জানুয়ারি ১৮, ২০২১, ০৪:১৫ এএম
ধীরে ধীরে যেন আরও জটিল ধাঁধায় জড়িয়ে যাচ্ছে রাজধানী ধানমন্ডির মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিনের মৃত্যু রহস্য। হলিউড কিংবা বলিউডের অনুসন্ধানী সিনেমার মতোই এই ঘটনাতেও অনুসন্ধানের পরতে পরতে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। ভুক্তভোগী সামনে, অভিযুক্তও সামনে কিন্তু রহস্যের জট এতোই জটিল যে, সহজ অঙ্কটা মিলছে না খুব সহজে। বিষয়টা এমন যে যেখানে সব উত্তর আপনার জন্য দেওয়া রয়েছে, কিন্তু প্রশ্ন কী সেটা আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে।
৭ জানুয়ারির সকাল। কলাবাগানের ডলফিন গলিতে অভিযুক্ত দিহানের সাথে তার বাসায় যায় আনুশকা। আনুমানিক ১ থেকে দেড় ঘণ্টা পর দারোয়ানকে ডেকে তার সাহায্যে আনুশকাকে নিচে নামিয়ে গাড়িতে নিয়ে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে গেলে সেখানে আনুশকার মৃত্যু হয়।
ডাক্তারের ভাষ্যমতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলেই মৃত্যু হয় আনুশকার। এরপর অভিযুক্ত ইফতেখার ফারদিন দিহানকে আটক করে পুলিশ।
সিসিটিভি ফুটেজে এই সব তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়। পুলিশের ভাষ্যমতে, দিহান প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের কথা স্বীকারও করে। কিন্তু অনুসন্ধানের প্রতিটি ধাপে বেরিয়ে আসে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও তথ্য প্রযুক্তির প্রাথমিক তদন্তে উদ্ধার হয় আনুশকার সাথে দিহানের ঘনিষ্ট ছবি এবং ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে হওয়া কথপোকথন। এইসব তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে পুলিশ জানায় গত নভেম্বর থেকে দিহানের সাথে আনুশকার প্রেমের সম্পর্ক চলছিল।
তবে এই তথ্যকে মিথ্যা দাবি করে আনুশকার পরিবার দিহানকে অভিযুক্ত করে তার বিচার দাবি করলেও, এখনও পর্যন্ত গণমাধ্যেমে দিহানের মায়ের দেওয়া খোলা চিঠি ছাড়া তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এই সব তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ অনুমান করছেন ধর্ষন নয়, তাদের মাঝে স্ব-ইচ্ছায় শারীরিক সম্পর্ক হয় কিন্তু মরণানাশক মাদকদ্রব্যের ব্যবহারে আনুশকার মৃত্যু হয়। এছাড়াও তদন্তে ফরেন বডি ব্যবহারের কথাও উঠে আসছে বারবার। সব মিলিয়ে আসল তথ্য এবং সত্য দুইই যেন ঘন কুয়াশায় ঢাকা।
সাধারণ জনগণের মধ্যে কেউ কেউ দিহানের কঠোর বিচার দাবি করলেও অনেকেই বিষয়টিকে ধর্ষণ মনে করছেন না।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত এই ঘটনার সত্যতা শুধুই ধোঁয়াশা। এইটা ধর্ষণ কী ধর্ষণ না, অভিযুক্ত দিহানই আসল আসামি কী না?
এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর জানার জন্য অধির আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় পুরো জাতি।
আমারসংবাদ/এডি