Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

বন্যা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা

আমার সংবাদ ডেস্ক

অক্টোবর ২১, ২০২১, ০৬:৫৫ পিএম


 বন্যা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা

রংপুর ও কুড়িগ্রামের তিস্তা অববাহিকার নিম্নাঞ্চলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির সামান্য অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা সতর্কীকরণ ও পূর্বাভাস কেন্দ্র। বন্যা সতর্কীকরণ ও পূর্বাভাস কেন্দ্রের পূর্বভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে হ্রাস পেতে পারে ও বিপদসীমার নিচে নেমে আসতে পারে। কাউনিয়া পয়েন্টে গতকাল বিপদসীমার ১৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটের শেওলা পয়েন্টে সর্বোচ্চ ৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। 

এছাড়া সুনামগঞ্জের ছাতকে ৮৩, নোয়াখালীতে ৭৯, কুড়িগ্রামে ৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারতের পাসিঘাটে সর্বোচ্চ ৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ৩৬ লাখ নগদ টাকা, শুকনো খাবারসহ অন্যান্য খাবারের চার হাজার প্যাকেট বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে গত বৃহস্পতিবার এ বরাদ্দ দেয়া হয়। 

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট  চারটি জেলার প্রতিটির জন্য নগদ পাঁচ লাখ করে ২০ লাখ টাকা, গোখাদ্য ক্রয় বাবদ দুই লাখ করে আট লাখ টাকা, শিশুখাদ্য ক্রয় বাবদ দুই লাখ করে আট লাখ টাকাসহ মোট ৩৬ লাখ  টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। 

এছাড়াও প্রতিটি জেলার জন্য এক হাজার করে মোট চার হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সারা দেশের বন্যা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার সকালে মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে উত্তরাঞ্চলের বন্যার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানার প্রতিক্রিয়ায় পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক জানিয়েছেন, রংপুরের প্রধান প্রকৌশলীসহ মাঠ পর্যায়ের সকলকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালকরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ, মনিটরিং ও নির্দেশনা দিচ্ছেন। 

জাহিদ ফারুক বলেন, ‘যেকোনো দুর্যোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীরা সম্মুখযোদ্ধার মতো দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। উজানের ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টির মধ্যেই সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা নদীতীরের জনগণের কাছে ছুটে গিয়েছেন। গত বুধবার পানির প্রবল চাপে কুড়িগ্রামে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সারারাত নির্ঘুম ও নিরলসভাবে কাজ করে ভোরে সেই ব্রিজ বন্ধ করা হয়েছে। আরো যেখানে এমন ক্ষয়ক্ষতি আছে সেখানে বাঁধ রক্ষায় কাজ অব্যাহত আছে।’

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, ‘তিস্তার পানি গত ১৯ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশ অংশে বৃদ্ধি পায়। ফ্লাড বাইপাস থাকায় তিস্তা ব্যারেজের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং ফায়ার সার্ভিসের সাহায্যে প্লাবিত এলাকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। 
প্রশাসনের উদ্যোগের পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে এক হাজার লোকের জন্য ত্রাণসামগ্রী প্রদান করা হয়েছে।’ 

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার তিস্তা বামতীরে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত প্রসঙ্গে কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, ‘বাঁধ থেকে পানির উচ্চতা নদীর দিকে প্রায় আড়াই মিটার বেশি ছিলো। বাঁধের প্রায় ২৫ মিটার অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মন্ত্রণালয়ের তাৎক্ষণিক নির্দেশনায় স্থানীয় জনসাধারণ ও শ্রমিকসহ সকলের অক্লান্ত পরিশ্রমে ভোর ৪টার দিকে মেরামত সম্পন্ন করতে সক্ষম হই।’ 

এদিকে সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান বলেন, ‘তিস্তা অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। লালমনিরহাট ও নীলফামারী এলাকার পানি কমলেও কুড়িগ্রাম ও রংপুরে পানি কিছুটা আছে। সেটাও কমে যাবে। সামনে বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা কম।’