Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪,

চিকিত্‍সা যন্ত্রের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে ক্যানসার

ডিসেম্বর ১২, ২০১৪, ০১:০৯ পিএম


চিকিত্‍সা যন্ত্রের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে ক্যানসার

  রোগ নির্মূলের জন্য ব্যবহৃত চিকিৎসার যন্ত্র। আর সেই যন্ত্রই অবশেষে ডেকে আনল মৃত্যুর অভিশাপ। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ শল্যচিকিত্‍সকদের দ্বারা ব্যবহৃত এই যন্ত্রের মাধ্যমে জরায়ুর ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন মহিলারা।

নারীদেহে জটিল অস্ত্রোপচার করতে অপরিহার্য পাওয়ার মর্সিলেটর্স। মধ্যবয়সী মহিলারা অনেকেই জরায়ুর টিউমার নিয়ে ভোগেন। হিস্টেরেক্টমিতে আক্রান্ত নারীর জরায়ুতে গজিয়ে ওঠা এই ধরনের টিউমারকে চিকিত্‍সার পরিভাষায় বলা হয় ‘ফাইব্রয়েডস’। কি-হোল সার্জারির মাধ্যমে নারীর শরীর থেকে বিশাল আকৃতির ফাইব্রয়েড সরাতে পাওয়ার মর্সিলেটর্সের সাহায্য নেওয়া হয়ে থাকে। মাত্র কয়েক মিলিমিটার ছিদ্র গলে টিউমারের কাছে পৌঁছে গিয়ে তাকে ছোট ছোট টুকরোয় কেটে ফেলার ক্ষমতা রাখে এই যন্ত্র। পরে সাকশান পাম্পের সাহায্যে তা শরীর থেকে বের করা হয়।এই প্রক্রিয়ায় জরায়ুতে ন্যূনতম জখম পৌঁছয়। এবং এই প্রক্রিয়ায় রক্তক্ষয়ও কম হয়। ফলে বছরের পর বছর ধরে পাওয়ার মর্সিলেটর্সের উপরে চিকিত্‍সকদের নির্ভরতা বেরড় চলেছে।

ওষুধ নয়, অস্ত্রোপচারের সামান্য যন্ত্র থেকে কী এমন ক্ষতি হতে পারে? সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, লোকসানের পরিমাণ বিপুল। জানা গিয়েছে, ৩৫০জন মহিলার মধ্যে অন্তত একজন মর্সিলেটর্সের মাধ্যমে কর্কট রোগের শিকার হতে পারেন। পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, এই যন্ত্রের সাহায্যে শরীরের অন্যত্রও ক্যানসার ছড়িয়ে যেতে পারে।

২০১৩ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিস্ট বছর চল্লিশের অ্যানি রিডের ক্ষেত্রে ঠিক এমনই ঘটেছিল।পাওয়ার মর্সিলেটর্সের সাহায্যে জরায়ুর ফাইব্রয়েড অপসারণের কয়েক মাস পর অ্যানির দেহে মেলে ক্যানসারের লক্ষণ। এরপর বহু পরীক্ষা-নিরিক্ষায় মারণরোগের শিকড় খুঁজে পাওয়া যায় চিকিত্‍সায় ব্যবহৃত যন্ত্রে। গত ১২ মাস ধরে অ্যানি রিড ও তাঁর শল্যচিকিত্‍সক স্বামী এই যন্ত্রের ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য প্রচার চালাচ্ছেন। নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য আদালতে মামলাও করা হয়। গত নভেম্বর মাসে রায় ঘোষণা করেছে আদালত। তবে সরাসরি নিষিদ্ধ না করে পাওয়ার মর্সিলেটর্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে নির্মাতাদের বিশেষ সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করতে বলা হয়েছে। এবার থেকে ওই যন্ত্র সদ্য মেনোপোজ আক্রান্ত নারীর দেহে ব্যবহারে বিধি-নিষেধ ঘোষণা করা হয়েছে।

আশা করা যায়, ভবিষ্যতে মর্সিলেটর্স ব্যবহার করার হার অনেক কমবে। তবে পাশাপাশি জরায়ুর ফাইব্রয়েড অপসারণের নতুন পদ্ধতিও ভেবে দেখার সময় এসেছে।