Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

বাংলাদেশের আকাশে ‘রহস্যময়’ মিথেন গ্যাস 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

এপ্রিল ৮, ২০২১, ০২:৪৫ পিএম


বাংলাদেশের আকাশে ‘রহস্যময়’ মিথেন গ্যাস 

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। সম্প্রতি বাংলাদেশের বায়ুমণ্ডলে উচ্চমাত্রায় মিথেন গ্যাসের ধোঁয়া শনাক্ত করেছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা। 

তবে এর উৎস নিশ্চিত না হওয়ায় বিষয়টিকে ‘রহস্যময়’ বলে উল্লেখ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ।

বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্যারিসভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কায়রোস এসএএস বাংলাদেশের বায়ুমণ্ডলে মিথেন নিঃসরণের ১২টি সর্বোচ্চ হার শনাক্ত করেছে।

গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ পর্যবেক্ষক জিএইচএসস্যাট জানিয়েছে, তাদের দেখা এযাবৎকালের সবচেয়ে শক্তিশালী নিঃসরণ এগুলো। বাংলাদেশের আকাশে ঘনীভূত মিথেনের চিত্র ধরা পড়েছে ব্লুফিল্ড টেকনোলজিস নামে আরেক পর্যবেক্ষকের নজরেও। 

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ইয়োতাম এরিয়েল বলেন, আমাদের বিশ্লেষণ বলছে, বিশ্বের কয়েকটি সর্বোচ্চ মিথেন নিঃসরণ ঘটছে বাংলাদেশে, যা স্যাটেলাইটে শনাক্ত করা যায়।

বাংলাদেশের পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের একটি সাক্ষাৎকারের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিথেন নিঃসরণের বিষয়ে বাংলাদেশ অবগত।

মন্ত্রী বলেন, এটি সম্ভবত ধানক্ষেত থেকে আসছে। কৃষকরা যখন তাদের ক্ষেত সেচ দেন, তখন জলাবদ্ধ মাটিতে ব্যাকটেরিয়া বিপুল পরিমাণ গ্যাস তৈরি করতে পারে। 

আরেকটা উৎস হচ্ছে ল্যান্ডফিল (ময়লা পুঁতে রাখা) গ্যাস। আমরা এটি কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি।

গ্লোবাল মিথেন ইনিশিয়েটিভের তথ্যমতে, গৃহপালিত পশু, তেল-গ্যাস শিল্প থেকে লিক হওয়া, ময়লার ভাঁগাড় ও কয়লার খনি হচ্ছে মিথেন নিঃসরণের মনুষ্যসৃষ্ট কয়েকটি স্বাভাবিক মাধ্যম।

এনভায়রনমেন্টাল ডিফেন্স ফান্ডের হিসাবে, বর্তমানে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের অন্তত এক-চতুর্থাংশের জন্য মানবসৃষ্ট মিথেন নিঃসরণ দায়ী।

স্বাদ-গন্ধহীন এই গ্যাস শনাক্ত করা বেশ কঠিন। ফ্রান্সভিত্তিক পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইডিএফের প্রধান বিজ্ঞানী স্টিভেন হ্যামবার্গ বলেন, বাংলাদেশের উপরে আমরা যে মিথেন ঘনীভূত হতে দেখেছি, এটি ইঙ্গিত দিচ্ছে- আমাদের আরও গবেষণা দরকার।নির্গমনের বিশ্বাসযোগ্য পরিমাণ এবং উৎস নির্ধারণের জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।

গৃহপালিত পশু, তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের লিক, ভূমিতে আবদ্ধ গ্যাস এবং কয়লা খনি হলো মনুষ্যসৃষ্ট কর্মকাণ্ড; যা থেকে মিথেন গ্যাস নিঃসরিত হয়। বর্তমান বিশ্ব উষ্ণায়নের কমপক্ষে এক চতুর্থাংশের জন্য মনুষ্যসৃষ্ট মিথেন নিঃসরণ দায়ী বলে মনে করে এনভায়রনমেন্টাল ডিফেন্স ফান্ড।

কেরোস এসএএসের মতে, ধানক্ষেত, মাটিতে আটকে থাকা মিথেন গ্যাস, প্রাকৃতিক গ্যাসলাইনে লিক এবং কয়লাখনি থেকে বাংলাদেশের মিথেন নিঃসরণ হয় বেশি। কেরোস এসএএস এসব কথা বলতে গিয়ে ইএসএ’র সেন্টিনেল-৫পি এবং সেন্টিনেল-২ স্যাটেলাইটে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করেছে।

সূত্র: ব্লুমবার্গ।

আমারসংবাদ/এএসএম