Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

‘বই পড়ে আমি শিখেছি, কেঁদেছি, নিজেকে আবিষ্কার করেছি’

নভেম্বর ১৯, ২০২১, ১১:১০ এএম


‘বই পড়ে আমি শিখেছি, কেঁদেছি, নিজেকে আবিষ্কার করেছি’

‘বই পড়তে যে ভালোবাসে তার শত্রু কম’ বলেছিলেন চার্লস ল্যাম্বর। বই পড়তে ভালোবাসে না এমন মানুষ খুব কমই আছে। বই যেমন মানুষের জ্ঞানের গভীরতা বাড়ায় তেমনি আত্মার পরিশুদ্ধিতেও কাজ করে বই। বই নিয়ে অভিজ্ঞতা ও অনুভূতির কথা বলেন দুজন তরুণ লেখক। তাদের কথাগুলো সম্পাদনা করেছেন আমার সংবাদের প্রতিবেদক রাব্বি হোসেন।

সাহাত মাহমুদ সম্রাট,

কবি ও কথাসাহিত্যিক

-এই বিস্তৃত দিগন্তে খোদা তায়ালা মানুষ জাতিকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন । মানুষের এই শ্রেষ্ঠত্বের পেছনে যে কারণ প্রধানরুপে বর্ণিত হয় তা হলো তার ভেতরের প্রজ্ঞা । আর মানুষের এই প্রজ্ঞা অর্জনের নিমিত্তে বই পড়ার বিকল্প নেই । বই মানুষকে আলাদা এক উচ্চতায় নিয়ে যায় । যে কোনো বিষয়ে বই নানা আঙ্গিকে চিন্তা করতে সাহায্য করে। চিন্তার মাঝে নব এক প্রবাহ সৃষ্টি করে বই । মাঝে মাঝে যখন বিষন্ন হয়ে যাই তখন এই বই হয়ে ওঠে একমাত্র সঙ্গী। জ্ঞানার্জনের জন্যই হোক বা চিত্ত বিনোদনের জন্যই হোক বইকে প্রচন্ড রকম ভালোবাসতেই ভালো লাগে। তবে আমার সবচেয়ে বেশী ভালো লাগে সাহিত্যের বইগুলো পড়তে। কেননা, সাহিত্য মানুষের জীবনকে নতুন করে উপস্থাপন করে। শেখায় নব জীবনের এক অকৃত্তিম ধারা। বিশেষ করে কাব্য সাহিত্য। যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ক্ষণিকা, কল্পনা অথবা জীবনানন্দ দাশের বনলতা সেন ইত্যাদি। প্রত্যেক বছর একুশে বইমেলার জন্য অপেক্ষা করি, প্রতিক্ষায় থাকি কখন নতুন বই পড়তে পারবো আবার। বই আমাকে এক আলাদা জগৎ দান করে। তাই বইকে যদি সঙ্গী হিসেবে পাওয়া যায়, সেটাই হয় আমার পৃথীবির শ্রেষ্ঠ সুখ । বই হোক সঙ্গী , প্রজ্ঞা অর্জনের।

তাহেরা আক্তার, কবি ও লেখক

- ‘ডিপ্রেশনের বাংলা জানি মন খারাপ’  হ্যাঁ ঠিক তাই!বড্ড ডিপ্রেশন নিয়ে ঘুরপাক খাচ্ছিলাম এই ঘূর্নিয়মান ধরণিতে। আঁধারের যবনিকা টেনে মন-মগজের চারিধার তখন আচ্ছন্ন। আলোর রূপক ফুটে উঠে ‘অনেক আঁধার পেরিয়ে’ বইটিতে। ডিপ্রেশন নামক মহাব্যাধি ছেড়ে পাড়ি জমালাম জাগতিক জগতে।ইসলামি বই পড়ার প্রতি বেড়ে গেল আগ্রহ।এগিয়ে যেতে থাকলাম বইয়ের জগতে। হাজারো লাখো উত্থান-পতনের আবর্তেও হারাতে দিলাম না ঈমান নামক আসল শক্তিকে। আমি মুসলিম এটাইতো আমার সব থেকে বড় পরিচয়। ধূসর মরিচিকাময় সামান্য জীবনে একটা সুন্দর মৃত্যুর কামনা ছাড়া অন্যকিছু একদম বৃথা! লক্ষকোটি মাখলুমের মধ্যে আমি সেরা মাখলুকাত হতে পেয়েছি এটা বড় প্রাপ্তি। আমার এই জ্ঞান ও উপলব্ধি গুলো পাওয়া সম্ভব হয়েছে কেবল ইসলামি বইগুলো থেকে। শ্রদ্ধা জানায় ইসলামি লেখকদের এবং তাদেরকেও যারা উক্ত পথের নবীন পথিক।আমি মনে করি, বই আমাদের ব্যক্তিগত এবং মানসিক বিকাশের প্রতীকী।যা আমাদের মধ্যে সুষ্ঠু ভাবনা ফুটিয়ে তুলে,শেখার আগ্রহ জাগায় আর আমরা শিখি। ব্যক্তিগত জীবনে আমিও শিখেছি, কেঁদেছি, নিজেকে আবিষ্কার করেছি। আমাদের মনে রাখতে হবে, যে অভিজ্ঞতাটি নিজেকে সংশোধন করেছে তা অন্যদের মাঝেও ছড়িয়ে দেয়া। অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, কোন বই থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান আমাদেরকে আমাদের বাস্তবতায় চ্যালেঞ্জ জানাতেও আমন্ত্রণ করে।বই হচ্ছে এমন শক্তি যা অস্ত্র হিসেবে কাজ করে সর্বদা।এটা নাগালের মধ্যেই থাকে কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা তাদেরকে আরও মুক্ত মননে জানার চেষ্টা করিনা। বইয়ের জন্য আমাদের আরও আগ্রহ বাড়াতে হবে।

আমার সংবাদ/রা.হা