Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪,

ইসরায়েলি হামলায় নিশ্চিহ্ন আল-জাজিরা কার্যালয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মে ১৫, ২০২১, ০২:৪০ পিএম


ইসরায়েলি হামলায় নিশ্চিহ্ন আল-জাজিরা কার্যালয়

বিমান হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অবস্থিত কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার স্থানীয় কার্যালয় শনিবার (১৫ মে) পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে ইসরায়েল। 

নিজেদের কার্যালয়ে এমন হামলার খবর অনলাইন প্রতিবেদনে নিশ্চিত করেছে আল-জাজিরা। 

টুইটারে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, ইসরায়েলের বিমান হামলার পর ভবনটি মাটির সাথে মিশে গেছে। ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে ছেয়ে গেছে ভবনের চারপাশ।

হামলা চালানোর এক ঘণ্টা আগে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী আল-জাজিরার কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। এসময় ভবনের অধিবাসীদের বোমা হামলার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়।

এরপরই ইসরায়েল ১৩ তলার ‘জালা টাওয়ার’ নামে ওই ভবনটি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। ওই হামলায় কেউ হতাহত হয়েছে কিনা জানা যায়নি। ভবনটিতে অফিস ছাড়াও বেশ কিছু আবাসিক ফ্ল্যাট রয়েছে।

ওই ভবনে মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) কার্যালয়ও ছিল।

এপির এক সাংবাদিক বলেন, হামলার আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ভবনের মালিককে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়।

এএফপি জানায়, ভবনের মালিক ইসরায়েলি বাহিনীর কাছ থেকে ভবন খালি করার জন্য আরও ১০ মিনিট সময় বেশি দেয়ার অনুরোধ করেন। তবে তার সেই অনুরোধ রক্ষা করা হয়নি।

আল জাজিরার এক সংবাদিক সাফওয়ান আল কাহালুত হামলার আগ দিয়ে ওই ভবনেই ছিলেন। তিনি বলেন, খবর পাওয়ার পর তিনি ও তার সহকর্মীরা ব্যক্তিগত ও অফিসের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বিশেষ করে ক্যামেরা নিয়ে বের হয়ে যান।

‌‘আমি ওই ভবনে ১১ বছর কাজ করেছি। ভবনটির ছাদ থেকে বহু লাইভ সম্প্রচার করেছি আমরা। চোখের সামনে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র এসে ভবনটিতে আঘাত করে। এরপরই হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়ে ভবনটি।’

তিনি বলেন, ওই ভবনে সহকর্মীদের সঙ্গে বহু স্মৃতি রয়েছে আমার।

কাহালুত বলছিলেন, এ ধরনের বিমান হামলায় যারা বাড়িঘর হারায় তাদের মানসিক অবস্থা কেমন থাকে তা অন্য কেউ বুঝতে পারবে না। এ যেন এক সকালে ঘুম থেকে উঠে জানতে পারা, আপনার পুরো পেশাজীবন আর স্মৃতির সঙ্গে কেউ আপনার কর্মস্থলকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাসের সশস্ত্র গোয়েন্দা শাখার সরঞ্জাম ওই ভবনে রাখা হত। এ কাজে ভবনটিতে অবস্থিত গণমাধ্যমের একটি দপ্তরকে ব্যবহার করত তারা। নাম না বললেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আল জাজিরাকে লক্ষ্য করেই এ মন্তব্য করে।

তবে গাজায় ‌ইসরায়েলের ‘খবর’ দিয়ে ভবন ধসিয়ে দেয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। গাজার বহু ভবন এভাবে ধসিয়ে দেয়া হয়েছে।

২০১৪ সালের পর গাজা ও ইসরায়েলের মধ্যে এতটা ভয়াবহ সংঘাত পরিস্থিতি গত ৭ বছরে তৈরি হয়নি। গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত গাজায় ৪০ জনের বেশি শিশুসহ অন্তত ১৩৬ জন ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলে ৮ জন নিহত হয়েছেন।

এদিকে, শনিবার ভোরের দিকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার এক শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ওই হামলায় সেখানে আরও ১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামলার জবাবে ইসরায়েলে পাল্টা রকেট হামলা করেছে গাজা উপত্যকার শাসকগোষ্ঠী হামাস।

অন্যদিক, শুক্রবার সংঘাত ছড়িয়েছে গাজা থেকে বিচ্ছিন্ন ফিলিস্তিনের অপর অংশ পশ্চিম তীরেও। এদিন পশ্চিম তীরেও অন্তত ১১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আহত কয়েক শ’। ইসরায়েলি সেনাদের গুলি, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেটে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

আমারসংবাদ/জেআই