Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪,

আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের স্বীকৃতি

ডিসেম্বর ৫, ২০২১, ০৬:৫৫ পিএম


আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের স্বীকৃতি

আজ সোমবার মহান স্বাধীনতা ও বিজয়ের রৌদ্রদীপ্ত ডিসেম্বর মাসের ষষ্ঠ দিন। মুক্তিযুদ্ধ তথা জনযুদ্ধ চলাকালে এ দিনটি ছিলো স্বাধীনতাকামী জনতার জন্য খুবই একটি সুখের দিন। কোমল হূদয়ের বাঙালিরা যে সময়ের প্রয়োজনে পাথর কঠিনও হতে পারে তা ষোলআনাই জানিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে।

 একাত্তরের ৬ ডিসেম্বর ভারত সরকার বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। এদিন সকালে ভারতের লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী আনুষ্ঠানিকভাবে এ স্বীকৃতি প্রদান করেন এবং বাংলাদেশ সরকারকে বৈধ সরকার বলে ঘোষণা দেন। এরপর বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করে। 

মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলামকে দেয়া এক চিঠিতে ইন্ধিরা গান্ধী তার এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। ভারতকে প্রথম অনুসরণ করে ভুটানের রাজা জিগমে সিংগে ওয়ানচুক বাংলাদেশের বাস্তব অস্তিত্বকে স্বীকার করে নিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে বৈধ বলে স্বীকার করে নেন।

উল্লেখ্য, ৩ ডিসেম্বর ভারতের ওপর পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর আক্রমণও মূলত পরিস্থিতি দ্রুত বদলানোর পেছনে ভূমিকা রেখেছে। সেদিন থেকে পাক-ভারত যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। পরবর্তীতে অনুপ্রাণিত মুক্তিযোদ্ধারা একের পর এক শহর ও এলাকা দ্রুত দখল করতে থাকে এবং পাকবাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করে। 

প্রফেসর মযহারুল ইসলাম তার ‘বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ ও অন্যান্য’ গ্রন্থে লিখেন, ‘এদিকে, পাকিস্তান ৩ ডিসেম্বর ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হলে ভারত কঠোরভাবে তার মোকাবিলা করে এবং ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। স্বীকৃতির তিনটি কারণ বর্ণনা করা হয়। 

এক. বাংলাদেশের জনগণের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম শুরু হওয়ার ফলে পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে। 

দুই. প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করেছে এবং এই সরকার জনগণের সমর্থনের ওপর প্রতিষ্ঠিত। 

তিন. ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণ করার ফলে ভারতের ও বাংলাদেশের জনগণ একই শত্রুর আঘাতের শিকার হয়েছে এবং যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়েছে।’ 

চূড়ান্ত বিজয়ের এ অগ্রযাত্রায় পাকিস্তানি বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, সাতক্ষীরায় কলারোয়া, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, যশোরের চৌগাছা, মেহেরপুর, লালমনিরহাটসহ আরো কিছু এলাকা। ভারতীয় বাহিনীর হস্তক্ষেপে খুলনা, মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থিত পাকবাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এরপর থেকে বিভিন্ন জায়গায় পর্যুদস্ত পাকবাহিনী ঢাকা অভিমুখে পলায়ন করতে থাকে। এভাবেই ক্রমশ লাল হতে থাকে আমাদের ‘স্বাধীনতা’ নামক চরম আকাঙ্ক্ষিত সূর্যটি।