Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

গুচ্ছতে আমেজহীন কুবির ভর্তিপরীক্ষা

আহমেদ ইউসুফ

অক্টোবর ১৬, ২০২১, ০৬:২৫ পিএম


গুচ্ছতে আমেজহীন কুবির ভর্তিপরীক্ষা

দেশের ২০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আজ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে সমন্বিত গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষা। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র। বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ভর্তিপরীক্ষায় মোট অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা সাত হাজার ২৬ জন। 

পর্যায়ক্রমে ১৭ অক্টোবর ‘এ’ ইউনিটের, ২৪ অক্টোবর ‘বি’ ইউনিটের এবং ১ নভেম্বর ‘সি’ ইউনিটের ভর্তিপরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। যদিও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গত বছরের ভর্তিপরীক্ষায় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ১০৫০ টি আসনের বিপরীতে আবেদন করে প্রায় ৬৭ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী।

কিন্তু গুচ্ছ পদ্ধতিতে মোট ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩ হাজার আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে মাত্র তিন লাখ ৬০ হাজার। যা প্রতি আসনের বিপরীতে ১০ জন। তবে আসন বেশি থাকার পরও এত কম আবেদন কেন— এটাই বিস্ময়ের কারণ। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন সংখ্যা ছয় হাজার হলেও এবার আবেদন পড়েছে দুই লাখ। 

তবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য বছরের ভর্তিপরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ এবং আশেপাশে নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চোখে পড়ত। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের আগমনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন, আঞ্চলিক সংগঠন থেকে শুরু করে স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্যক্রম লক্ষ করা যেতো। তবে গুচ্ছ পদ্ধতির এ পরীক্ষায় এবার তেমন কোনো আয়োজন লক্ষ করা যায়নি।

বিগত ভর্তিপরীক্ষা সমূহে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোগত সংস্কার, সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং শিক্ষার্থীদের আগমনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রশাসনের বাড়তি সতর্কতা দেখা গেলেও এ বছর তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীরা। 

লোকপ্রশাসন    বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রিফাত হাসাস বলেন, অন্যান্য বছর এই ভর্তিপরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ভিন্ন আয়োজন চলত। নিজ এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা আসত। নিঃস্বার্থে সবার জন্য কাজ করতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম হতো। হাজার হাজার মেধাবীদের থেকে বাছাইকৃত এক এহাজার মেধাবী মুখ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেত।  তবে এবার তেমন কোনো আয়োজন নেই। উচ্ছ্বাস নেই। 

তারেক হাসান নামে ঢাকা বিজ্ঞান কলেজের এক শিক্ষার্থী বিষয়টি নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন,  আমার বাড়ি কক্সবাজারের চকোরিয়ায়। ভর্তিপরীক্ষার জন্য আমি সুবিধামত চট্টগ্রাম এবং ঢাকাতে পাঁচটি কেন্দ্র চয়েজ দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রবেশপত্র তোলার পর দেখি আমার পরীক্ষার  হল দেয়া হয়ছে পটুয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখন পটুয়াখালি কিভাবে যাওয়া লাগবে সেটুকু পর্যন্ত আমি জানি না। 

সেখানে যাওয়ার পর  কিভাবে থাকবো এটাও জানি না। পরীক্ষার তিন দিন আগে আমি কক্সবাজার  থেকে রওনা দিয়েছি। পরীক্ষার আগে এটা আমার জন্য বড় ধরনের ভোগান্তি। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রভাষক জনি আলম বিষয়টি নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, অন্যান্য পছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে প্রতিটি সদস্য আনন্দ উচ্ছ্বাসের মধ্যে দিয়ে ভর্তিপরীক্ষার কার্যক্রমে অংশীদার হয়। 

কিন্তু গুচ্ছ পদ্ধতিতে এবার তেমন কোন আয়োজন নেই। আমাদের সাংস্কৃতিক সংগঠন, সামাজিক সংগঠন, আঞ্চলিক সংগঠনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাধারণ শিক্ষার্থীরা  কিছুটা ব্যথিত। তবে গুচ্ছ পদ্ধতির এ পরীক্ষা মূলত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করেই নেয়া হয়েছে। এখন তারা কতটুকু উপকৃত হবে এখান থেকে সেটাই মুখ্য বিষয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান মত প্রকাশ করে বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘব করা।