Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

রমনায় বোমা হামলা: দুই দশকেও শেষ হয়নি বিচার

নিজস্ব প্রতিবেদক

এপ্রিল ১৪, ২০২১, ০৪:৪৫ এএম


রমনায় বোমা হামলা: দুই দশকেও শেষ হয়নি বিচার

২০০১ সালে রাজধানীর রমনা বটমূলে ছায়ানটের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে পুঁতে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটলে ১০ জন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হন।  এ ঘটনায় জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নানসহ (অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর) ১৪ জনকে আসামি করে হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়।

দায়ের করা হত্যা মামলায় রায় হলেও বিস্ফোরক আইনের মামলাটির বিচারকাজ শেষ হয়নি দুই দশকেও। তবে রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, মামলাটি প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারলে শিগগিরই মামলাটির বিচার সম্পন্ন হবে।

ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। সর্বশেষ গত ৫ এপ্রিল এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব রোধে সরকার দেশে লকডাউন ঘোষণা করে। এজন্য আদালতও সাধারণ ছুটিতে যায়। ফলে, ওই দিনও সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। লকডাউন শেষে, সাধারণ ছুটি শেষে মামলাটির শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বোমা হামলার ১৩ বছর পর ২০১৪ সালের ২৩ জুন বিচারিক আদালতে দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ওপর আঘাতের মর্মন্তুদ এ ঘটনায় হত্যা মামলার রায় হয়। এতে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় হুজির আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আবদুল হাই ও শফিকুর রহমানকে।

আর শাহাদাত উল্লাহ জুয়েল, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আবদুর রউফ, ইয়াহিয়া ও আবু তাহেরকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন। মৃত্যুদণ্ড পাওয়াদের মধ্যে মুফতি হান্নানের অন্য আরেক মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। তাজউদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম, শফিকুর রহমান ও আবদুল হাই পলাতক।
 
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের পহেলা বৈশাখের ভোরে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সকাল ৮টা ৫ মিনিটে একটি এবং এর পরপরই আরেকটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই নিরীহ সাত ব্যক্তি প্রাণ হারান।

পরে আরও তিনজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ওই ঘটনায় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ ওই দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন। এতে ১৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফ।

দুটি মামলার মধ্যে প্রায় ১৩ বছর পর হত্যা মামলার রায় হয় ২০১৪ সালের ২৩ জুন। রায়ে আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো— নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা আকবর হোসাইন ওরফে হেলালউদ্দিন, মো. তাজউদ্দিন, আলহাজ মাওলানা হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মুফতি শফিকুর রহমান ও মুফতি আব্দুল হাই।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো—শাহাদত উল্লাহ ওরফে জুয়েল, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা আ. রউফ, মাওলানা সাব্বির ওরফে আব্দুল হান্নান সাব্বির, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ ও হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া।

তাদের মধ্যে সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনসহ চার আসামি এখনও পলাতক। আর শীর্ষ জঙ্গি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের অন‌্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। এজন্য বিস্ফোরক মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

আমারসংবাদ/এআই