Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

অস্ত্রের মুখে যুবককে অপহরণের পর বাধ্য করা হলো বিয়েতে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জানুয়ারি ৮, ২০২১, ১১:৪৫ এএম


অস্ত্রের মুখে যুবককে অপহরণের পর বাধ্য করা হলো বিয়েতে

অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়েছে ২১ বছর বয়সী এক যুবককে। বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) ভারতের বিহারের ঘটনাটি ঘটেছে।

হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিহারের লক্ষীসরাই জেলার বারাহরিয়া থানার অন্তর্গত গঙ্গাসরাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিবম কুমার নামে ওই যুবক সম্প্রতি ভারতীয় সেনাবাহিনীর জেনারেল ডিউটি (জিডি) সার্ভিসে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। বন্দুকের মুখে অপহরণ করে তাকে বাধ্য করা হয় নিকটবর্তী একটি গ্রামের একটি মেয়েকে বিয়ে করতে।

শিবম কুমারের বাবা মনোজ কুমার অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করা হয়, অপহরণকারীরা এসেছিল একটি এসইউভিতে (স্পোর্ট ইউটিলিটি ভেহিকল)। 

তিনি পুলিশকে জানান, তার ছেলের বন্ধুরা, যারা সকালে তার সাথে বেড়াতে গিয়েছিল, তারা ঘটনাটি দেখে এবং তার পরিবারকে জানায়।  

পুলিশের কাছে করা অভিযোগ অনুযায়ী, শিবমকে সেনাবাহিনীতে জিডি পদে নিয়োগ করা হয়েছিল এবং সে প্রস্তুতি নিচ্ছিল হায়দ্রাবাদে যাওয়ার। 

অপহৃত যুবককে উদ্ধার এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে তিন ঘণ্টা ধরে যান চলাচল ব্যাহত করে গঙ্গাসরাই-পাটনার প্রধান সড়ক অবরোধ করে গঙ্গাসরাই গ্রামের ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।  

সাব ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার (এসডিপিও) রঞ্জন কুমার অন্যান্য পুলিশদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।

এর মাঝে দ্রুতই এক নারীর সাথে শিবমের বৈবাহিক গটবাধা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জামুই জেলার সিকান্দ্রা থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করে শিবম'কে।

[media type="image" fid="104816" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

লক্ষীসরাই জেলার এসপি সুনীল কুমার বলেছেন, অপহরণের চার ঘন্টার মধ্যে শিবমকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিশ অভিযুক্তদের সম্ভাব্য গোপন আস্তানায় অভিযান চালাচ্ছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, তুলে নিয়ে যাওয়ার পর শিবম'কে জামুইয়ের সিমারিয়াতে অবস্থিত একটি শিব মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে তাকে জোর করে বিয়ে করা হয়।

পুলিশ বলছে, ‘পাকারুয়া ভিভাহ’ অর্থাৎ তুলে নিয়ে বিয়ে বা জোর পূর্বক বিয়ে এই অঞ্চলের নিয়মিত ঘটনা। এই ধরনের ঘটনা প্রধানত মুঙ্গের, নওয়াদা, খাগারিয়া এবং বেগুসরাই জেলা থেকে বেশি রিপোর্ট করা হয়। সেখানে সম্ভাব্য বরদের বিয়ের জন্য অপহরণ করা হয়।

পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২০ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে বিয়ের জন্য ২৫ জনেরও বেশী ব্যক্তিকে অপহরণ করা হয়েছে।

জোর পূর্বক বিয়ে বিহারের কিছু এলাকায় একটি সাধারণ প্রথা ছিল। তবে যৌতুক এড়াতে বিয়ের জন্য যোগ্য অবিবাহিত পুরুষদের অপহরণ করা, নানান ধরণের আক্রমণ এবং পরিশেষে তা একটি আইন বিরদ্ধ কাজ হওয়ায় সরকারী উদ্যোগে এ ধরণের প্রথা নিষিদ্ধ করা হয়।

রাষ্ট্রীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরোর পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে যে ২০২০ সালে বিহার রাজ্যে মোট ৬,৫১৭টি জোরপূর্বক বিয়ের ঘটনা ঘটেছে।

২০১৯ সালে এ সংক্রান্ত ৪,৪৯৮টি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছিল।  ২০১৮ সালে ৪ হাজার ৩০১টি, ২০১৭ সালে ৩ হাজার ৬৭৮টি এবং ২০১৬ সালে হয়েছিল ৩ হাজার ৭০টি মামলা।  ২০১৫ সালে নথিভুক্ত করা হয় ৩ হাজার মামলা এবং ২০১৪ সালে মামলার সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৫২৬টি।

আমারসংবাদ/জেআই