Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

কার্জন হলের নান্দনিক ক্যালিগ্রাফি অঙ্কন ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীর

জানুয়ারি ১৮, ২০২১, ১১:৪০ এএম


কার্জন হলের নান্দনিক ক্যালিগ্রাফি অঙ্কন ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল যা সূরা ইয়াসিনের আরবি হরফে ক্যালিগ্রাফি দিয়ে অবয়ব ফুটিয়ে তুলেছেন ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী। সূরা ইয়াসিনের ৮৩টি আয়াত ও আল্লাহর গুণবাচক ২০-২২টি নামের সংমিশ্রণে দৃষ্টিনন্দন শিল্পকর্ম করেছেন ঢাকা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মুনতাসীর হক মুন। 

শুধু কার্জন হল নয়, আরবি নানা শব্দ ব্যবহার করে এঁকেছেন নান্দনিক সব স্থাপনাগুলো। কার্জন হলের মূল যে ভবনটি আমরা গুগলে বা সব জায়গায় দেখতে পাই হুবহু সেটির আদলেই করেছেন কার্জন হলের ক্যালিগ্রাফিটি। 

বাংলাদেশে দেখার মতো রয়েছে অনন্য কিছু স্থাপনা। যেগুলোর সুন্দর স্থাপত্যশৈলী আর দৃষ্টিকাড়া দৃশ্য মন ছুঁয়ে যায়। সেগুলো দেখতে যাওয়া বা দেখার আকর্ষণ কাজ করে সবার মধ্যেই। তেমন স্থাপনা নিয়েই কাজ করেছেন এই ক্যালিগ্রাফার। ক্যালিগ্রাফির উপর তেমন কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকা সত্ত্বেও আরবি হরফে নান্দনিকভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন কার্জন হলের চিত্র। 

প্রথমে পুরাতন নান্দনিক ও ইতিহাস বহনকারী বিল্ডিংগুলোর মধ্যে কার্জন হল ও তারা মসজিদের ক্যালিগ্রাফি করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন। সময় স্বল্পতা ও আনুষঙ্গিক উপাদান না থাকায় তারা মসজিদের উপর আর কাজ করা না হলেও কার্জন হলের ক্যালিগ্রাফি এঁকে আর্ট জগতে এরইমধ্যেই সাড়া ফেলেছেন তরুণ এই ক্যালিগ্রাফার। 

[media type="image" fid="106304" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

কার্জন হলের ক্যালিগ্রাফি সম্পর্কে জানতে চাইলে মুনতাসীর হক মুন বলেন, স্ট্রাকচারাল ক্যালিগ্রাফির উপর মূলত কাজ শুরু করি। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ছোটখাটো বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী বিল্ডিং, নান্দনিক ডিজাইন এবং প্রাচীন নানা জিনিস নিয়ে। প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী একটি ভবন হচ্ছে এই কার্জন হল তাই এটা নিয়ে আমার কাজ করা। আমি যেহেতু কোরআনের হাফেজ তাই কোরআন নিয়েই কাজটি করি। এতে পুরো সূরা ইয়াসিন ও আল্লাহর ২০-২২টি গুণবাচক নাম দিয়ে আঁকি। 

কার্জন হল নিয়ে যখন আমি কাজ শুরু করি তখন দৈনিক প্রায় ১২-১৩ ঘণ্টা কাজ করতে হতো এটা নিয়ে। এভাবে কাজ করে প্রায় ১৪-১৫ দিনের মধ্যে এটির কাজ শেষ করি। এই ক্যালিগ্রাফিটি নিয়ে এখন পর্যন্ত ৪টি এক্সিবিশনে অংশ নিয়েছি যার মধ্যে তিনটি এক্সিবিশনই ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ও বাকি একটি ধানমন্ডিতে হয়েছে, তিনি জানান। 

ক্যালিগ্রাফিতে কিভাবে হাতেখড়ি হলো তা জানিয়ে মুনতাসীর বলেন, ২০১৭ সালের অক্টোবরের দিকে ক্যালিগ্রাফি জগতে আমার পদার্পণ। বিভিন্ন সময়ে পত্রিকা বা নানা জায়গায় প্রকাশ ক্যালিগ্রাফিগুলো দেখতে ভালো লাগতো এবং আলাদা একটা টান কাজ করতো। সেই ভালোলাগা ও শখ থেকে ক্যালিগ্রাফি নিয়ে কাজ শুরু করি। প্রথমদিকে পেন্সিল দিয়ে নিজের নাম বা কোরআনের আয়াতের ক্যালিগ্রাফি করে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করতাম এবং সেখান থেকে ভালো উৎসাহ, অনুপ্রেরণা পেয়েছি। পরে আস্তে আস্তে এই আর্টের উপর সময় বাড়িয়ে দিই এবং নিজ উদ্যোগেই কাজ শিখতে থাকি। 

ক্যালিগ্রাফি নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক কিছুই মাথায় রয়েছে যেহেতু এখন একেবারে প্রফেশনাল হিসেবে এটিকে নিয়ে নিয়েছি তাই মানুষের চিন্তা-ভাবনার আলোকে কাজ করতে হয়। আবার অনেকেই আমাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেয় ফলে তাদের কথা মাথায় রেখে সেই কাজগুলো করতে হয়। স্বপ্ন রয়েছে, আমার এই ক্যালিগ্রাফির মাধ্যমে দেশের মানুষ ও বিদেশের মানুষ বাংলাদেশ সম্পর্কে জানবে। বাংলাদেশের ক্যালিগ্রাফিও একদিন বিশ্ব দরবারে স্থান করে নিবে সেই স্বপ্ন দেখি। 

সামনের দিনগুলোতে কি নিয়ে কাজ করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মূল ফোকাস হচ্ছে, আরবি ক্যালিগ্রাফি নিয়ে, এছাড়াও বাংলা বা ইংরেজি ক্যালিগ্রাফিও করা হয় তবে সেগুলো খুব কম করি। যেগুলো করা যায় তার অধিকাংশই আরবি ক্যালিগ্রাফি এক্ষেত্রে কোরআন শরীফও হতে পারে আর আরবি ভাষা হিসেবেই করা যায়। বিখ্যাত ব্যক্তিদের কবিতা বা গানের উপরও কাজ করে থাকি।

আমারসংবাদ/কেএস