোগী সদস্য বানিয়ে ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল সেই তারাই মৃত্যুর পর তাকে সদস্য বানিয়ে দিল। শিমুর মৃত্যুর আবেগকে কাজে লাগিয়ে শিল্পীদের সমর্থন নিজেদের দিকে টানতেই এই কৌশল অবলম্বন করছে তারা। ভোটের রাজনীতি গেল চার বছর ধরে শিল্পী সমিতিতে অবহেলিত শিমুকে যেন গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। তাকে নিয়ে কথা বলে আবেগ ছড়াতে পারলেই যেন লাভ। আর সেই লাভই ঘরে তোলার চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার সকাল ৯টায় কেরানীগঞ্জ হযরতপুর ব্রিজের পাশে বস্তাবন্দি অবস্থায় অজ্ঞাত হিসেবে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হাসপাতালের মর্গে গিয়ে নিহতের ভাই শহীদুল ইসলাম খোকন চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর লাশ শনাক্ত করেন।
১৯৯৮ সালে কাজী হায়াত পরিচালিত ‘ বর্তমান ’ সিনেমা দিয়ে রুপালি পর্দায় তার অভিষেক হয় শিমুর। অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজক হিসেবেও তার পরিচিতি ছিল শিল্পী সমাজে।রাইমা ইসলাম শিমু চলচ্চিত্র ও নাটকের ক্যারিয়ার দুই দশকেরও বেশি সময় পার করেছেন । তিনি বাংলাদেশের অনেক গুনী পরিচালকের সাথে কাজ করেছে । মরহুম চাষী নজরুল ইসলাম , পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু , এ জে রানা , শরিফুদ্দিন খান দ্বীপু , এনায়েত করিম , শবনম পারভীন ছাড়াও বহু গুনী লোকের সাথে কাজ করেছেন তিনি।
আমারসংবাদ/এডি