Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

থামছেই না স্বজনদের কান্না, দুই বছরেও শেষ হয়নি তদন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১, ০৪:২৫ এএম


থামছেই না স্বজনদের কান্না, দুই বছরেও শেষ হয়নি তদন্ত

পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টার ঘটনা কি মনে আছে সবার? সেই দিনের কথা সবার মনে না থাকলেও সেই আগুনের কথা আজও ভুলেননি নিহতদের স্বজনরা। আজও স্বজনরা তাদের কথা ভেবে ধরে রাখতে পারেন না চোখের পানি।

ঘটনা ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় এক ভয়াবহ রাত নেমেছিল সেই দিন। পুরান ঢাকার ওয়াহেদ ম্যানশন নামে একটি ভবনের রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে মারা যান কমপক্ষে ৭১ জন মানুষ।

আজ সেই ঘটনার দুই বছর পূর্ণ হলো। সবাই ভুলে গেলেও সেই আগুনের উত্তাপ আজও ভুলতে পারেননি নিহতদের স্বজনরা।

সেই রাতে কেউ হারিয়েছেন সন্তান, কেউ স্বামী আবার কেউবা পিতা-মাতাকে হারিয়ে এতিম। স্বজন হারানো মানুষগুলো আজও সেই ভবনের নিচে খুঁজে ফিরছে তাদের হারানো স্বপ্ন।

তাদের মধ্যে একজন পুরান ঢাকার বাসিন্দা ফাতেমা আক্তার। ঠিক দুই বছর আগে এই দিনে তিনি হারিয়েছেন নিজের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ তার স্বামীকে। সেই রাতে আগুনে ছাই হয়ে যান তিনি। 

ফাতিমা জানান, সেই রাতে ফাতেমার স্বামী ফয়সালের শরীরের প্রায় শতভাগই পুড়ে গিয়েছিল আগুনে। সেই ঘটনায় এই যে মামলা হয়েছে, তাতে কী হয়েছে? বাড়ির মালিকরা তো ১০ দিনও জেলখানায় ছিলেন না। জামিনে বের হয়ে ঘোরাফিরা করছেন। পুড়ে যাওয়া ভবনের সংস্কারও করেছেন। সরকারও বলেছিল, আমাদের পাশে দাঁড়াবে। এখনও কেউ দাঁড়ায়নি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি, তিনি যেন অন্তত আমাদের পাশে দাঁড়ান।

তাদের মধ্যে আরেকজন নাসির উদ্দিন। তিনি হারিয়ে ছিলেন তার প্রিয় যুবক মাহিরকে (সন্তান)। বাবা হয়েও সেই রাতে মাহিরের জন্য কিছুই করতে পারেননি তিনি। নাসির উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় যে আইনি প্রক্রিয়া চলছে তাতে আমরা খুশি না। নিমতলীতে যখন ঘটনাটা ঘটেছিল তখন যদি সরকার কড়া ব্যবস্থা নিতো, তবে চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডি ঘটতো না। এখনও যদি এই ঘটনায় সরকার ব্যবস্থা না নেয়, তবে সামনে আবারও এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে। আমরা চাই রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবসা সরকার আবাসিক এলাকা থেকে সরিয়ে নিক। আর কোনও বাবা যেন সন্তান না হারাক।

তিনি আরও বলেন, ওই ঘটনায় ভবনটির দুই মালিককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তাদেরকে যদি ঠিকঠাক জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো, তবে বের হয়ে আসতো অনেক ঘটনা। আজও গোডাউনের মালিককে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। সন্তান হারিয়েছি। কিন্তু বিচার পেলাম না।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের দুই বছর পূর্ণ হলেও এ ঘটনায় করা মামলার চার্জশিট এখনও আদালতে জমা দিতে পারেনি পুলিশ। তারা বলছে, এজাহারে সন্দেহভাজন দুই আসামি আছে। যাদের বিষয়ে কোনও তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি তদন্তকারী কর্মকর্তা। যার কারণে চার্জশিট জমা পড়েনি আদালতে।

আমারসংবাদ/জেডআই