Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪,

৭০ বছর পর মা-ছেলের মিলন

মো. ফয়সাল আহমেদ, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১, ০৭:৫০ পিএম


৭০ বছর পর মা-ছেলের মিলন

১০ বছর বয়সে ৭০ বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কুদ্দুস মুন্সী তার চাচা এক পুলিশ সদস্যের সাথে বেড়াতে গিয়ে রাজশাহীর বাগমারা থেকে হারিয়ে যান।

তখন অনেক খুঁজাখুঁজি করে না পাওয়ায় এলাকাবাসী ও আত্মীয় স্বজনের ধারণা ছিলো কালু মুন্সীর ছেলে কুদ্দুস মুন্সী বাবার একমাত্র পুত্রসন্তান হওয়ায় হয়তো সম্পত্তির লোভে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।

৭০ বছর পর তার সন্ধান পাওয়ায় বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণিত হলো। কুদ্দুস মুন্সীরা মোট তিন ভাই-বোন। এর মধ্যে জীবিত থাকা ছোট বোন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আশ্রাফবাদ গ্রামে বসবাস করেন। তার বাড়িতেই শতবর্ষী মা মুকবরেরনেছা অবস্থান করছেন।

১২-১৩ দিন আগে নওগাঁর আত্রাইয়ের সিংসাড়া থেকে মো. আইয়ুব আলীর একটি ভিডিও পোস্টে কুদ্দুস মিয়ার কান্নাজড়িত আকুতি ভিডিও ভাইরাল হলে এবং তিনি জন্মস্থান বাড্ডা গ্রামের নামটি বলতে পারায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বাড্ডা গ্রামের তার স্বজনরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করে।

পরে বাড্ডা মুন্সী বাড়ির ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম কিছু নিকটাত্মীয়-স্বজনসহ বাগমারার বাড়ুই পাড়ায় পৌঁছে কুদ্দুস মুন্সীর সাথে দেখা করেন এবং নিশ্চিত হন যে, তিনিই ৭০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া সেই কুদ্দুস মুন্সী।

কুদ্দুস মুন্সী বর্তমানে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বাড়ুইপাড়া গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তিনি তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ের জনক। গতকাল শনিবার সকালে বাগমারা থেকে ঢাকা হয়ে তার জীবিত একমাত্র বোন ঝর্ণা বেগমের সাথে থাকা শতবর্ষী মায়ের দেখা করতে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আশ্রাফবাদে পৌঁছান। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ৭০ বছর পর জীবিত মা এবং বোনকে দেখতে পেয়ে কুদ্দুস মুন্সী অবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

তিনি বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমতে ৭০ বছর পর আমি আমার মাকে দেখতে পেয়েছি, আমার চেয়ে সুখি আর কেউ নেই। পরে তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে কাঁদতে থাকেন।

তার একমাত্র বোন ঝর্ণা বেগম বলেন, ‘আমারার ধারণা ছিলো আমার ভাই বাইচা নাই। আমার ভাই ফিরা আইছে এর চেয়ে খুশির খবর আর কী অইত পারে।’

কুদ্দুস মুন্সীর বংশের ইঞ্জিনিয়ার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ফেসবুকের কল্যাণে আমরা শেষ পর্যন্ত আমাদের বংশের একজন মুরব্বিকে খুঁজে পেয়েছি এবং আমি তাকে খুঁজে পেতে ভূমিকা রাখতে পারায় গর্ববোধ করছি।’