Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

জনগণের সুখ-দুঃখের সাথী হতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ২৩, ২০২১, ০৩:৪০ পিএম


জনগণের সুখ-দুঃখের সাথী হতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

শেখমুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সব সময় জনগণের পাশে থেকে তাদের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জনগণের পাশে থাকতে হবে, সুখে, দুঃখে সাথী হতে হবে। জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে। 

বুধবার (২৩ জুন) আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্যে এই নির্দেশনা দেন তিনি। গণভবনে থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মূল অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামী লীগ মহামারীকালে দলের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সীমিত আয়োজনের মধ্যদিয়ে উদযাপন করেছে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, সারা বাংলাদেশটাকে জাতির পিতা সুন্দরভাবে সাজাতে চেয়েছিলেন। তিনি তো পারেন নাই করতে, তাকে তো করতে দেওয়া হল না। তার সেই অসমাপ্ত কাজ আমাদের সমাপ্ত করতে হবে। এবং তার জন্য আওয়ামী লীগকে সব সময় সচেতন থাকতে হবে, জনগণের পাশে থাকতে হবে, সুখে, দুঃখে সাথী হতে হবে এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, অনেক দেশ যেখানে এখনও টিকা দেওয়া শুরু করতে পারেনি, সেখানে তার সরকার আগে পদক্ষেপ নিয়েছিল বলে তা শুরু করা গেছে পাঁচ মাস আগে। ভারতে যখন মহামারী ব্যাপকভাবে শুরু হল, তারা ভ্যাকসিন রপ্তানি করা বন্ধ করে দেওয়াতে আমরা কিছুটা সমস্যায় পড়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে আমরা এখন আবার ভ্যাকসিন কিনতে শুরু করেছি।

সমালোচকদের নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমার খুব দুঃখ লাগে, যাদেরকে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগেভাগে ভ্যাকসিন দিয়েছি, দুই ডোজ দেওয়ার পর তারা এখন সমালোচনা করে। অথচ তারাই কিন্তু সবার আগে নিয়েছে। তারাই আবার বড় বড় সমালোচনার কথা …. একে গালি ওকে গালি…. অনেক কিছু দেন, আমরা শুনি।

বিশ্বজুড়েই যে টিকার সঙ্কট, তা সমালোচকদের বোঝার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, যে ভ্যাকসিন আমরা ৪ ডলারে কিনেছি, এখন তা ১৫ ডলারে কিনতে হচ্ছে। সামনে হয়ত আরও বেশি দাম হবে। আমরা তো আগেই টাকা দিয়ে, পয়সা দিয়ে সব চেষ্টা করে রেখেছিলাম। বাংলাদেশে যেন ভবিষ্যতে করোনাভাইরাসের টিকা তৈরি করা যায়, সেই ব্যবস্থাও সরকার করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, আমরা যেন নিজেরা ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারি, তার জন্য আমাদের ফার্মসিউটিক্যাল তৈরি করা দরকার। আমরা কীভাবে এখানে ভ্যাকসিন করব, তার উপর আমরা গবেষণা করে ইন্সটিটিউট তৈরি করে আমরাও যেন ভবিষ্যতে ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারি, তার জন্য যা যা দরকার, আমরা সেই ব্যবস্থা নেব।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় এখনও সবচেয়ে ভালো স্থানে রয়েছে বলে দাবি করেন সরকার প্রধান।

তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়ন কোনো ম্যাজিক না। এটা আমাদের পরিকল্পনা। এটা আমাদের একটা দর্শন, একটা আদর্শ। করোনাভাইরাস আমাদের যথেষ্ট কষ্ট দিচ্ছে সারা বিশ্বব্যাপী। এটা একটা বিরাট সমস্যা। তারপরও আমরা আমাদের অর্থনীতির গতিটা সব সময় ঠিক রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। যদিও এতে অনেক ক্ষতি হচ্ছে। তারপরও হয়ত যে লক্ষ্যটা ছিল, সেটা হয়ত পূরণ করতে পারিনি, কিন্তু তারপরও আমি বলব, এই দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশই এখন সব থেকে ভালো স্থানে আছে এবং থাকবে, সেটাই বড় কথা।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জনের তিন বছরের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট তাকে সপরিবারে হত্যা করার পর সামরিক শাসনে নির্যাতন আর নিপীড়নের মধ্যে পড়েছিল আওয়ামী লীগ।

১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দলীয় সভাপতি হিসাবে দেশে ফিরে কয়েকভাগে বিভক্ত আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করেন। তার নেতৃত্বে ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এরপর দেশে রাজনৈতিক সঙ্কটের পর ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুলভাবে জয়ী হয়ে পুনরায় সরকারে ফেরে। তারপর একটানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় দলটি।

শেখ হাসিনা বলেন, 'এই আওয়ামী লীগ অনেক ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করেছে। অনেক চড়াই-উৎপাই পার করেছে। অনেক বন্ধুর পথ অতিক্রম করেছে। আজকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলে বাংলাদেশের মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার সুযোগ আছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে তারা আবার ভূলুণ্ঠিত হবে।'

দলের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নেতা-কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, “৭২ বছর আওয়ামী লীগের বয়স হল। এই সাব কন্টিনেন্টের সব থেকে প্রবীণ পার্টি। এই দলই পারবে এদেশে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, এই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর যেন কখনও কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেজন্য অতন্দ্র প্রহরীর মতো বাংলাদেশের মানুষের পাশে থাকবে আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা নেতা-কর্মী, সেটাই আমি চাই। এদেশের মানুষের ভাগ্য যেন আমরা পরিবর্তন করে দিয়ে যেতে পারি, সেইভাবেই সবাই কাজ করবেন।'

এই আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ।  

আমারসংবাদ/এমএস