ঢাকা
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জুন ৫, ২০২১, ০৭:০৫ এএম
যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা ও সংঘাতকে কেন্দ্র করে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেসবুক আইডি বন্ধ করে দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। একইসঙ্গে ফেসবুকের মালিকানাধীন ইনস্টাগ্রামেও তাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের পর সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফের তার অ্যাকাউন্ট ফিরে পাবেন বলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। অর্থাৎ আগামী দুই বছর ট্রাম্পকে ফেসবুক থেকে দূরেই থাকতে হবে।
শুক্রবার (৪ জুন) ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এই ঘোষণা দেয়।
ওই ঘটনার পর ট্রাম্পের টুইটার অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়। ১০ বছরেরও পুরনো ওই অ্যাকাউন্টে ট্রাম্পের প্রায় নয় কোটি অনুসরণকারী ছিল। অপরদিকে নিজেদের প্লাটফর্মে ট্রাম্পকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করে ফেসবুক।
শুক্রবার ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানায়, আগামী দুই বছরের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিষিদ্ধের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে যদি ‘জনগণের নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি কমে’ তাহলে তাকে ফের এই প্লাটফর্মে ফিরিয়ে আনা হতে পারে।
শুক্রবার ফেসবুকের ওয়েবসাইটে ব্লগ পোস্ট করে জানানো হয়েছে, বড় ধরনের সহিংসতা বা সংকটকালীন সময়ে সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় ব্যক্তিদের (পাবলিক ফিগার) আচরণের বিষয়টি ফেসবুকের নতুন নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নীতিমালার নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের বিভিন্ন মেয়াদে ফেসবুকে নিষিদ্ধ করা হবে। প্রথমে এক মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হবে। প্রতিটি সময়কালের শেষে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে।
ট্রাম্পকে নিষিদ্ধের এই বিষয়টিও সদ্য সমাপ্ত মে মাসে ফেসবুক ওভারসাইট বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফেসবুত ব্যবহার করে যেসব বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ভবিষ্যতে সহিংসতায় উস্কানি দেওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের সংকটের সৃষ্টি করলে কীভাবে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হবে, এই ঘোষণায় তার ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
জনপ্রিয় এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কি ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট পুনরায় চালুর অনুমতি দেবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে ফেসবুকের ওভারসাইট বোর্ড বলেছে, জানুয়ারিতে ক্যাপিটল ভববনে হামলা ও সহিংসতার সময় ট্রাম্পকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। কিন্তু এই প্ল্যাটফর্ম থেকে তাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সরিয়ে রাখা বা না রাখা নিয়ে স্পষ্ট যুক্তির অভাব ছিল। কিন্তু শুক্রবার ফেসবুকের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের ‘শাস্তির’ বিষয়টি স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
ফেসবুকের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ বলেন, যে কোনো শাস্তি আমরা দিই বা না দিই-সেটাই বিতর্কিত হয়ে উঠবে। অনেকে বিশ্বাস করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো একজন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এভাবে ফেসবুকে নিষিদ্ধ করা ঠিক হয়নি। আবার অনেকে বিশ্বাস করেন, ট্রাম্পকে এখনই সারা জীবনের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা উচিত।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিরোধীদের থেকে আজকের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা হবে, সেটও আমরা জানি। কিন্তু আমাদের কাজ, যতটা সম্ভব স্বচ্ছ ও সুন্দরভাবে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ‘গণতন্ত্রের মূর্তি’ হিসেবে পরিচিত ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে হামলা ও সহিংসতা চালাতে সমর্থকদের উস্কানি দেয়ার অভিযোগে গত জানুয়ারিতে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে নিষিদ্ধ হন ট্রাম্প। ট্রাম্প সমর্থকদের সেদিনের সেই ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচজন নিহত হয়েছিলেন। এই হামলার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত গণতন্ত্রের ভিত কেঁপে উঠেছিল।
