শাবি প্রতিনিধি
জানুয়ারি ২৮, ২০২২, ০৭:১৫ পিএম
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে আলোচনার জন্য শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) আসার অনুরোধ জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে পুলিশি হামলায় আহত ও অসুস্থ অনশনকারীদের সুচিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা।
গতকাল শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তার। এ সময় তারা বলেন, গত ১৬ জানুয়ারি পুলিশি হামলার ঘটনায় আহত এবং অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ সবার সুচিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করায় আমরা প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পুলিশের শটগানের স্প্লিন্টারে গুরুতর আহত সজল কুণ্ডুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সরকারের নির্দেশনায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আমাদের মূল দাবিসহ অন্যান্য দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। এজন্য আমরা সব শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
আমরা শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা দেখেছি ২৭ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি তার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আমাদের দাবি ও সমস্যা প্রসঙ্গে আলোচনার উদ্দেশ্যে শাবিপ্রবিতে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এ জন্য শাবিপ্রবির সব শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা জানাতে চাই, আমরা তার সঙ্গে আমাদের দাবি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি। ইতোমধ্যে আমরা তার সামনে উপস্থাপনের জন্য বেশকিছু সমস্যা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছি।
আমরা শিক্ষামন্ত্রীকে আমাদের ক্যাম্পাসে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আশা করব, তিনি দ্রুতই আমাদের ক্যাম্পাসে এসে আলোচনায় অংশ নেবেন। একই সাথে আমরা এও আশা করছি, আমাদের মূল দাবিসহ অন্যান্য দাবি পূরণের যে আশ্বাস দেয়া হয়েছে, সেগুলোও অতিসত্বর পূরণ করা হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে ২৫ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী টানা ১৬৩ ঘণ্টা ১৭ মিনিট অনশনরত থাকার পর ২৬ জানুয়ারি অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হকের অনুরোধে অনশন থেকে সরে আসেন তারা।
পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে ২৭ জানুয়ারি মধ্যরাতের দিকে অবরোধ কর্মসূচি তুলে নেয়া হয়। তবে অনশন ও অবরোধ কর্মসূচি থেকে সরে এলেও উপাচার্যের পদত্যাগের আগ পর্যন্ত চলমান আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে আন্দোলনকারীরা জানান।
এ লক্ষ্যে ২৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে ‘কেমন শাবিপ্রবি চাই’ শীর্ষক একটি উন্মুক্ত আলোচনার আয়োজন করেন তারা। যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাসকে কেমন দেখতে চায়— সে বিষয়ে প্রত্যেকে নিজ নিজ মতামত দেন।
এর আগে ১৩ জানুয়ারি হতে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজার পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন।
ধারাবাহিক বিক্ষোভ চলাকালীন ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলা হলে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি শাবি উপাচার্যের পদত্যাগের আন্দোলনে রূপ নেয়। তবে তখনও তাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় ১৯ জানুয়ারি দুপুর হতে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন।