Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

ছুটির দিনে বাজারে অস্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর ৮, ২০২১, ০৬:০৫ পিএম


ছুটির দিনে বাজারে অস্বস্তি

শীত শুরুর আগেই বাজারে এসে গেছে শীতকালীন সবজি। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বস্তি মিলছে না দামে। রাজধানীর অধিকাংশ সবজি বাজারে ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে ক্রেতার মধ্যে অসন্তোষ স্পষ্ট। ডিমের দাম কমলেও মাছ, মাংস আর তেলে বিরাজ করছে অস্বস্তি। এদিকে দেড়শ হাঁকাচ্ছে প্রতি কেজি গাজর, মরিচ, টমেটো। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর মিরপুর উত্তর পীরেরবাগ ছাপড়া মসজিদ কাঁচাবাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে আগাম শীতকালীন সবজি উঠছে। তাই দামও একটু বেশি। তবে শীত শুরু হয়ে গেলে এ দাম আর থাকবে না। তখন সাধারণ ক্রেতার নাগালেই থাকবে সবজির দাম। মাংসের দামে অস্বস্তি থাকলেও দাম বাড়ার যুক্তি দিচ্ছেন না বিক্রেতারা।

ছাপড়া মসজিদ কাঁচাবাজার ঘুরে জানা যায়, আড়াইশ গ্রাম মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। মরিচের ঝালের সাথে ক্রেতার কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে পেঁয়াজ। পেঁয়াজের দাম ইতোমধ্যে ৭০ টাকায় উঠে গেছে।

দেশি ছোট রসুনের কেজি ৬০ টাকা হলেও দেশি বড় রসুন ৮০ টাকা। কিন্তু ইন্ডিয়ান রসুনের দাম দেড়শ টাকা। সাদা ও লাল আলুর কেজি ২৫ টাকা। ভর্তার জন্য জনপ্রিয় জাম আলু ৪০ টাকা আর দেশি ছোট ঝুরি আলু ৩০ টাকা কেজি। কচুর মূলেই যেনো ভরসা দেখছেন ক্রেতারা।

কেজিতে ২৫ টাকায় মিলছে এ সবজি। এদিকে, ধনেপাতা দেড়শ টাকা কেজি হলেও ১০০ গ্রামের দাম ২০ টাকা। লেবুর হালি ২০ টাকা, মাঝারি সাইজের লাউ ৩০ টাকা, জালিকুমড়া ২৫ টাকা পিস, করলা ৫০ টাকা কেজি, পটোলের কেজি ৩৫, শসা ৪০, বেগুনের দাম বেড়ে হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। ঢেঁড়সের দাম ৫০ টাকা কেজি। শিমের ঝাঁজ কমেছে, কেজি মিলছে ৮০ টাকায়। কাঁকরোল ৫০, ধুন্দল ৪০, কাঁচকলার হালি ৩০ টাকা।

মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৩০ টাকা। ফুলকপির দাম এখনো আকাশছোঁয়া। ২০ গ্রাম ওজনের একটি ফুলকপির দাম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। ক্রেতা মনসুর আলী বলেন, কচু, আলু, শাক ছাড়া কিছু খাওয়ার উপায় নেই। এগুলো বাদে সবকিছুর কেজি ৫০ টাকার ওপরে। লালশাক ১৫ টাকা আঁটি, ডাঁটা ২০, পুঁইশাকের আঁটি ৩০, কচুশাক ১০, পাটশাক ১৫ টাকা। মাছের বাজারেও অস্বস্তি স্পষ্ট। নদীর  চিংড়ির কেজি ৭০০ টাকা।

তবে বড় সাইজের চিংড়ির নাম আরও বেশি— ৮০০ টাকা। লাল চিংড়ি ৪৪০ টাকায় মিলছে। চাষের ট্যাংরা মাছ ৪৬০ টাকা। রুই দিন দিন যেন ধরাছোঁয়ার বাইরে যাচ্ছে। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের রুই ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আইড় ৬০০, বোয়াল ৪৫০, কাতল ৪০০ টাকা।

তেলাপিয়া ১৪০ টাকা কেজিতে মিললেও নদীর সরপুঁটি ৪০০ টাকা, তবে চাষের দেশি সরপুঁটি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছ বিক্রেতা তরিকুল ইসলাম বলেন, ১৫ দিন আগেও রুই-কাতলা মাছের দাম ২০০ থেকে আড়াইশ টাকা ছিল। এখন কেজিতে ৭০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

গাজর, মরিচ, টমেটোর দাম কেন কেজিপ্রতি দেড়শ টাকা— জানতে চাইলে বিক্রেতা সবুজ মিয়া জানান, মরিচের সরবরাহ কম অনেক দিন থেকেই। তাই দাম কমছে না। তবে টমেটোর দাম গতকালও ছিল ১১০ টাকা। কিন্তু আজ (গতকাল) আড়ত থেকে কিনতে হয়েছে ১৩০ টাকা কেজি। দেশি গাজরের সরবরাহ ও সংরক্ষণে অসুবিধা উল্লেখ করে এ সবজি বিক্রেতা বলেন, হাইব্রিড গাজর বিক্রি করতে হচ্ছে দেড়শ টাকা কেজি।

পাশেই কাদের গোশত বিতান নামের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, সাইনবোর্ডে দাম লিখে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫৬০ টাকা, খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা করে। বেড়েছে পাকিস্তানি ককের দাম।

১৫ দিন আগেও ২৭০ টাকায় মিললেও তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকা কেজিতে। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১৫ টাকায়। আর দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা দরে। তবে ডিমের দাম কমেছে। একই দোকানে ডিম (লেয়ার) প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়, যা খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।

দেশি মুরগির ডিম ডজন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা এবং হাঁসের ডিম ১৬০ টাকা। শরিফুল হক নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজারে ডিমের দাম এখনো বেশি। সবজিতেও স্বস্তি পাচ্ছি না। তেলের দামের ব্যাপারে নাইবা বললাম। মাছের দামও বেড়েছে।

সবকিছুই যেন ক্রেতার নাগালের বাইরে যাচ্ছে। আব্দুল আউয়াল নামের ব্যাংক কর্মকর্তা মাছ কিনতে এসে  বলেন, সপ্তাহে শুক্রবারই বাজার করি। আমার মতো অনেকেই বাজার করতে আসেন। সেটারই যেন সুযোগ নেয়া হচ্ছে। সবকিছুতেই দাম বেশি।